এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وَمَا جَعَلَهُ اللهُ إِلاَّ بُشْرَى لَكُمْ وَلِتَطْمَئِنَّ قُلُوبُكُمْ بِهِ وَمَا النَّصْرُ إِلاَّ مِنْ عِنْدِ اللهِ الْعَزِيْزِ الْحَكِيْمِ ‘(তোমাদের নিকটে ফেরেশতা প্রেরণের বিষয়টি ছিল) কেবল তোমাদের জন্য সুসংবাদ হিসাবে এবং যাতে তোমাদের অন্তরে প্রশান্তি আসে। বস্ত্ততঃ সাহায্য কেবলমাত্র মহাপরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ হ’তেই এসে থাকে’ (আলে ইমরান ৩/১২৬)।
এর দ্বারা একথা বুঝানো হয়েছে যে, মুসলিম বাহিনী যেন এ বিশ্বাস দৃঢ় রাখে যে, ফেরেশতারা তাদের সাহায্যার্থে প্রস্ত্তত হয়ে পাশেই আছে। সেজন্য আল্লাহর হুকুমে তারা যৎসামান্য সাহায্য করছে। প্রকৃতপক্ষে এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের মনোবলকে বর্ধিত করা, ফেরেশতাদের দ্বারা যুদ্ধ করানো নয়। কেননা তারা সরাসরি জিহাদ করলে মুমিনদের কোন ছওয়াব থাকে না। তাছাড়া সেটা হ’লে তো এক হাযার (আনফাল ৮/৯), তিন হাযার বা পাঁচ হাযার (আলে ইমরান ৩/১২৪-২৫) কেন, একজন ফেরেশতাই যথেষ্ট ছিল কুরায়েশ বাহিনীকে খতম করার জন্য। যেভাবে জিব্রীল (আঃ) একাই লূতের কওমকে তাদের নগরীসহ শূন্যে তুলে উপুড় করে ফেলে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলেন আল্লাহর হুকুমে (হূদ ১১/৮২; হিজর ১৫/৭৩-৭৪)।
এ জগতে যুদ্ধ ও জিহাদের দায়িত্ব মানুষকে অর্পণ করা হয়েছে। যাতে তারা তার ছওয়াব ও উচ্চ মর্যাদা লাভে ধন্য হয়। ফেরেশতা বাহিনী দ্বারা যদি দেশ জয় করা বা ইসলামী হুকূমত প্রতিষ্ঠা করা আল্লাহর ইচ্ছা হ’ত, তাহ’লে পৃথিবীতে কাফেরদের রাষ্ট্র দূরে থাক, তাদের অস্তিত্বই থাকতো না। বরং আল্লাহর বিধান এই যে, দুনিয়াতে কুফর ও ঈমানের সংঘর্ষ চলতেই থাকবে। ঈমানদারগণ সর্বদা আল্লাহর সাহায্য পাবেন। তারা ইহকালে ও পরকালে মর্যাদামন্ডিত হবেন। কিন্তু কাফেররা আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে এবং ইহকালে ও পরকালে তারা ধিকৃত ও লাঞ্ছিত হবে। নমরূদ ও ইবরাহীম, ফেরাঊন ও মূসা কি এর বাস্তব উদাহরণ নয়? আজও ফেরাঊন ও মূসার দ্বন্দ্ব চলছে এবং ক্বিয়ামত অবধি তা চলবে।