দুনিয়ার সুখসামগ্রীর সাথে জান্নাতেরসুখ-সামগ্রীর তুলনা

দুনিয়ার সুখসামগ্রীর সাথে জান্নাতের সুখসামগ্রীর কোন তুলনাই হয় না। কিন্তু বহু বান্দার ঈমান বড় দুর্বল, বিশ্বাস বড় ক্ষীণ। তারা সামনে যেটা পায়, সেটাকেই শ্রেষ্ঠ মনে করে, হাতে হাতে নগদ যেটা পায়, সেটাই শেষ পাওয়া ভাবে। তাদের মন বলে,

‘নগদ যা পাও হাত পেতে নাও, বাকীর খাতা শূন্য থাক,

দূর আওয়াজের লাভ কী শুনে, মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক।

কেউ বলে,

‘সব ব্যথারই ওষুধ আছে, হয়তো বা তা নেই,

থাকে যদি হাত পেতে নাও, চেয়ো না অলীককেই।

কেউ বলে,

‘কোথায় আছে স্বর্গ-নরক, কে বলে তা বহুদূর?

মানুষের মাঝেই স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরাসুর।

অথচ মহান সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাস সুদৃঢ় করার জন্য কত শতভাবে বয়ান দিয়েছেন। বারবার বলেছেন, পরলোকের সম্পদ ইহলোকের সম্পদ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। ক্ষণস্থায়ী জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে চিরস্থায়ী জীবনকে বরবাদ করতে বারণ করেছেন। যেমনঃ

لَٰكِنِ الَّذِينَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا نُزُلًا مِّنْ عِندِ اللَّهِ ۗ وَمَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ لِّلْأَبْرَارِ

অর্থাৎ, কিন্তু যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত; যার পাদদেশে নদীমালা প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। এ হল আল্লাহর পক্ষ হতে আতিথ্য। আর আল্লাহর নিকট যা আছে তা পুণ্যবানদের জন্য উত্তম। (আলে ইমরানঃ ১৯৮)

وَلَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّنْهُمْ زَهْرَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ ۚ وَرِزْقُ رَبِّكَ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ

অর্থাৎ, আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পরীক্ষা করার জন্য পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য-স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, তার প্রতি তুমি কখনোও তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করো না। তোমার প্রতিপালকের জীবিকাই উৎকৃষ্টতর ও স্থায়ী। (ত্বাহাঃ ১৩১)

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاءِ وَالْبَنِينَ وَالْقَنَاطِيرِ الْمُقَنطَرَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَالْخَيْلِ الْمُسَوَّمَةِ وَالْأَنْعَامِ وَالْحَرْثِ ۗ ذَٰلِكَ مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَاللَّهُ عِندَهُ حُسْنُ الْمَآبِ (14) قُلْ أَؤُنَبِّئُكُم بِخَيْرٍ مِّن ذَٰلِكُمْ ۚ لِلَّذِينَ اتَّقَوْا عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَأَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَرِضْوَانٌ مِّنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ (15)

অর্থাৎ, নারী, সন্তান-সন্ততি, জমাকৃত সোনা-রূপার ভান্ডার, পছন্দসই (চিহ্নিত) ঘোড়া, চতুষ্পদ জন্তু ও ক্ষেত-খামারের প্রতি আসক্তি মানুষের নিকট লোভনীয় করা হয়েছে। এ সব ইহজীবনের ভোগ্য বস্তু। আর আল্লাহর নিকটেই উত্তম আশ্রয়স্থল রয়েছে। বল, আমি কি তোমাদেরকে এ সব বস্তু হতে উৎকৃষ্ট কোন কিছুর সংবাদ দেব? যারা সাবধান (পরহেযগার) হয়ে চলে তাদের জন্য রয়েছে উদ্যানসমূহ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তার দাসদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত। (আলেইমরানঃ ১৪-১৫)

فَمَا أُوتِيتُم مِّن شَيْءٍ فَمَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَمَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ لِلَّذِينَ آمَنُوا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ

অর্থাৎ, বস্তুতঃ তোমাদেরকে যা কিছু দেওয়া হয়েছে, তা পার্থিব জীবনের ভোগ; কিন্তু আল্লাহর নিকট যা আছে, তা উত্তম ও চিরস্থায়ী তাদের জন্য, যারা বিশ্বাস করে ও তাদের প্রতিপালকের ওপর নির্ভর করে। (শুরাঃ ৩৬)

بَلْ تُؤْثِرُونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا (16) وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ (17)

অর্থাৎ, বরং তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে থাক। অথচ পরকালের জীবনই উত্তম ও চিরস্থায়ী। (আলাঃ ১৬-১৭)

ভেবে দেখা যেতে পারে যে, পরকালের সম্পদ অধিক শ্রেষ্ঠ কেন?

১। পার্থিব সম্পদ ও ভোগবিলাস সীমিত, কিন্তু পারলৌকিক সম্পদ ও ভোগবিলাস অসীম। মহান আল্লাহ বলেন,

قُلْ مَتَاعُ الدُّنْيَا قَلِيلٌ وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ لِّمَنِ اتَّقَىٰ وَلَا تُظْلَمُونَ فَتِيلًا

অর্থাৎ, বল, পার্থিব ভোগ অতি সামান্য এবং যে ধর্মভীরু তার জন্য পরকালই উত্তম। আর তোমাদের প্রতি খেজুরের আঁটির ফাটলে সুতো বরাবর (সামান্য পরিমাণ)ও যুলুম করা হবে না।” (নিসাঃ ৭৭)।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “আখেরাতের মুকাবেলায় দুনিয়ার দৃষ্টান্ত ঐরূপ, যেরূপ তোমাদের কেউ সমুদ্রে আঙ্গুল ডুবায় এবং (তা বের করে) দেখে যে, আঙ্গুলটি সমুদ্রের কতটুকু পানি নিয়ে ফিরছে।” (মুসলিম)

যারা অসীম পরকালের উপর সসীম ইহকালকে প্রাধান্য দেয়, তাদেরকে উপদেশ দিয়ে বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ ۚ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! তোমাদের কি হলো যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়। তবে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের ভোগবিলাস তো পরকালের তুলনায় অতি সামান্য। (তাওবাহঃ ৩৮)।

২। দুনিয়ার বিলাসসামগ্রী আখেরাতের বিলাসসামগ্রী অপেক্ষা নিম্নতর। বরং উভয়ের মধ্যে কোন তুলনাই হয় না। জান্নাতের খাদ্য-পানীয়, লেবাস-পোশাক, বাসস্থান ইত্যাদি দুনিয়া থেকে সর্বৈবভাবে শ্রেষ্ঠ। বরং “জান্নাতের এক চাবুক (অথবা এক ধনুক) পরিমাণ জায়গা দুনিয়া ও তন্মধ্যস্থিত সবকিছু থেকে শ্রেষ্ঠ।” (বুখারী)

স্ত্রীর কথাই ভেবে দেখুন। কত পার্থক্য! মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “যদি জান্নাতী কোন মহিলা পৃথিবীর দিকে উকি মারে, তাহলে আকাশ-পৃথিবীর মধ্যবর্তী সকল স্থান উজ্জ্বল করে দেবে! উভয়ের মাঝে সৌরভে পরিপূর্ণ করে দেবে! আর তার মাথায় ওড়নাখানি পৃথিবী ও তন্মধ্যস্থিত সকল বস্তু হতে শ্রেষ্ঠ।” (বুখারী)।

৩। জান্নাতের সুখ-সামগ্রী দুনিয়ার মলিনতা ও আবিলতা থেকে পবিত্র। দুনিয়ার খাদ্য ও পানীয় খাওয়ার পর প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন পড়ে। আর তাতে দুর্গন্ধও ছোটে। পক্ষান্তরে জান্নাতের পানাহারে তা হয় না। জান্নাতে প্রস্রাব-পায়খানাই নেই। এত এত খেয়েও হজম হয়ে কেবল সুগন্ধময় ঢেকুর অথবা ঘামের সাথে বের হয়ে যাবে।

দুনিয়ার শারাব পান করলে মানুষ জ্ঞানশূন্য হয়ে যায়। পক্ষান্তরে জান্নাতের শারাবে তা হবে না।

দুনিয়ার পানি খারাপ হয়, জান্নাতের পানি খারাপ হবে না।

দুনিয়ার দুধ খারাপ হয়ে যায়, জান্নাতের দুধ খারাপ হবে না।

দুনিয়ার স্ত্রী মাসিক, বীর্য, স্রাব ইত্যাদি থেকে পবিত্রা নয়। জান্নাতের স্ত্রী পবিত্রা।

দুনিয়ার প্রায় সকল মানুষের মন হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদিতে ভরা। জান্নাতীদের মন সে রকম নয়।

দুনিয়াতে কত নোংরামি, অশান্তি, হানাহানি, খুনোখুনি, গালাগালি, রাগারাগি হয়। জান্নাতে তা হবে না। মহান আল্লাহ বলেন,

يَتَنَازَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ

অর্থাৎ, সেখানে তারা একে অপরের নিকট হতে গ্রহণ করবে (মদ ভরা) পান-পাত্র, যা হতে পান করলে কেউ অসার কথা বলবে না এবং পাপ কর্মে লিপ্ত হবে না। (তুরঃ ২৩)

لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا كِذَّابًا

অর্থাৎ, সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার ও মিথ্যা কথা। (নাবাঃ ৩৫)

لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا إِلَّا سَلَامًا ۖ وَلَهُمْ رِزْقُهُمْ فِيهَا بُكْرَةً وَعَشِيًّا

অর্থাৎ, সেখানে তারা শান্তি’ ছাড়া কোন অসার বাক্য শুনবে না এবংসেথায় সকাল-সন্ধ্যায় তাদের জন্য থাকবে জীবনোপকরণ। (মারয়ামঃ ৬২)

