একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্ত্তর নামে কসম খাওয়া ছোট শির্ক।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নিশ্চয়ই আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি। তিনি ইরশাদ করেন:
مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللهِ ؛ فَقَدْ أَشْرَكَ
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্ত্তর কসম খাবে সে মুশরিক হয়ে যাবে’’।
(আবু দাউদ, হাদীস ৩২১৫ তিরমিযী, হাদীস ১৫৩৫ ইবনু হিব্বান/মাওয়ারিদ, হাদীস ১১৭৭ হা’কিম : ১/১৮, ৫২ ৪/২৯৭ বায়হাক্বী : ১০/২৯ আব্দুর রাযযাক : ৮/১৫৯২৬ ত্বায়ালিসী, হাদীস ১৮৯৬ আহমাদ : ২/৩৪, ১২৫)
’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
إِنَّ اللهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوْا بِآبَائِكُمْ، فَمَنْ كَانَ حَالِفًا ؛ فَلْيَحْلِفْ بِاللهِ أَوْ لِيَسْكُتْ
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে নিজ পিতার কসম খেতে নিষেধ করেছেন। যে ব্যক্তি কসম খেতে চায় সে যেন আল্লাহ্’র কসম খায়। নতুবা সে যেন চুপ থাকে’’।
(বুখারী, হাদীস ২৬৭৯, ৬১০৮, ৬৬৪৬ মুসলিম, হাদীস ১৬৪৬ আবু দাউদ, হাদীস ৩২৪৯ তিরমিযী, হাদীস ১৫৩৪ মালিক : ২/৪৮০ দারামী : ২/১৮৫ বায়হাক্বী : ১০/২৮ বাগাওয়ী, হাদীস ২৪৩১ ত্বায়ালিসী, হাদীস ১৯ আহমাদ : ২/১১, ১৭, ১৪২ হুমাইদী, হাদীস ৬৮৬)
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ تَحْلِفُوْا بِآبَائِكُمْ، وَلاَ بِأُمَّهَاتِكُمْ، وَلاَ بِالْأَنْدَادِ، وَلاَ تَحْلِفُوْا إِلاَّ بِاللهِ، وَلاَ تَحْلِفُوْا بِاللهِ إِلاَّ وَأَنْتُمْ صَادِقُوْنَ
‘‘তোমরা পিতা-মাতার কসম খেয়ো না। এমনকি আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়া অন্য যে কোন ব্যক্তি বা বস্ত্তর কসম খেয়ো না। তা যাই হোক না কেন। শুধু কসম খাবে আল্লাহ্ তা’আলার। তবে আল্লাহ্ তা’আলার কসম হতে হবে সত্যি সত্যি। মিথ্যা নয়’’। (আবু দাউদ, হাদীস ৩২৪৮)
বুরাইদাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
مَنْ حَلَفَ بِالْأَمَانَةِ ؛ فَلَيْسَ مِنَّا
‘‘যে ব্যক্তি আমানতের কসম খাবে সে আমার উম্মত নয়’’। (আবু দাউদ, হাদীস ৩২৫৩)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্ঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
لَأَنْ أَحْلِفَ بِاللهِ كَاذِبًا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَحْلِفَ بِغَيْرِهِ صَادِقًا
‘‘আমার নিকট মিথ্যাভাবে আল্লাহ্’র কসম খাওয়া অনেক ভালো সত্যিকারভাবে আল্লাহ্ ভিন্ন অন্যের কসম খাওয়া চাইতে’’। (ত্বাবারানী/কাবীর : ৯/৮৯০২)
আল্লাহ্ তা’আলা ভিন্ন অন্য কারোর কসম খেলে যা করতে হয়:
আল্লাহ্ তা’আলা ভিন্ন অন্য কারোর কসম খেলে কালিমায়ে তাওহীদ পড়ে নিবে।
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
مَنْ حَلَفَ فَقَالَ فِيْ حَلَفِهِ: بِاللاَّتِ وَالْعُزَّى فَلْيَقُلْ: لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ
‘‘কোন ব্যক্তি ‘‘লাত’’ ও ‘‘’উযযা’’ এর কসম খেলে সে যেন বলেঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই’’।
(বুখারী, হাদীস ৬৬৫০ মুসলিম, হাদীস ১৬৪৭ আবু দাউদ, হাদীস ৩২৪৭ তিরমিযী, হাদীস ১৫৪৫ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২১২৬ বায়হাক্বী ১০/৩০ আহমাদ ২/৩০৯)
সা’আদ বিন্ আবী ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
حَلَفْتُ مَرَّةً بِاللاَّتِ وَالْعُزَّى، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: قُلْ لاَ إِلاَهَ إِلاَّ اللهُ
‘‘আমি একদা ‘‘লাত’’ ও ‘‘’উযযা’’ এর কসম খেয়েছিলাম। তখন নবী (সা.) আমাকে বললেন: তুমি বলো: আল্লাহ্ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই’’।
(ইবনু হিববান, হাদীস ১১৭৮ আহমাদ : ১/১৮৩, ১৮৬-১৮৭ আবু ইয়া’লা, হাদীস ৭১৯, ৭৩৬ নাসায়ী/আল্ ইয়াওমু ওয়াল্লাইলাহ্, হাদীস ৯৮৯, ৯৯০)
যেমনিভাবে রাসূল (সা.) নিজ উম্মতকে আল্লাহ্ ভিন্ন অন্যের কসম খেতে নিষেধ করেছেন তেমনিভাবে তিনি কেউ আল্লাহ্ তা’আলার কসম খেলে তাকে সত্যবাদী বলে মেনে নেতে উৎসাহিত করেছেন যাতে সে আল্লাহ্ ভিন্ন অন্যের কসম খেতে বাধ্য না হয়।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা নবী (সা.) জনৈক ব্যক্তিকে নিজের পিতার কসম খেতে দেখলে তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
لاَ تَحْلِفُوْا بِآبَائِكُمْ، مَنْ حَلَفَ بِاللهِ فَلْيَصْدُقْ، وَمَنْ حُلِفَ لَهُ بِاللهِ فَلْيَرْضَ، وَمَنْ لَمْ يَرْضَ بِاللهِ فَلَيْسَ مِنَ اللهِ
‘‘তোমরা নিজ পিতার কসম খেয়ো না। কেউ আল্লাহ্ তা’আলার কসম খেলে সে যেন সত্য কসম খায়। আর যার জন্য আল্লাহ্ তা’আলার কসম খাওয়া হলো সে যেন সন্তুষ্টচিত্তে তা মেনে নেয়। যে ব্যক্তি তার জন্য আল্লাহ্ তা’আলার কসম খাওয়ার পরও সে তা সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নেয় না তার সাথে আল্লাহ্ তা’আলার কোন সম্পর্ক নেই’’। (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২১৩১)
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী (সা.) ইরশাদ করেন:
رَأَى عِيْسَى بْنُ مَرْيَمَ رَجُلًا يَسْرِقُ، فَقَالَ: أَسَرَقْتَ؟ قَالَ: لاَ وَالَّذِيْ لاَ إِلاَهَ إِلاَّ هُوَ، فَقَالَ عِيْسَى: آمَنْتُ بِاللهِ، وَكَذَّبْتُ بَصَرِيْ
‘‘ঈসা (আ.) জনৈক ব্যক্তিকে চুরি করতে দেখে বললেন: তুমি কি চুরি করেছো? সে বললো: না, আল্লাহ্ তা’আলার কসম যিনি এক ও একক। তখন ঈসা (আ.) বললেন: আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করে মেনে নিচ্ছি, তুমি সত্যই বলেছো আর আমি মিথ্যা দেখেছি’’। (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২১৩২)