ঈসায়ী প্রচারকগণ বলেন: ইসলাম কঠিন এবং খৃস্টধর্ম সহজ। লক্ষ্য করুন:

(ক) সরল মানুষকে প্রতারণা করার এটি বড় অস্ত্র। এ অস্ত্র দিয়ে সাধু পল ঈসা মাসীহের ধর্ম নষ্ট করেন। শুধু বিশ্বাসেই মুক্তি, কোনো কর্মই জরুরী নয়। ব্যভিচার, নরহত্যা, দুর্নীতি, মাদকতা ইত্যাদি যত পাপই কর না কেন যীশু তোমাকে ত্রাণ করবেন। বিশ্ব মানবতাকে ধ্বংস করার জন্য এর চেয়ে বড় প্রতারণা কী হতে পারে? বর্তমান বিশ্বে মানবতার অধঃপতন, নৈতিক অবক্ষয়, দুর্নীতি, স্বার্থপরতা, মাদকতা ও হিংস্রতার প্রসারের মূল কারণ সাধু পলের এ ধর্ম। এজন্য খৃস্টান সমাজের মানুষ হৃদয়ের পবিত্রতা হারিয়ে অবক্ষয়ের গভীরে নিমজ্জিত হয়েছেন। খৃস্টান পাদরীগণ কর্তৃক খৃস্টান চার্চগুলির মধ্যে যে পরিমাণ ব্যভিচার, ধর্ষণ, শিশুধর্ষণ ইত্যাদি ভয়ঙ্কর পাপ সংঘটিত হয়, বিশ্বের অন্য কোনো ধর্মের ধর্মগৃহে এর শতভাগের একভাগ পাপাচারেরও নযির নেই। আগ্রহী পাঠক ইন্টারনেটে sex abuse, sex abuse of catholic church, catholic celibacy ইত্যাদি সার্চ করুন।

(খ) পাশ্চাত্যের অনেক উচ্চশিক্ষিত খৃস্টান ‘সহজধর্ম’ ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করছেন, কারণ, খৃস্টান ধর্মে আল্লাহর যিকর, গুণগান, আখিরাত-মুখিতা ইত্যাদি কিছুই নেই। কালেভদ্রে চার্চে গিয়ে যে প্রার্থনা করা হয় তাও দুনিয়া মুখি। আর আল্লাহর মর্যাদা ও গুণগান ও আল্লাহর যিকর ছাড়া কখনোই মানুষের হৃদয় প্রশান্তি পায় না। পাঠক ইন্টারনেটে revertmuslims.com ভিযিট করুন।

(গ) প্রচলিত ঈসায়ী ধর্ম সহজ নয়। মানুষের বানানো ধর্ম যা হয়। একদিক সহজ করতে যেয়ে অন্যদিক কঠিন হয়ে গেছে। এ ধর্মে হারামকে হালাল করা হয়েছে কিন্তু হালালকে হারাম বানানো হয়েছে। এ ধর্মের নির্দেশ হলো পাপ করলে সরাসরি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া যাবে না, বরং পাপের কথা পাদরির কাছে বলতে হবে। নিজে বিবাহ না করে চিরকুমার বা চিরকুমারী থাকা এবং মেয়েদেরকে বিবাহ না দিয়ে চিরকুমারী রাখাই উত্তম (মথি ১৯/৯-১২, ১ করিন্থীয় ৭/১-৪০)। ঈশ্বরের জন্য পিতামাতা, স্ত্রী-পরিজন ত্যাগ করা প্রয়োজন; তাতে শতগুণ পিতামাতা স্ত্রীপরিজন পাওয়া যাবে! (মথি ১৯/২৯, মার্ক ১০/২৯-৩০, লুক ১৮/২৯-৩০)। এ ধর্মের বিধানে কোনো ধনী জান্নাতে যেতে পারবে না। (মথি ১৯/২৩-২৪)।

(ঘ) এ ধর্মের সবচেয়ে কঠিন হলো বিশ্বাস। প্রচারকগণ বলেন: শুধু যীশুকে বিশ্বাস করলেই মুক্তি। তবে কিভাবে তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে তা সত্যিকার অর্থে কেউ বলতে পারে না। আমরা দেখেছি, খৃস্টান পণ্ডিতগণ স্বীকার করেছেন যে, ত্রিত্ববাদ একটি ননসেন্স বা নির্বোধ প্রলাপ; কেউই তা বুঝেন না। ত্রিত্বের স্বরূপ কী? পিতার সাথে পুত্রের সম্পর্ক কী? যীশু কিভাবে ও কখন থেকে ঈশ্বর? জন্ম থেকে না মানুষ হিসেবে জন্মের পরে? তার মধ্যে একটি ব্যক্তিত্ব বা দুটি ব্যক্তিত্ব? তৃতীয় ঈশ্বরের উৎস কী? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিগত ২ হাজার বছরে অন্তত দু কোটি খৃস্টান মারামারি করে খুন হয়েছেন। ত্রিত্ববাদ বিষয়ক ও খৃস্টধর্মের হানাহানি বিষয়ক আলোচনায় যে আর্টিকেলগুলি উল্লেখ করেছি ইন্টারনেটে সেগুলো অধ্যয়ন করলেই পাঠক বুঝবেন, খৃস্টধর্মের “ঈমান” কত ভয়ানক দুর্বোধ্য ও কঠিন।

(ঙ) খৃস্টধর্মের সহজ ঈমানটুকুও কেউ অর্জন করতে পারে না। যীশু বলেন: “যাহারা বিশ্বাস করে, এই চিহ্নগুলি তাহাদের অনুবর্তী হইবে; তাহারা আমার নামে ভূত ছাড়াইবে, তাহারা নূতন নূতন ভাষায় কথা কহিবে, তাহারা সর্প তুলিবে এবং প্রাণনাশক কিছু পান করিলেও তাহাতে কোন মতে তাহাদের হানি হইবে না; তাহারা পীড়িতদের উপরে হস্তার্পণ করিবে, আর তাহারা সুস্থ হইবে” (মার্ক ১৬/১৭-১৮)। তিনি বলেন: “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যদি তোমাদের একটি সরিষা-দানার ন্যায় বিশ্বাস থাকে, তবে তোমরা এই পর্বতকে বলিবে ‘এখান হইতে ঐখানে সরিয়া যাও, আর ইহা সরিয়া যাইবে; এবং তোমাদের অসাধ্য কিছুই থাকিবে না।” (মথি ১৭/২০-২১)

ঈসায়ী প্রচারককে প্রশ্ন করুন: আপনার সহজ ধর্মের সহজ ঈমানটুকু কি আপনি অর্জন করতে পেরেছেন? তাহলে বিষপান করুন। শরিষা পরিমাণ ঈমানও কি অর্জন করতে পেরেছেন? তবে পাহাড় নয় আপনার টেবিলটিকে সরে যেতে বলুন! যদি তা না সরে তবে আপনাকে স্বীকার করতে হবে যে, আপনার ‘সরিষা-দানার পরিমাণও’ ঈমান নেই। আপনি যাকে ঈমান বলে মনে করছেন তা ঈমানই নয়; এতে মুক্তি মিলবে না।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে