১. নিজ ঘর থেকেই ভালোভাবে অযু করে নিবে:

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন:

«وَمَا مِنْ رَجُلٍ يَتَطَهَّرُ فَيُحْسِنُ الطُّهُوْرَ ثُمَّ يَعْمَدُ إِلَى مَسْجِدٍ مِنْ هَذِهِ الـْمَسَاجِدِ إِلاَّ كَتَبَ اللهُ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ يَخْطُوْهَا حَسَنَةً وَيَرْفَعَهُ بِهَا دَرَجَةً، وَيَحُطُّ عَنْهُ بِهَا سَيِّئَةً».

“যে কেউ সুন্দরভাবে পবিত্রতার্জন করে মসজিদগামী হয় আল্লাহ তা‘আলা তাকে প্রতি কদমের বদৌলতে একটি করে পুণ্য দিবেন ও একটি করে তার মর্যাদা উন্নীত করবেন এবং একটি করে তার গুনাহ মুছে দিবেন”।

২. মসজিদে আসার আগে দুর্গন্ধময় যে কোনো জিনিস খাওয়া বা ব্যবহার করা থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে:

জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ أَكَلَ ثُومًا أَوْ بَصَلًا فَلْيَعْتَزِلْنَا أَوْ لِيَعْتَزِلْ مَسْجِدَنَا وَلْيَقْعُدْ فِي بَيْتِهِ».

“যে ব্যক্তি রসুন অথবা পিয়াজ খেলো সে যেন আমরা কিংবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে। তথা ঘরে বসে থাকে”।[1]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে,

«مَنْ أَكَلَ الْبَصَلَ وَالثُّومَ وَالْكُرَّاثَ فَلَا يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا فَإِنَّ الْـمَلَائِكَةَ تَتَأَذَّى مِمَّا يَتَأَذَّى مِنْهُ بَنُو ادَمَ».

“যে ব্যক্তি পিয়াজ, রসুন ও কুর্রাস (পিয়াজ জাতীয় সমঘ্রাণের এক প্রকার উদ্ভিদ) খেলো সে যেন আমাদের মসজিদের নিকটবর্তী না হয়। কারণ, আদম সন্তান যে জিনিসে কষ্ট পায় তাতে ফিরিশতাগণও কষ্ট পান”।

>
[1] বুখারী, হাদীস নং ৮৫৫ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬৪
৩. সাধ্য মতো সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ পরেই মসজিদে আসবে:

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿يَٰبَنِيٓ ءَادَمَ خُذُواْ زِينَتَكُمۡ عِندَ كُلِّ مَسۡجِدٖ﴾ [الاعراف: ٣١]

“হে আদম সন্তানরা! তোমরা (জামা‘আতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে) যে কোনো মসজিদের নিকটবর্তী হতে চাইলে সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ গ্রহণ করবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৩১]

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْـجَمَالَ».

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকেই ভালোবাসেন”।[1]

>
[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯১
৪. ঘর থেকে বের হওয়ার দো‘আগুলো পড়ে নিবে এবং শুধুমাত্র সালাতের নিয়্যাতেই ঘর থেকে বের হবে:

ঘর থেকে বের হওয়ার দো‘আগুলো নিম্নরূপ:

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا خَرَجَ الرَّجُلُ مِنْ بَيْتِهِ فَقَالَ بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ قَالَ: يُقَالُ حِينَئِذٍ : هُدِيتَ وَكُفِيتَ وَوُقِيتَ، فَتَتَنَحَّى لَهُ الشَّيَاطِيْنُ فَيَقُولُ لَهُ شَيْطَانٌ اخَرُ : كَيْفَ لَكَ بِرَجُلٍ قَدْ هُدِيَ وَكُفِيَ وَوُقِيَ».

“যখন কোনো ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে: بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ যার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার নামে এবং তাঁর ওপর ভরসা করেই ঘর থেকে বের হচ্ছি। কোনো অন্যায় কাজ থেকে বাঁচার শক্তি এবং কোনো পুণ্যময় কাজ করার ক্ষমতা একমাত্র তিনিই দিয়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন (উক্ত দো‘আ পড়ে ঘর থেকে বের হওয়া ব্যক্তিকে) বলা হয়: তুমি হিদায়াতপ্রাপ্ত, তোমার জন্য তা একেবারেই যথেষ্ট ওপরন্তু তুমি একান্ত নিরাপদ। তখন শয়তানগুলো তার কাছ থেকে সরে যায়। আর তখন অন্য শয়তান তাকে বলে: এমন ব্যক্তিকে নিয়ে তোমার আর কিই বা করার আছে যে হিদায়াতপ্রাপ্ত, যার জন্য উক্ত দো‘আই যথেষ্ট এবং যে নিরাপদ”।[1]

উম্মু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«مَا خَرَجَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْتِىْ قَطُّ إِلاَّ رَفَعَ طَرْفَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ : اللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أُضَلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أُزَلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ اَوْ يُجْهَلَ عَلَىَّ».

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই আমার ঘর থেকে বেরিয়েছেন তখনই তিনি আকাশের দিকে চোখ উঁচিয়ে বলেছেন: اللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أُضَلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أُزَلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ اَوْ يُجْهَلَ عَلَىَّ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আমি নিশ্চয় আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি পথ ভ্রষ্টতা থেকে কিংবা অন্যকে পথ ভ্রষ্ট করানো থেকে, পদস্খলন থেকে কিংবা অন্যকে পদস্খলন করানো থেকে, যুলুম থেকে কিংবা অন্যের ওপর যুলুম করা থেকে এবং মূর্খতা থেকে কিংবা অন্যের সাথে মূর্খতা প্রদর্শন থেকে”।[2]

একদা আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তাঁর খালা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী মাইমূনাহ রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে রাত্রি যাপন করেছেন। তখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঘর থেকে সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বের হওয়ার সময় নিম্নোক্ত দো‘আ পড়তে শুনেছেন:

«اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِيْ قَلْبِيْ نُوْرًا، وَفِيْ لِسَانِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ فِيْ سَمْعِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ فِيْ بَصَرِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ مِنْ خَلْفِيْ نُوْرًا، وَمِنْ أَمَامِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِيْ نُوْرًا، وَمِنْ تَحْتِيْ نُوْرًا، وَعَنْ يَمِينِيْ نُوْرًا، وَعَنْ شِمَالِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ فِي نَفْسِيْ نُوْرًا، وَأَعْظِمْ لِيْ نُوْرًا، وَعَظِّمْ لِيْ نُـوْرًا، وَاجْعَلْ لِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْنِيْ نُوْرًا، اللَّهُمَّ أَعْطِنِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ فِيْ عَصَبِيْ نُوْرًا، وَفِيْ لَـحْمِي نُوْرًا، وَفِيْ دَمِي نُوْرًا، وَفِيْ شَعَرِيْ نُوْرًا، وَفِيْ بَشَرِيْ نُوْرًا».

“হে আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে আলো দিন, আমার জিহবায় আলো দিন, আমার শ্রবণ শক্তিতে আলো দিন, আমার দৃষ্টি শক্তিতে আলো দিন, আমার পেছনে আলো দিন, আমার সামনে আলো দিন, আমার উপরে আলো দিন, আমার নিছে আলো দিন, আমার ডানে আলো দিন, আমার বাঁয়ে আলো দিন, আমার প্রবৃত্তিতে আলো দিন, আমার আলো আরো অনেক বাড়িয়ে দিন, আমার জন্য আলো দিন, আমাকে আলোময় বানিয়ে দিন, আমাকে আলো দিন, আমার স্নায়ুতে আলো দিন, আমার গোস্তে আলো দিন, আমার রক্তে আলো দিন, আমার চুলে আলো দিন, এমনকি আমার শরীরের চামড়ায়ও আলো দিন”।[3]

>
[1] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫০৯৫ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪২৬

[2] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫০৯৪ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪২৭ ইবন মাজাহ্, হাদীস নং ৩৮৮৪

[3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩১৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬৩।
৫. মসজিদের দিকে যাওয়ার সময় আঙ্গুলগুলোর একটিকে অপরটিতে ঢুকিয়ে দিবে না এমনকি সালাতেও নয়:

কা‘ব ইবন উজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ خَرَجَ عَامِدًا إِلَى الـْمَسْجِدِ فَلَا يُشَبِّكَنَّ بَيْنَ أَصَابِعِهِ فَإِنَّهُ فِيْ صَلَاةٍ».

