মুছল্লী পবিত্র হওয়ার নিয়ত করে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে মাটিতে দুই হাত একবার মারবে।[1] অতঃপর ফুঁক দিয়ে ঝেড়ে ফেলে প্রথমে মুখমণ্ডল তারপর দুই হাত একবার কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করবে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন,

إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيْكَ هَكَذَا فَضَرَبَ النَّبِيُّ  بِكَفَّيْهِ الْأَرْضَ وَنَفَخَ فِيْهِمَا ثُمَّ مَسَحَ بِهِمَا وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ.

‘তোমার জন্য এইরূপ করাই যথেষ্ট ছিল। এই বলে তিনি তাঁর দুই হাত মাটির উপর মারলেন এবং ফুঁক দিলেন। অতঃপর দুই হাত দ্বারা মুখমণ্ডল ও দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করলেন।[2]

জ্ঞাতব্য : আবুদাঊদে দুইবার হাত মারা ও পুরো হাত বগল পর্যন্ত মাসাহ করা সংক্রান্ত যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তার সনদ বিশুদ্ধ হলেও সেগুলো মূলতঃ কতিপয় ছাহাবীর ঘটনা মাত্র, যা রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার আগে ঘটেছিল।[3] অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তায়াম্মুমের উক্ত পদ্ধতি শিক্ষা দেন। যেমন- ইমাম মুহিউস সুন্নাহ বলেন,

هَذَا حِكاَيَةُ فِعْلِهِمْ لَمْ نَنْقُلْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ  كَمَا حَكَى عَمَّارٌ عَنْ نَفْسِهِ التَّمَعُّكُ فِىْ حَالِ الْجَنَابَةِ فَلَمَّا سَأَلَ النَّبِىَّ  وَأَمَرَهُ بِالْوَجْهِ وَالْكَفَّيْنِ انْتَهَى إِلَيْهِ وَأَعْرَضَ عَنْ فِعْلِهِ.

‘এটা ছাহাবীদের কাজের ঘটনা, যা আমরা রাসূল (ছাঃ) থেকে নকল করতে পারিনি। যেমনটি আম্মার (রাঃ) জুনবী অবস্থায় মাটিতে গড়াগড়ি করার ঘটনা নিজের পক্ষ থেকে বর্ণনা করেছেন। অতঃপর যখন তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তখন তিনি শুধু মুখমণ্ডল ও দুই কব্জি মাসাহর নির্দেশ দান করেন। এ পর্যন্তই শেষ করেছেন। আর আম্মার (রাঃ) তার কাজ থেকে ফিরে আসেন।[4] শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন,

لَكِنَّ الْعَمَلَ لَيْسَ عَلَيْهِ لِأَنَّ الصَّحَابَةَ لَمْ يَفْعَلُوْا ذَلِكَ بِتَعْلِيْمٍ مِنَ النَّبِىِّ  وَإِنَّمَا الْعَمَلُ عَلَى حَدِيْثِهِ الْآخِرِ الْآتِىْ بَعْدَهُ

‘কিন্তু আমল এর উপর (দুই হাত মারা) ছিল না। কারণ তখন ছাহাবীগণ রাসূল (ছাঃ)-এর শিক্ষা অনুযায়ী করেননি। বরং আমল ছিল শেষ হাদীছের প্রতি, যা পরেই আসছে।[5] অতএব রাসূলের আমল ও বক্তব্যই উম্মতের জন্য অনুসরণীয়।

[1]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ; ছহীহ বুখারী হা/১; মিশকাত হা/১; ছহীহ তিরমিযী হা/২৫, ১/১৩ পৃঃ; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৩৯৭, পৃঃ ৩২ সনদ হাসান; মিশকাত হা/৪০২।

[2]. ছহীহ বুখারী হা/৩৩৮, ১/৪৮ পৃঃ, (ইফাবা হা/৩৩১, ১/১৮৮ পৃঃ), ‘তায়াম্মুম’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪; মুসলিম হা/৮৪৬, ১/১৬১ পৃঃ; মিশকাত হা/৫২৮, পৃঃ ৫৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৯৩, ২/১৩৫ পৃঃ।

[3]. আবুদাঊদ হা/৩১৮, ১/৪৭ পৃঃ; মিশকাত হা/৫৩৬, পৃঃ ৫৫।

[4]. তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/৫৩৬-এর টীকা দ্রঃ ১/১৬৭ পৃঃ।

[5]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/৩৪৩, ২/১২৬ পৃঃ।