প্রশ্নঃ (২০৯) সর্বশ্রেষ্ঠ সাহাবী কারা? বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন?

উত্তরঃ আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেনঃ আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর যামানায় অন্য কোন সাহাবীকে আবু বকরের সমান মনে করতাম না। তার পরে উমার (রাঃ) তারপর উছমান (রাঃ)। তাদের পরে সাহাবীদের কাউকেই অন্য কারো উপর মর্যাদাবান মনে করতাম না।[1] হিজরতে পথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাওর পর্বতের গুহায় লুকানো অবস্থায় আবু বকরকে বলেছিলেনঃ

(مَا ظَنُّكَ يَا أَبَا بَكْرٍ بِاثْنَيْنِ اللَّهُ ثَالِثُهُمَا)

‘‘হে আবু বকর! সেই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার ধারণা কি যাদের তৃতীয় হচ্ছেন আল্লাহ্’’?[2] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকরের ফজীলতের ব্যাপারে আরো বলেনঃ

(لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلاً لاَتَّخَذْتُ أَبَا بَكْرٍ خَلِيلاً وَلَكِنَّهُ أَخِي وَصَاحِبِي)

‘‘আমি যদি কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম, তাহলে আবু বকরকেই গ্রহণ করতাম। তবে আবু বকর আমার ভাই ও সাথী’’।[3] অন্য হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকরের ফজীলতে বলেনঃ

(إِنَّ اللَّهَ بَعَثَنِي إِلَيْكُمْ فَقُلْتُمْ كَذَبْتَ وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ صَدَقَ وَوَاسَانِي بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَهَلْ أَنْتُمْ تَارِكُوا لِي صَاحِبِي مَرَّتَيْنِ)

‘‘আল্লাহ আমাকে তোমাদের নিকট প্রেরণ করেছেন। তোমরা বলেছঃ তুমি মিথ্যুক। আর আবু বকর বলেছেঃ আপনি সত্যবাদী। সে তাঁর জান-মাল দিয়ে আমাকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। সুতরাং তোমরা কি আমার জন্য আমার সাথীকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকবে না? কথাটি দু’বার বলেছেন।[4] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমার (রাঃ)কে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ

(يَا ابْنَ الْخَطَّابِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا لَقِيَكَ الشَّيْطَانُ سَالِكًا فَجًّا قَطُّ إِلاَّ سَلَكَ فَجًّا غَيْرَ فَجِّكَ)

‘‘হে ইবনুল খাত্তাব! সুসংবাদ শ্রবণ কর। যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ, যখনই শয়তান কোন এক রাস্তায় তোমাকে চলতে দেখে তখন সে তোমার রাস্তা ছেড়ে দিয়ে অন্য রাস্তায় চলে যায় ’’।[5] তিনি আরো বলেনঃ

( لقد كان فيما قَبْلَكُمْ مُحَدَّثُونَ فَإِنْ يَكُنْ فِي أُمَّتِي مِنْهُمْ أَحَدٌ فَإِنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ مِنْهُمْ)

‘‘তোমাদের পূর্বের জাতিসমূহের মধ্যে ইলহাম[6] প্রাপ্ত লোক ছিল। আমার উম্মাতের মধ্যে কেউ সেরূপ থেকে থাকলে তিনি হলেন উমার বিন খাত্তাব’’।[7] গরু ও নেকড়ে বাঘের কথা বলার হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর ও উমারের ফজীলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ

( فَإِنِّي أُومِنُ بِهَذَا أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ)

‘‘আমি, আবু বকর ও উমার তাতে বিশ্বাস করি। অথচ তাঁরা দু’জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না’’।[8]

হুদায়বিয়ার দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উছমান (রাঃ)কে প্রতিনিধি হিসেবে মক্কায় পাঠিয়েছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর বায়আতুর্ রিযওয়ান সংঘঠিত হয়েছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপন ডান হাতের দিকে ইঙ্গিত করে বললেনঃ এটি উছমানের হাত। অতঃপর তা অন্য হাতের উপর রাখলেন এবং বললেনঃ এটি উছমানের বায়আত।[9] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ যে ব্যক্তি ‘রুমা’ নামক কূপ খনন করে মুসলমানদের জন্য ওয়াক্ফ করে দিবে তারজন্য রয়েছে জান্নাত। অতঃপর উছমান (রাঃ) তা খনন করে মুসলমানদের জন্য ওয়াক্ফ করে দিলেন।[10] অন্য এক হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি তাবুক যুদ্ধের সৈন্যদের অস্ত্রাদি প্রস্ত্তত করে দিবে, তার জন্য রয়েছে জান্নাত। আর উছমান (রাঃ) তা প্রস্ত্তত করে দিলেন।[11]

উছমান (রাঃ)এর আরো ফজীলত রয়েছে। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর দু’জন কন্যাকে বিয়ে করেছেন। সহীহ মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা নিজের উরু উন্মুক্ত করে শুয়েছিলেন। আবু বকর (রাঃ) প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেয়া হল। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেভাবেই রয়ে গেলেন। আবু বকরের সাথে কথা বললেন। অতঃপর উমার (রাঃ) প্রবেশ করলেন। তিনি সেভাবেই থেকে গেলেন। পরিশেষে যখন উছমান (রাঃ) প্রবেশের অনুমতি চাইলেন তখন তিনি উঠে বসলেন এবং কাপড় গুটিয়ে নিলেন। উছমানকে অনুমতি দেয়া হলে তিনি প্রবেশ করলেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাথে আলাপ-আলোচনা করলেন। উছমান (রাঃ) বের হয়ে গেলে আয়েশা জিজ্ঞাসা করলেন, আবু বকর এবং উমার (রাঃ) প্রবেশ করল কিন্তু আপনি সতর্ক হলেন না। যখন উছমান প্রবেশ করল তখন উঠে বসলেন এবং কাপড় গুটিয়ে নিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ أَلَا أَسْتَحِي مِنْ رَجُلٍ تَسْتَحِي مِنْهُ الْمَلَائِكَةُ অর্থাৎ আমি কি এমন একজন ব্যক্তিকে দেখে লজ্জাবোধ করবো না যাকে দেখে ফেরেশতাগণ লজ্জাবোধ করেন?[12] আলী (রাঃ) এর ফজীলতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(أَنْتَ مِنِّي وَأَنَا مِنْكَ)

‘‘তুমি আমার অন্তর্ভূক্ত আর আমি তোমার অন্তর্ভূক্ত’’।[13] খায়বারের যুদ্ধের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আগামীকাল আমি এমন একজন লোককে ঝান্ডা প্রদান করবো যিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাঁকে ভালবাসেন। সাহাবীগণ বললেনঃ আমরা এব্যাপারে সারা রাত আলোচনা করলাম। সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আলীকে ডাক। আলীকে ডেকে আনা হল। তাঁর চোখ অসুস্থ ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উভয় চোখে থুথু দিলেন। এতে তিনি ভাল হয়ে গেলেন। তিনি আলীর হাতে ঝান্ডা দিলেন। আল্লাহ তা’আলা তাঁর হাতে বিজয় দান করলেন।[14] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(مَنْ كُنْتُ مَوْلاَهُ فَعَلِيٌّ مَوْلاَهُ )

‘‘আমি যার বন্ধু আলীও তার বন্ধু’’।[15] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে লক্ষ্য করে বলেছেনঃ

أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُونَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ مِنْ مُوسَى

‘‘তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে, তোমার মর্যাদা আমার নিকট সেরকমই যেমন ছিল হারুনের মর্যাদা মূসার নিকট’’।[16]

যে দশ জন সাহাবীকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন আমরাও তাদেরকে জান্নাতবাসী বলে ঘোষণা দেই। তাঁরা হলেনঃ (১) আবু বকর ছিদ্দিক (রাঃ) (২) উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (৩) উসমান বিন আফ্ফান (রাঃ) (৪) আলী বিন আবু তালিব (রাঃ) (৫) যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ) (৬) তালহা বিন উবাইদুল্লাহ (রাঃ) (৭) সা’দ বিন আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) (৮) আব্দুর রাহমান বিন আউফ (রাঃ) (৯) আবু উবায়দাহ বিন জার্রাহ (রাঃ) (১০) সাঈদ বিন যায়েদ (রাঃ)।[17]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমার উম্মতের উপর সবচেয়ে দয়াবান হচ্ছে আবু বকর, দ্বীনী বিষয়ে সবচেয়ে কঠোর হচ্ছে উমার, বাস্তবে সবচেয়ে লাজুক হচ্ছে উছমান, আমার উম্মাতের মধ্যে হালাল ও হারাম সম্পর্কে সবচেয়ে জ্ঞানী হচ্ছে মুআয বিন জাবাল, কুরআনের সবচেয়ে বড় কারী হচ্ছে উবাই ইবনে কা’ব এবং ইলমে ফারায়েজের সবচেয়ে বড় আলেম হচ্ছে, যায়েদ বিন ছাবেত। প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে একজন করে বিশ্বস্ত লোক হয়ে থাকে। আর এই উম্মতের বিশ্বস্ত লোক হচ্ছে, আবু উবায়দা ইবনুল জার্রাহ।[18]

হাসান ও হুসাইনের মর্যাদায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তারা দু’জনই জান্নাতের যুবকদের সরদার হবেন।[19] আর তাঁরা হলো দুনিয়ার দু’টি ফুল।[20] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(اللَّهُمَّ إِنِّي أُحِبُّهُمَا فَأَحِبَّهُمَا)

‘‘হে আল্লাহ! আমি তাদের দু’জনকে ভালবাসি। আপনিও তাদেরকে ভালবাসুন’’।[21] হাসান সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(إِنَّ ابْنِي هَذَا سَيِّدٌ وَلَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يُصْلِحَ بِهِ بَيْنَ فِئَتَيْنِ عَظِيمَتَيْنِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ)

‘‘নিশ্চয়ই আমার এই নাতী নেতা হবে। অচিরেই আল্লাহ তাঁর মাধ্যমে মুসলমানদের বড় দু’টি দলের মধ্যে আপোস-মিমাংশার ব্যবস্থা করবেন’’।[22] পরবর্তীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর বাণী সত্যে পরিণত হয়েছে। হাসান ও হুসাইনের মা তথা ফাতেমা (রাঃ) সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(إنها سَيِّدَةُ نِسَاءِ أَهْلِ الْجَنَّةِ)

‘‘নিশ্চয়ই তিনি জান্নাতী মহিলাদের নেত্রী হবেন’’।[23]

এছাড়া সাহাবীদের আরো অনেক ফজীলত বর্ণিত হয়েছে। নির্দিষ্টভাবেও অনেক সাহাবীর ফজীলত বর্ণিত হয়েছে। তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। তবে কোন সাহাবীর কোন বিষয়ে ফজীলত বর্ণিত হওয়ার অর্থ এই নয় যে, তিনি সকল দিক থেকে অন্যান্য সাহাবীদের চেয়ে উত্তম। তবে চার খলীফার কথা ভিন্ন। প্রথম তিন খলীফার মর্যাদা পূর্বোক্ত ইবনে উমারের বর্ণিত হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। আর আলী (রাঃ)এর ব্যাপারে কথা হল আহলে সুন্নাতের ইজমার দ্বারা প্রমাণিত আছে তিন খলীফার পর তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি।

[1] - বুখারী, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত।

[2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ মুহাজিরদের ফজীলত।

[3] - বুখারী, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত।

[4] - বুখারী, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত।

[5] - বুখারী, অধ্যায়ঃ মুহাজিরদের ফজীলত।

[6] - মুমিন ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহর পক্ষ হতে কোন কাজ করার বা না করার ব্যাপারে যে দিক নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা জাগ্রত হয়, তাকে ইলহাম বলা হয়।

[7] - বুখারী ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত।

[8] - বুখারী, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত। নেকড়ে বাঘের কথা বলার হাদীছটি ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় গ্রন্থে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। হাদীছটির বিস্তারিত বিবরণ এই যে, ‘‘জনৈক রাখাল মাঠে ছাগল চরাচ্ছিল। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ এসে একটি ছাগলের উপর আক্রমণ করলো। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি ছিনিয়ে আনল। বাঘটি একটি টিলার উপর বসে বলতে লাগলাঃ তুমি কি আল্লাহকে ভয় করোনা? আল্লাহ আমাকে একটি রিজিক দিয়েছিলেন। আর তুমি তা ছিনিয়ে নিলে। রাখাল বললঃ কি আশ্চর্য্য ব্যাপার! মানুষের ন্যায় বাঘও আমার সাথে কথা বলছে। বাঘ বললঃ আমি কি তোমাকে এর চেয়ে আশ্চর্য্যজনক খবর দিবো না? মদীনায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতীতে যা ঘটেছে এবং আগামীতে যা ঘটবে তা সম্পর্কে মানুষকে সংবাদ দিচ্ছে। রাখাল তার ছাগলের পাল নিয়ে মদীনায় প্রবেশ করে ছাগলগুলো এক স্থানে রেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কাছে এসে ঘটনা খুলে বলল। এতক্ষণে নামাযের সময় হয়ে গেল। নামায শেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাখালকে বললেনঃ ‘‘তুমি সবার সামনে ঘটনা খুলে বল’’। সে ঘটনা বর্ণনা শেষ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ রাখাল সত্য বলেছে। ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষণ না হিংস্র প্রাণী মানুষের সাথে কথা বলবে। মানুষ তার হাতের লাঠির সাথে কথা বলবে, পায়ের জুতার সাথে কথা বলবে। এমনকি ঘরের স্ত্রী তার স্বামীর অনুপস্থিতে কি করছে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাকে বলে দিবে।

আর গরুর কথা বলার হাদীছটি ইমাম বুখারী ও মুসলিম আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। হাদীছটির বিস্তারিত বিবরণ এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

بينا رجل يسوق بقرة إذ أعيي فركبها فقالت: إنالم نخلق لهذا إنما خلقنا لحراثة الأرض فقال الناس: سبحان الله بقرة تكلم فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: فإني أومن بهذا أنا وأبو بكر وعمر وما هما ثم.

‘‘অতীতকালে একজন লোক একটি গরুকে হাঁকিয়ে নিচ্ছল। এক পর্যায়ে লোকটি ক্লান্ত হয়ে গরুটির উপর চরে বসল। গরুটি বলে উঠলঃ আমাদের এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি। আমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে যমীন চাষ করার জন্য। লোকেরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কথা শুনে লোকটি বললঃ সুবহানাল্লাহ! গরু কথা বলে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাম বললেনঃ আমি, আবু বকর ও উমার (রাঃ) এ টা বিশ্বাস করি। তখন আবু বকর ও উমার (রাঃ) সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

[9] - বুখারী, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত। শরহুল আকীদাহ আত্ তাহাবীয়া, পৃষ্ঠা নং- ৪৯২।

[10] - বুখারী, অধ্যায়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সাহাবীদের ফজীলত।

[11] - বুখারী ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ ফাযায়িলুস সাহাবাহ।

[12] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ ফাযায়িলুস সাহাবাহ।

[13] - বুখারী, অধ্যায়ঃ ফাযায়িলুস সাহাবাহ।

[14] - শরহুল আকীদাহ আত্ তাহাবীয়া, পৃষ্ঠান নং- ৪৯৫।

[15] - তিরমিযী, অধ্যায়ঃ আবওয়াবুল মানাকিব।

[16] - বুখারী, অধ্যায়ঃ আল-মানাকিব।

[17] - আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সুন্নাহ।

[18] - মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী, অধ্যায়ঃ আবওয়াবুল মানাকিব। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ হাদীছটি হাসান সহীহ।

[19] - তিরমিযী, অধ্যায়ঃ আবওয়াবুল মানাকিব।

[20] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফাযায়েল।

[21] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফাযায়েল।

[22] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফাযায়েল।

[23] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফাযায়েল।