لَّا تَسْمَعُ فِيهَا لَاغِيَةً

অর্থাৎ, সেখানে তারা কোন অসার বাক্য শুনবে না। (গাশিয়াহঃ ১১)

لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا (25) إِلَّا قِيلًا سَلَامًا سَلَامًا (26)

অর্থাৎ, তারা শুনবে না কোন অসার অথবা পাপবাক্য। সালাম-সালাম (শান্তি) বাণী ব্যতীত। (ওয়াকৃিআহ ঃ ২৬)

দুনিয়ার মনোমালিন্যের যে জের অবশিষ্ট থাকবে, তা পুলসিরাত পার হওয়ার আগেই প্রতিশোধ বা ক্ষমা হয়ে যাবে। পুলসিরাত পার হওয়ার পরে তাদের হৃদয়ে আর কোন আবিলতা থাকবে না।

মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “..তাদের মধ্যে কোন মতভেদ থাকবে না। পারস্পরিক বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের সকলের অন্তর একটি অন্তরের মত হবে। তারা সকাল-সন্ধ্যায় তাসবীহ পাঠে রত থাকবে।” (বুখারী-মুসলিম)। আর মহান আল্লাহ বলেছেন,

وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلَىٰ سُرُرٍ مُّتَقَابِلِينَ

অর্থাৎ, আমি তাদের অন্তরে যে ঈর্ষা থাকবে তা দূর করে দেব; তারা ভ্ৰাতৃভাবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে আসনে অবস্থান করবে। (হিজরঃ ৪৭)

৪। দুনিয়ার সুখ-সম্পদ ক্ষণস্থায়ী। পক্ষান্তরে জান্নাতের সুখ-সম্পদ চিরস্থায়ী। মহান আল্লাহ বলেন,

مَا عِندَكُمْ يَنفَدُ ۖ وَمَا عِندَ اللَّهِ بَاقٍ

অর্থাৎ, তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে তা চিরস্থায়ী থাকবে। (নাহলঃ ৯৬)।

إِنَّ هَٰذَا لَرِزْقُنَا مَا لَهُ مِن نَّفَادٍ

অর্থাৎ, নিশ্চয় এটি আমার (দেওয়া) রুযী; যার কোন শেষ নেই। (স্বাদঃ ৫৪)

أُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا

অর্থাৎ, ওর ফলমূলসমূহ ও ছায়া চিরস্থায়ী। (রা’দঃ ৩৫)

স্থায়ী-অস্থায়ীর উদাহরণ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,

وَاضْرِبْ لَهُم مَّثَلَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا كَمَاءٍ أَنزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَاءِ فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ الْأَرْضِ فَأَصْبَحَ هَشِيمًا تَذْرُوهُ الرِّيَاحُ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ مُّقْتَدِرًا (45) الْمَالُ وَالْبَنُونَ زِينَةُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ أَمَلًا (46)

অর্থাৎ, তাদের কাছে পেশ কর উপমা পার্থিব জীবনের; এটা পানির ন্যায় যা আমি বর্ষণ করি আকাশ হতে, যার দ্বারা ভূমির উদ্ভিদ ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদ্গত হয়। অতঃপর তা বিশুষ্ক হয়ে এমন চুর্ণ-বিচূর্ণ হয় যে, বাতাস ওকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা। আর সৎকার্য, যার ফল স্থায়ী ওটা তোমার প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশা প্রাপ্তির ব্যাপারেও উৎকৃষ্ট। (কাহফঃ ৪৫-৪৬)

মাঠের ফসল ও বাগানের ফুল-ফল মানুষের চোখে সুশোভিত হয়ে ওঠে। তারপর ধীরে ধীরে পেকে যায়, নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের যৌবন ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যায়। সুস্থতা চলে গিয়ে অসুস্থতা আসে। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দূরীভূত হয়ে অসুখ-অশান্তি আসে। ধন-সম্পদ আসে যায়। আত্মীয়-পরিজনও সঙ্গ ছেড়ে চলে যায়। আখেরাতের জগতে তা হবার নয়।

৫। পরকাল ভুলে ইহকালের আমল করলে অনুতাপ ও লাঞ্ছনা আসে। দুনিয়া আসলে ধোকা ও প্রবঞ্চনার জায়গা। আখেরাত তা নয়। দুনিয়ার সাফল্য মোটেই সাফল্য নয়, আখেরাতের সাফল্যই প্রকৃত সাফল্য। মহান আল্লাহ বলেন,

كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ

অর্থাৎ, জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর কিয়ামতের দিনই তোমাদের কর্মফল পূর্ণমাত্রায় প্রদান করা হবে। সুতরাং যাকে আগুন (দোযখ) থেকে দূরে রাখা হবে এবং (যে) বেহেশে প্রবেশলাভ করবে, সেই হবে সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়। (আলে ইমরানঃ ১৮৫)

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে