শরীয়ত বিরোধী অসিলা:
শরীয়ত বিরোধী অসিলা বলতে ও সকল ব্যক্তি বা বস্ত্তকে বুঝানো হয় যে গুলোকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা কোর’আন ও হাদীস কর্তৃক প্রমাণিত নয়। যে গুলো নিম্নরূপ:
ক. কোন সম্মানিত ব্যক্তি সত্তার অসিলা ধরা:
যেমন: নবী (সা.) এর অসিলা ধরে এভাবে দো’আ করা,
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ بِجَاهِ نَبِيِّكَ أَنْ تُدْخِلَنِيْ جَنَّتَكَ
‘‘হে আল্লাহ্! আমি আপনার নবীর মর্যাদার অসিলায় আপনার জান্নাত কামনা করছি। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলার নিকট যে কোন মৃত ব্যক্তির সম্মান ও মর্যাদা শুধু তাঁরই কাজে আসবে। অন্যের কাজে নয়। জীবিত ব্যক্তির কাজে আসবে শুধু তারই আমল ও প্রচেষ্টা এবং আল্লাহ্ তা’আলার নিকট তার ব্যক্তিগত সম্মান ও মর্যাদা’’।
তবে এমন বলা যেতে পারে,
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ بِإِيْمَانِيْ بِرَسُوْلِكَ وَاتِّبَاعِيْ لِسُنَّتِهِ أَنْ تَغْفِرَ لِيْ ذُنُوْبِيْ
‘‘হে আল্লাহ্! আমি আপনার রাসূলের উপর ঈমান ও তাঁর আনুগত্যের অসিলায় আপনার নিকট এ কামনা করছি যে, আপনি আমার সকল গুনাহ্ ক্ষমা করে দিবেন’’।
কেউ কেউ ব্যক্তি সত্তার অসিলা ধরা জায়িয হওয়ার ব্যাপারে নিম্নোক্ত প্রমাণগুলো উল্লেখ করে থাকে। যা নিম্নরূপ:
১. আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اتَّقُوْا اللهَ وَابْتَغُوْا إِلَيْهِ الْوَسِيْلَةَ وَجَاهِـدُوْا فِيْ سَبِيْلِهِ، لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় করো। তাঁর সান্নিধ্য (তাঁর আনুগত্য ও নেক আমলের মাধ্যমে) অন্বেষণ করো এবং তাঁর পথে জিহাদ করো। আশাতো, তোমরা সফলকাম হবে’’। (মা’য়িদাহ্ : ৩৫)
পীর পূজারীরা বলে থাকে: উক্ত আয়াতে অসিলা বলতে পীর বুযুর্গদেরকেই বুঝানো হচ্ছে। অতএব তাদের নিকট বায়’আত হতে হবে। তাদের অসিলা ধরতে হবে।
মূলতঃ উক্ত আয়াতে অসিলা বলতে আল্লাহ্ তা’আলার আনুগত্য এবং নেক আমলকেই বুঝানো হয়েছে। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা কোর’আন মাজীদের অসংখ্য আয়াতে ঈমান ও নেক আমলকে জান্নাত পাওয়ার একান্ত মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্য কিছুকে নয়। অতএব আমাদেরকে উক্ত আয়াতের অসিলা শব্দ থেকে ঈমান ও নেক আমলই বুঝতে হবে। অন্য কিছু নয়।
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ أُوْلآئِكَ أَصْحَابُ الْـجَنَّةِ، هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ
‘‘যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই জান্নাতী। তম্মধ্যে তারা চিরকাল থাকবে’’। (বাক্বারাহ্ : ৮২)
তিনি আরো বলেন:
إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ، وَأَخْبَتُوْا إِلَى رَبِّهِمْ، أُوْلآئِكَ أَصْحَابُ الْـجَنَّةِ، هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ
‘‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে। অনুরূপ যারা একান্তভাবে নিজ প্রতিপালক অভিমুখী হয়েছে। তারাই জান্নাতী। তাতে তারা অনন্তকাল থাকবে’’। (হূদ্ : ২৩)
তিনি আরো বলেন:
إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَـهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا
‘‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে জান্নাতুল্ ফিরদাউস্ হবে তাদের আপ্যায়ন’’। (কাহ্ফ : ১০৭)
তিনি আরো বলেন:
فَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ لَـهُمْ مَغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْمٌ
‘‘সুতরাং যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তাদের জন্য রয়েছে একান্ত ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা’’। (হাজ্জ : ৫০)
তিনি আরো বলেন:
إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ لَـهُمْ جَنَّاتُ النَّعِيْمِ
‘‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতপূর্ণ জান্নাত’’। (লোকমান : ৮)
উক্ত আয়াতসমূহ বিবেচনা করলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, অসিলা বলতে আল্লাহ্ তা’আলা নেক আমলকেই বুঝিয়েছেন। কোন পীর-বুযুর্গকে নয়।
তেমনিভাবে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সা. ও হাদীসের মধ্যে ঈমান ও নেক আমলকে জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন।
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
أَتَى أَعْرَابِيٌّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ: دُلَّنِيْ عَلَى عَمَـلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الْـجَنَّةَ، قَالَ: تَعْبُدُ اللهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيْمُ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوْبَةَ، وَتُؤَدِّيْ الزَّكَاةَ الْمَفْرُوْضَةَ، وَتَصُوْمُ رَمَضَانَ، قَالَ: وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَـدِهِ، لاَ أَزِيْدُ عَلَى هَذَا، فَلَمَّا وَلَّى، قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَّنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْـجَنَّةِ، فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا
‘‘জনৈক গ্রাম্য ব্যক্তি নবী (সা.) এর নিকট এসে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আমাকে এমন একটি কাজ শিক্ষা দিন যা করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো। রাসূল (সা.) উত্তরে বললেন: আল্লাহ্ তা’আলার ইবাদাত করবে। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। ফরয নামায প্রতিষ্ঠা ও ফরয যাকাত আদায় করবে। রমযান মাসের রোযা পালন করবে। গ্রাম্য ব্যক্তিটি বললো: আল্লাহ্’র কসম! আমি এর চাইতে এতটুকুও বেশি করবো না। ব্যক্তিটি যখন এ কথা বলে ফিরে যাচ্ছিলো তখন নবী (সা.) বললেন: যার মনে চায় জান্নাতী লোক দেখতে সে যেন এ ব্যক্তিকে দেখে নেয়’’। (বুখারী, হাদীস ১৩৯৭)
আবু আইয়ূব আন্সারী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ ، فَقَالَ: دُلَّنِيْ عَلَى عَمَلٍ أَعْمَلُهُ، يُدْنِيْنِيْ مِنَ الْـجَنَّةِ وَيُبَاعِدُنِيْ مِنَ النَّارِ، قَالَ: تَعْبُدُ اللهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيْمُ الصَّلاَةَ، وَتُؤْتِيْ الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ ذَا رَحِمِكَ ، فَلَمَّا أَدْبَرَ، قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إِنْ تَمَسَّكَ بِمَا أُمِرَ بِهِ دَخَلَ الْـجَنَّةَ
‘‘জনৈক ব্যক্তি নবী (সা.) এর নিকট এসে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আমাকে এমন একটি কাজ শিক্ষা দিন যা করলে আমি জান্নাতের অতি নিকটবর্তী হবো এবং জাহান্নাম থেকে বহু দূরে সরে যাবো। রাসূল (সা.) উত্তরে বললেন: আল্লাহ্ তা’আলার ইবাদাত করবে। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। নামায প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দিবে। আত্মীয়তা রক্ষা করবে। লোকটি যখন ফিরে গেলো তখন রাসূল (সা.) বললেন: সে যদি আদিষ্ট কর্মগুলো ভালোভাবে আদায় করে তাহলে সে জান্নাতে যাবে’’। (মুসলিম, হাদীস ১৩)
উক্ত আয়াত ও হাদীসগুলো এটাই প্রমাণ করে যে, আল্লাহ্ তা’আলা অসিলার আয়াতে অসিলা বলতে ঈমান ও নেক আমলকেই বুঝিয়েছেন। পীর-বুযুর্গ জাতীয় অন্য কিছুকে নয়।
২. তারা বলে থাকে: আদম (আ.) জান্নাতে থাকাবস্থায় নিষিদ্ধ গাছের ফল খেলে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেন। তখন তিনি ‘‘মুহাম্মাদ’’ নামের অসিলায় আল্লাহ্ তা’আলার নিকট ক্ষমা চাইলে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে ক্ষমা করে দেন।
উক্ত হাদীস সকল হাদীস গবেষকের ঐকমত্যে একেবারেই জাল ও বানোয়াট। কোনভাবেই তা বিশুদ্ধ নয়।
৩. তারা বলে থাকে: জনৈক অন্ধ ব্যক্তি নবী (সা.) এর নিকট এসে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দো’আ করুন, যেন তিনি আমাকে ভালো করে দেন। তখন রাসূল (সা.) বললেন:
إِنْ شِئْتَ دَعَوْتُ، وَإِنْ شِئْتَ صَبَرْتَ ؛ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ، قَالَ: فَادْعُهُ، قَالَ: فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَوَضَّأَ، فَيُحْسِنَ وُضُوْءَهُ، وَيَدْعُوَ بِهَذَا الدُّعَاءِ: اللَّهُمَّ! إِنِّيْ أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّـهُ إِلَيْكَ ؛ بِنَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ ـ نَبِيِّ الرَّحْمَةِ ـ؛ إِنِّيْ تَوَجَّهْتُ بِكَ إِلَى رَبِّـيْ فِيْ حَاجَتِيْ هَذِهِ ؛ لِتُقْضَى لِيْ، اللَّهُمَّ! فَشَفِّعْهُ فِيَّ
’’তুমি যদি চাও তাহলে আমি তোমার জন্য দো’আ করতে পারি। আর যদি তুমি চাও ধৈর্য ধরবে তাহলে সেটি হবে তোমার জন্য খুবই উত্তম। সে বললো: আপনি আমার জন্য দো’আ করে দিন। তখন রাসূল (সা.) তাকে ভালোভাবে ওযু করে এ দো’আ করার পরামর্শ দেন। যার অর্থ: হে আল্লাহ্! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট কামনা করছি এবং আপনার দয়ালু নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর দো’আর অসিলায় আপনার নিকট কাকুতি-মিনতি করছি। আমার প্রভুর নিকট আমি রাসূল (সা.) এর দো’আর অসিলায় আমার প্রয়োজন পূরণের জন্য কাতর অনুনয় করছি। হে আল্লাহ্! আপনি আমার ব্যাপারে তাঁর সুপারিশ বা দো’আ কবুল করুন’’। (তিরমিযী, হাদীস ৩৫৭৮ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ১৪০৪)
মূলতঃ উক্ত হাদীসে রাসূল (সা.) এর দো’আর অসিলা ধরা হয়েছে। তাঁর ব্যক্তি সত্তার নয়। তা না হলে রাসূল (সা.) এর নিকট এসে তাঁর দো’আ চাওয়ার কোন মানে হয়না। কারণ, রাসূল (সা.) এর ব্যক্তি সত্তার অসিলা তাঁর অনুপস্থিতিতেও দেয়া যেতে পারে। তাঁর উপস্থিতির প্রয়োজন হয় না। উপরন্তু রাসূল (সা.) তার জন্য দো’আ করার ওয়াদা দিয়েছেন। তাঁর ব্যক্তি সত্তার অসিলা যথেষ্ট হলে তিনি কখনো তার জন্য দো’আ করার ওয়াদা করতেন না। তেমনিভাবে সেও আল্লাহ্ তা’আলার নিকট তার ব্যাপারে রাসূল (সা.) এর দো’আ কবুল হওয়ার মিনতি জানাতো না। কারণ, রাসূল (সা.) এর ব্যক্তি সত্তার অসিলাই তখন তার জন্য যথেষ্ট ছিলো।
এ ছাড়াও নবী (সা.) তাঁর পুরো জীবদ্দশায় নিজ দো’আর মধ্যে কখনো তিনি ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা বা অন্যান্য কোন সম্মানিত নবীর অসিলা ধরেননি। তেমনিভাবে সাহাবাদের কেউ নিজ দো’আয় কখনো রাসূল (সা.) এর ব্যক্তি সত্তার অসিলা ধরেননি অথবা তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর কবরের নিকট গিয়ে তাঁর মাধ্যমে কারোর জন্য আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দো’আ করান নি।
খ. কোন মৃত ব্যক্তির দো’আর অসিলা ধরা:
যেমন: রাসূল (সা.) এর কবরের পাশে গিয়ে বলা: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আমার জন্য আল্লাহ্ তা’আলার দরবারে দো’আ করুন, আমি যেন অতিসত্বর ধনী হয়ে যাই। কারণ, কোন ব্যক্তির ইন্তেকালের পর সে কোন ধরনের ইবাদাত করতে পারে না। এ কারণেই সাহাবারা রাসূল (সা.) এর মৃত্যুর পর তাঁর দো’আর অসিলা না ধরে হযরত ’আব্বাস (রা.) এর দো’আর অসিলা ধরেছেন।
একদা ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ্) জনৈক ব্যক্তিকে কবরস্থানের পাশে দাঁড়িয়ে এ কথা বলতে শুনেছেন। সে বলছে: হে কবরবাসীরা! তোমরা কি জানো না আমি কয়েক মাস যাবৎ তোমাদের কবরের নিকট এসে তোমাদেরকে দিয়ে শুধু আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আমার জন্য দো’আ করাতে চাচ্ছি। তোমরা জানো কি জানোনা? ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ্) তার এ কথা শুনে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: তারা তোমার কথার কোন উত্তর দেয়নি? সে বললো: না। তখন ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ্) তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
سُحْقًا لَكَ، وَتَرِبَتْ يَدَاكَ! كَيْفَ تُكَلِّمُ أَجْسَادًا لاَ يَسْتَطِيْعُوْنَ جَـوَابًا، وَلاَ يَمْلِكُوْنَ شَيْئًا، وَلاَ يَسْمَعُوْنَ صَوْتًا، وَتَلاَ هَذِهِ الْآيَةَ:
وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَّنْ فِيْ الْقُبُوْرِ
‘‘দূর হও এবং তোমার হস্তদ্বয় কর্দমাক্ত হোক! কিভাবে তুমি এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছো যারা তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম নয়। যারা কোন কিছুর মালিক নয়। যারা কোন আওয়াজ শুনতে পায় না। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করেন যার অর্থ: হে নবী! আপনি কবরবাসীকে কিছু শুনাতে সক্ষম হবেন না’’। [ফাতির : ২২ (কিতাবুত্ তাওহীদঃ ইক্ববাল কিলানী]
গ. জীবিত কিংবা মৃত ওলী অথবা কোন মূর্তির ইবাদাতের অসিলা ধরা:
এটি জঘন্যতম শির্ক। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
أَلاَ لِلهِ الدِّيْنُ الْـخَالِصُ، وَالَّذِيْنَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهِ أَوْلِيَآءَ، مَا نَعْبُدُهُمْ إِلاَّ لِيُقَرِّبُوْنَا إِلَى اللهِ زُلْفَى، إِنَّ اللهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِيْ مَا هُمْ فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ، إِنَّ اللهَ لاَ يَهْدِيْ مَنْ هُوَ كَاذِبٌ كَفَّارٌ
‘‘জেনে রেখো, অবিমিশ্র আনুগত্য একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলারই জন্য। আর যারা আল্লাহ্ তা’আলা ব্যতীত অন্য কাউকে অভিভাবক বা সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করেছে তারা বলে: আমরা তো এদের পূজা এ জন্যই করি যে, এরা আমাদেরকে আল্লাহ্ তা’আলার সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে। তারা যে বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা সে বিষয়ের সঠিক ফায়সালা দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা ঐ ব্যক্তিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেননা যে মিথ্যাবাদী ও কাফির’’। (যুমার : ৩)