“তোমাদের কেউ ভালোভাবে অযু করে জামা‘আতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বেরুলে সে যেন আঙ্গুলগুলোর একটিকে অপরটিতে ঢুকিয়ে না দেয়। কারণ, সে তো তখন যেন সালাতেই রয়েছে”।[1]

>
[1] তিরমিযী, হাদীস নং ৩৮৭; আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৬২।
৬. ধীরে-সুস্থে মসজিদের দিকে রওয়ানা করবে:

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا سَمِعْتُمْ الْإِقَامَةَ فَامْشُـوْا إِلَـى الصَّلَاةِ وَعَلَيْكُـمْ بِالسَّكِينَةِ وَالْوَقَارِ وَلاَ تُسْرِعُوا فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا».

“যখন তোমরা সালাতের ইক্বামত শুনো তখন তোমরা ধীরে-সুস্থে তথা ভদ্রতার সাথে সালাতের দিকে রওয়ানা করো। তোমরা অতি দ্রুত সালাতের দিকে যেও না। অতঃপর তোমরা যতোটুকু সালাত ইমাম সাহেবের সাথে পাও পড়ে নাও। আর বাকিটুকু পুরা করে নাও”।[1]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে,

«إِذَا أُقِيمَتْ الصَّلَاةُ فَلَا تَأْتُوْهَا تَسْعَوْنَ وَأْتُوْهَا تَمْشُوْنَ وَعَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا».

“যখন সালাতের ইক্বামত দেওয়া হয় তখন তোমরা সালাতের দিকে দৌড়ে এসো না। বরং ধীরে-সুস্থে হেঁটে এসো। অতঃপর ইমাম সাহেবের সাথে যতোটুকু সালাত পাও পড়ে নাও। আর বাকিটুকু পুরা করে নাও”।

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬, ৯০৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬০২।
৭. মসজিদে ঢুকার আগে নিজের জুতা-জোড়া ভালোভাবে দেখে নিবে এবং তাতে নাপাক দেখলে মাটি দিয়ে ঘষে নিবে:

আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ إِلَى الْـمَسْجِدِ فَلْيَنْظُرْ فَإِنْ رَأَى فِيْ نَعْلَيْهِ قَذَرًا أَوْ أَذًى فَلْيَمْسَحْهُ وَلْيُصَلِّ فِيهِمَا».

“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে আসে তখন সে যেন তার জুতা জোড়া ভালোভাবে দেখে নেয়। অতঃপর সে যদি তাতে কোনো নাপাক বা ময়লা দেখতে পায় তা হলে সে যেন তা কোনো কিছু দিয়ে মুছে ফেলে এবং উক্ত জুতা পরেই সালাত পড়ে”।[1]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا وَطِئَ أَحَدُكُمْ بِنَعْلَيْهِ الأَذَى فَإِنَّ التُّرَابَ لَهُ طَهُورٌ».

“যখন তোমাদের কেউ নিজ জুতা দিয়ে নাপাক মাড়ায় তখন মাটিই তার জন্য পবিত্রতা”।[2]

[1] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫০; ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১০১৭।
[2] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৮৫।
৮. মসজিদে ঢুকার সময় ডান পা আগে বাড়িয়ে দিবে এবং নিম্নোক্ত দো‘আগুলো পড়ে নিবে:

«بِسْمِ اللهِ، وَالصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ[1] أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ».

আবু হুমাইদ কিংবা আবু উসাইদ সাঈদী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ الْـمَسْجِدَ فَلْيُسَلِّمْ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ لِيَقُلْ اللَّهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ فَإِذَا خَرَجَ فَلْيَقُلْ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْاَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ».

“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাম পাঠায়। অতঃপর বলে: اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাগুলো খুলে দিন। আর যখন সে মসজিদ থেকে বের হয় তখন সে যেন বলে: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْاَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট সমূহ কল্যাণ কামনা করি”।[2]

ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْـمَسْجِدَ يَقُولُ: بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ، وَإِذَا خَرَجَ قَالَ: بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ».

“যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন তিনি বলতেন: بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি এবং আল্লাহর রাসূলের ওপর যথাযোগ্য সালাম বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আপনি আমার সকল গুনাহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের সকল দরজা খুলে দিন”।[3]

আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন:

«أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ».

“মহান আল্লাহ, তাঁর সম্মানিত সত্তা ও চির ক্ষমতার আশ্রয় চাচ্ছি বিতাড়িত শয়তান থেকে”।[4]

[1] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৫; ইবনুস-সুন্নী, হাদীস নং ৮৮।
[2] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৫।
[3] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৭৭৮।
[4] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৬।
৯. মসজিদে ঢুকে আশপাশের লোকগুলো শুনতে পায় এমন স্বরে তাদেরকে সালাম করবে:

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَا تَدْخُلُونَ الْـجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَوَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ؟ أَفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ».

“তোমরা কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা খাঁটি ঈমানদার হবে। আর কখনো তোমরা খাঁটি ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমাদের মাঝে পরস্পর ভালোবাসা ও সৌহার্দ জন্ম নিবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ শিখিয়ে দেবো না যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালোবাসবে। তোমরা নিজেদের মাঝে সালামের বিপুল বিস্তার ঘটাও”।[1]

আম্মার ইবন ইয়াসির রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন:

«ثَلَاثٌ مَنْ جَمَعَهُنَّ فَقَدْ جَمَعَ الْإِيمَانَ : الْإِنْصَافُ مِنْ نَفْسِكَ وَبَذْلُ السَّلَامِ لِلْعَالَمِ وَالْإِنْفَاقُ مِنْ الْإِقْتَارِ ».

“তিনটি জিনিস যার মধ্যে এর সবগুলোই থাকবে সেই হচ্ছে পরিপূর্ণ ঈমানদার। সেগুলো হচ্ছে, নিজের ব্যাপারে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা, সবাইকে সালাম দেওয়া এবং নিজের প্রচুর প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও ধন-সম্পদ আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা”।[2]

[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৪।
[2] সহীহ বুখারী/কিতাবুল-ঈমান/বাবু ইফ্শায়িস-সালাম।
১০. মসজিদে ঢুকার সময়টি কোনো ফরয সালাতের সময় না হয়ে থাকলে অন্ততপক্ষে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত পড়ে নিবে:

আর তা কোনো ফরয সালাতের সময় হয়ে থাকলে তদুপরি নিজ ঘরে সে সালাতের নিয়মিত সুন্নাতটুকু না পড়ে থাকলে উক্ত সুন্নাতটুকু মসজিদেই পড়ে নিবে। এতে করে মসজিদে ঢুকে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত আদায়ের দায়িত্বটুকু আদায় হয়ে যাবে। আর সে সালাতের নিয়মিত সুন্নাতটুকু নিজ ঘরে পড়ে থাকলে মসজিদে এসে শুধু দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাতই পড়ে নিবে। এমনকি সে সালাতের আগে কোনো নিয়মিত সুন্নাত না থাকলে কমপক্ষে সে সালাতের আযান ও ইক্বামতের মধ্যকার দু’ রাকাত নফল সালাতই আদায় করে নিবে। এতে করে মসজিদে ঢুকে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত আদায়ের দায়িত্বটুকুও আদায় হয়ে যাবে।

আবু ক্বাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْـمَسْجِدَ فَلَا يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ».

“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন
অন্ততপক্ষে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত আদায় না করে না বসে”।[1]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭১৪।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »