নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
তাবূক যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত বিধানসমূহ (الأحكام المستنبطة من غزوة تبوك)

(১) এ যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ) আব্দুর রহমান বিন ‘আওফের পিছনে ফজরের ছালাত এক রাক‘আত আদায় করেন। পরে বাকী রাক‘আত শেষে সালাম ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, তোমরা সঠিক কাজ করেছ। ছালাত যথাসময়ে আদায় করতে হয়’ (মুসলিম হা/২৭৪ (১০৫)। এর দ্বারা অনুত্তমের পিছনে উত্তমের ছালাত জায়েয প্রমাণিত হয়। তাছাড়া জামা‘আতের জন্য সময় নির্ধারণ করা ও তা সকলের জন্য মেনে চলা আবশ্যিক প্রমাণিত হয়।

(২) ফেরার পথে মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এমন আমলের কথা জানতে চান, যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে ও জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। জবাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রধান বিষয় হ’ল ইসলাম কবুল করা। কেননা যে ইসলাম কবুল করে, সে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ হয়। এর স্তম্ভ হ’ল ছালাত এবং চূড়া হ’ল জিহাদ’ (আহমাদ হা/২২১২১)

(৩) এ যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-কে মুছল্লীর সুৎরা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, এটি হাওদার পিছনের অংশের ন্যায় উঁচু(مِثْلُ مُؤْخِرَةِ الرَّحْلِ)। নাসাঈ হা/৭৪৬

(৪) এ সফরে যোহর-আছর, মাগরিব-এশা জমা ও ক্বছর করা হয়’ (মুসলিম হা/৭০৫ (৫১)

(৫) তাবূক যাওয়ার পথে ওয়াদীল ক্বোরার একটি বাগিচা থেকে অনুমানের ভিত্তিতে খেজুর খরীদ করা হয়। যার দ্বারা অনুমান ভিত্তিক ব্যবসা জায়েয প্রমাণিত হয়’ (ফাৎহুল বারী হা/১৪৮১-এর আলোচনা)

(৬) তাবূকের একটি বাড়ি থেকে চামড়ার পাত্রে রাখা পানি চাওয়া হয়। এ সময় মৃত প্রাণীর চামড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে রাসূল (ছাঃ) বলেন,دِبَاغُهَا طُهُورُهَا ‘এর দাবাগত করাই হ’ল এর পবিত্রতা’ (আবুদাঊদ হা/৪১২৫)

(৭) জনৈক ব্যক্তি মারামারির সময় অন্যের হাত কামড়ে ধরলে জোরে টান দেওয়ার কারণে তার সম্মুখের উপর-নীচ দু’টি দাঁত ছিটকে বেরিয়ে আসে। রাসূল (ছাঃ) তার জন্য ক্বিছাছ বাতিল করে দেন’।[1] কারণ সে ইচ্ছাকৃতভাবে তার দাঁত উপড়ে ফেলেনি।

(৮) এ যুদ্ধে তিন দিনের অধিক সময় কোন মুমিন ব্যক্তির সাথে দ্বীনী কারণে বয়কট সিদ্ধ করা হয়। যা যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে থাকা তিন জন মুখলেছ ছাহাবীর ক্ষেত্রে ৫০ দিনের বয়কট দ্বারা প্রমাণিত হয়’।[2]

(৯) এ যুদ্ধে তাবূকে ২০ দিন অবস্থানকালে এবং সেখানে যাওয়া ও প্রত্যাবর্তনকালে পূরা সময়টা ছালাতে জমা ও ক্বছর করা হয়।[3] এতে বুঝা যায় যে, সফরে ক্বছরের জন্য ১৯ দিন সময়কাল নির্ধারিত নয়। যেটি ইবনু আববাস (রাঃ) বলেছেন (বুখারী হা/৪২৯৮)

[1]. বুখারী হা/২৯৭৩; মুসলিম হা/১৬৭৩ (২১)।

[2]. বুখারী হা/৪৪১৮; মুসলিম হা/২৭৬৯।

[3]. মুসলিম হা/৭০৫ (৫১); আবুদাঊদ হা/১২০৮; তিরমিযী হা/৫৫৩; মিশকাত হা/১৩৪৪ ‘সফরের ছালাত’ অনুচ্ছেদ।