সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়া প্রসঙ্গে

আবু ‘আলীয়া রহ. বলেছেন, সদাকাতুল ফিতর ফরয।

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى العَبْدِ وَالحُرِّ، وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى، وَالصَّغِيرِ وَالكَبِيرِ مِنَ المُسْلِمِينَ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ»

“প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের ওপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদকাতুল ফিতর হিসাবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা‘ পরিমাণ আদায় করা ফরয করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাত বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।”[1]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«وَكَّلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ فَأَتَانِي آتٍ فَجَعَلَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ، فَقُلْتُ لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَذَكَرَ الحَدِيثَ -، فَقَالَ: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الكُرْسِيِّ، لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ اللَّهِ حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ ذَاكَ شَيْطَانٌ»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমযানের যাকাত (সদকায়ে ফিতরের) হিফাজতের দায়িত্ব প্রদান করলেন। এরপর আমার নিকট একজন লোক আসলো। সে তার দু’হাতের কোষ ভরে খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে লাগলো। তখন আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট নিয়ে যাব। তখন সে একটি হাদীস উল্লেখ করল এবং বলল, যখন তুমি বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পড়বে। তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন হিফাজতকারী থাকবে এবং ভোর হওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে অথচ সে মিথ্যাবাদী এবং শয়তান ছিল।”[2]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৩।

[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৭৫।
মুসলিমদের গোলাম ও অন্যান্যের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,

«أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَضَ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى كُلِّ حُرٍّ، أَوْ عَبْدٍ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى مِنَ المُسْلِمِينَ»

মুসলিমদের প্রত্যেক আযাদ, গোলাম পুরুষ ও নারীর পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর হিসাবে খেজুর অথবা যব থেকে এক সা‘ পরিমাণ আদায় করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয করেছেন।”[1]

[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৪।

 আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كُنَّا نُطْعِمُ الصَّدَقَةَ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ»

“আমরা এক সা‘ পরিমাণ যব দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম।”[1]

আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

«كُنَّا نُخْرِجُ إِذْ كَانَ فِينَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ، عَنْ كُلِّ صَغِيرٍ، وَكَبِيرٍ، حُرٍّ أَوْ مَمْلُوكٍ، صَاعًا مِنْ طَعَامٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ» فَلَمْ نَزَلْ نُخْرِجُهُ حَتَّى قَدِمَ عَلَيْنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ حَاجًّا، أَوْ مُعْتَمِرًا فَكَلَّمَ النَّاسَ عَلَى الْمِنْبَرِ، فَكَانَ فِيمَا كَلَّمَ بِهِ النَّاسَ أَنْ قَالَ: «إِنِّي أَرَى أَنَّ مُدَّيْنِ مِنْ سَمْرَاءِ الشَّامِ، تَعْدِلُ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ» فَأَخَذَ النَّاسُ بِذَلِكَ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: «فَأَمَّا أَنَا فَلَا أَزَالُ أُخْرِجُهُ كَمَا كُنْتُ أُخْرِجُهُ، أَبَدًا مَا عِشْتُ»

“আমরা সদকাতুল ফিতর বাবদ এক সা‘ খাদ্য গম অথবা এক সা‘ যব অথবা এক সা‘ খেজুর অথবা এক সা‘ পনির কিংবা এক ‘সা কিসমিস প্রদান করতাম।

‘আব্দুল্লাহ ইবন মাসলামা ইবন কা‘নাব রহ. এর সনদে আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন, তখন আমরা ছোট ও বড় স্বাধীন ও ক্রীতদাস প্রত্যেকের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর বাবদ এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা‘ পনির অথবা এক সা‘ যব অথবা এক সা‘ খেজুর অথবা এক সা‘ কিশমিশ প্রদান করতাম। এভাবেই আমরা তা আদায় করতে থাকি। পরে মু‘আবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হজ অথবা ‘উমরার উদ্দেশ্যে যখন আমাদের নিকট আসলেন তখন তিনি মিম্বরে আরোহণ করে উপস্থিত লোকদের সাথে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করলেন। আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বললেন, আমার মতে সিরিয়ার দু-মুদ গম এক সা‘ খেজুরের সামান। লোকেরা তা গ্রহণ করে নিলেন। আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি তো যত দিন জীবিত থাকব ঐ ভাবেই সদকাতুল ফিতর আদায় করব, যে ভাবে আমি সদকাতুল ফিতর আদায় করে আসছিলাম।[2]

ইসমাঈল ইবন উমাইয়্যাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে ইয়ায ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সা‘দ ইবন আবু সারহ সংবাদ দিয়েছেন, তিনি আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন যে,

«كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الْفِطْرِ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِينَا، عَنْ كُلِّ صَغِيرٍ وَكَبِيرٍ، حُرٍّ وَمَمْلُوكٍ، مِنْ ثَلَاثَةِ أَصْنَافٍ: صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، صَاعًا مِنْ أَقِطٍ، صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ " فَلَمْ نَزَلْ نُخْرِجُهُ كَذَلِكَ، حَتَّى كَانَ مُعَاوِيَةُ: «فَرَأَى أَنَّ مُدَّيْنِ مِنْ بُرٍّ تَعْدِلُ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ» قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: «فَأَمَّا أَنَا فَلَا أَزَالُ أُخْرِجُهُ كَذَلِكَ»

“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন, তখন আমরা ছোট ও বড়, স্বাধীন ও ক্রীতদাস প্রত্যেকের পক্ষ থেকে তিন প্রকার বস্তু থেকে সদকাতুল ফিতর বাবদ এক সা‘ খেজুর, এক সা‘ পনির অথবা এক সা‘ যব প্রদান করতাম। এভাবে আমরা সদকাতুল ফিতর আদায় করছিলাম। অতঃপর মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সময় আসলো। তখন তিনি দু মুদ এক সা‘ খেজুরের সমান ধার্য করেন। আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি তো সর্বদা পূর্বের ন্যায়ই আদায় করতে থাকব।”[3]

আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الْفِطْرِ مِنْ ثَلَاثَةِ أَصْنَافٍ: الْأَقِطِ، وَالتَّمْرِ، وَالشَّعِيرِ»

“আমরা পনির, খেজুর ও যব -এ তিন প্রকার বস্তু থেকে সদকাতুর ফিতর আদায় করতাম।”[4]

আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,

«أَنَّ مُعَاوِيَةَ، لَمَّا جَعَلَ نِصْفَ الصَّاعِ مِنَ الْحِنْطَةِ، عَدْلَ صَاعٍ مِنْ تَمْرٍ، أَنْكَرَ ذَلِكَ أَبُو سَعِيدٍ، وَقَالَ: لَا أُخْرِجُ فِيهَا إِلَّا الَّذِي كُنْتُ أُخْرِجُ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ»

“মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন অর্ধ সা‘ গমকে এক সা‘ খেজুরের সমপরিমাণ নির্ধারণ করলেন, তখন আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তা মেনে নিলেন না এবং বললেন, আমি সদকাতুল ফিতর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে যা আদায় করতাম এখনও তাই আদায় করব। এক সা‘ খেজুর অথবা এক সা‘ কিশমিশ অথবা এক সা‘ যব কিংবা এক সা‘ পনির”।[5]

[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৫।

[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।

[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।

[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।

[5] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।

ইয়ায ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সা‘দ ইবন আবু সারহ আল-‘আমেরী তিনি আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন যে,

«كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ»

“আমরা এক সা‘ পরিমাণ কিসমিস দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম।”[1]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৬।

‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন,

«أَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِزَكَاةِ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ» قَالَ عَبْدُ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «فَجَعَلَ النَّاسُ عِدْلَهُ مُدَّيْنِ مِنْ حِنْطَةٍ»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদকাতুল ফিতর হিসাবে এক সা‘ পরিমাণ খেজুর বা এক সা‘ পরিমাণ যব দিয়ে আদায় করতে নির্দেশ দেন। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘তারপর লোকেরা যবের সমপরিমাণ হিসেবে দু’ মুদ (অর্থ সা‘) গম আদায় করতে থাকে’।”[1]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৭।
সদকাতুল ফিতর এক সা‘ পরিমাণ কিসমিস থেকে

আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كُنَّا نُعْطِيهَا فِي زَمَانِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ»، فَلَمَّا جَاءَ مُعَاوِيَةُ وَجَاءَتِ السَّمْرَاءُ، قَالَ: «أُرَى مُدًّا مِنْ هَذَا يَعْدِلُ مُدَّيْنِ»

“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে এক সা‘ খাদ্যদ্রব্য বা এক সা‘ খেজুর বা এক সা‘ যব বা এক সা‘ কিসমিস দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম। মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর যুগে যখন গম আমদানী হলো তখন তিনি বললেন, এক মুদ গম (পূর্বোক্তগুলোর) দু’ মুদ-এর সমপরিমাণ বলে আমার মনে হয়।”[1]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৮।
ঈদের সালাতের পূর্বেই সদকাতুল ফিতর আদায় করা

‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত যে,

«أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِزَكَاةِ الفِطْرِ قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ»

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দেন।”[1]

আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كُنَّا نُخْرِجُ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ»، وَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ: «وَكَانَ طَعَامَنَا الشَّعِيرُ وَالزَّبِيبُ وَالأَقِطُ وَالتَّمْرُ»

“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ঈদের দিন এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য সদকাতুল ফিতর হিসাবে আদায় করতাম। আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমাদের খাদ্যদ্রব্য ছিল যব, কিসমিস, পনির ও খেজুর।”[2]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৯।

[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫১০।
স্বাধীন ও গোলামের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব

যুহরী রহ. বলেছেন, বানিজ্যিক পণ্য হিসেবে ব্যবসায়ের জন্য ক্রয় করা গোলামের যাকাত দিতে হবে এবং তাদের সদাকাতুল ফিতরও দিতে হবে।

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«فَرَضَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدَقَةَ الفِطْرِ أَوْ قَالَ: رَمَضَانَ عَلَى الذَّكَرِ، وَالأُنْثَى، وَالحُرِّ، وَالمَمْلُوكِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ «فَعَدَلَ النَّاسُ بِهِ نِصْفَ صَاعٍ مِنْ بُرٍّ، فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا،» يُعْطِي التَّمْرَ «، فَأَعْوَزَ أَهْلُ المَدِينَةِ مِنَ التَّمْرِ، فَأَعْطَى شَعِيرًا»، فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ «يُعْطِي عَنِ الصَّغِيرِ، وَالكَبِيرِ، حَتَّى إِنْ كَانَ لِيُعْطِي عَنْ بَنِيَّ»، وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «يُعْطِيهَا الَّذِينَ يَقْبَلُونَهَا، وَكَانُوا يُعْطُونَ قَبْلَ الفِطْرِ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ»

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক পুরুষ, মহিলা, আযাদ ও গোলামের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর অথবা (বলেছেন) সদকা-ই-রামাযান হিসাবে এক সা‘ খেজুর বা এক এক সা‘ যব আদায় করা ফরয করেছেন। তারপর লোকেরা অর্ধ সা‘ গমকে এক সা‘ খেজুরের সমমান দিতে লাগল। (বর্ণনাকারী নাফে’ বলেন) ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খেজুর (সদকাতুল ফিতর হিসাবে) দিতেন। এক সময় মদীনায় খেজুর দুর্লভ হলে যব দিয়ে তা আদায় করেন। ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সকলের পক্ষ থেকেই সদকাতুল ফিতর আদায় করতেন, এমনকি আমার সন্তানদের পক্ষ থেকেও সদকার দ্রব্য গ্রহীতাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং ঈদের এক-দু’ দিন পূর্বেই আদায় করে দিতেন।” আবু ‘আব্দুল্লাহ রহ. বলেন, আমার সন্তান অর্থাৎ নাফে’ রহ. এর সন্তান। তিনি আরও বলেন, সদকার মাল একত্রিত করার জন্য দিতেন, ফকীরদের দেওয়ার জন্য নয়।[1]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫১১।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও প্রাপ্ত বয়স্কদের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব

আবু ‘আমর রহ. বলেন, উমার, আলী, ইবন উমার, জাবির, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম, তাউস, ‘আতা ও ইবন সীরীন রহ. ইয়াতিমের মাল থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। যুহুরী রহ. বলেন, পাগলের মাল থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা হবে।

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدَقَةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ عَلَى الصَّغِيرِ وَالكَبِيرِ، وَالحُرِّ وَالمَمْلُوكِ»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপ্রাপ্ত বয়স্ক, প্রাপ্ত বয়স্ক, আযাদ ও গোলাম প্রত্যেকের পক্ষ থেকে এক সা‘ যব অথবা এক সা‘ খেজুর সদকাতুল ফিতর হিসাবে আদায় করা ফরয করে দিয়েছেন।”[1]

[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫১২।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৯ পর্যন্ত, সর্বমোট ৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে