ইসলামের জন্য তিনি তাঁর সমস্ত সম্পদ ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। তা ছিল চল্লিশ হাজার দিনার (মতান্তরে দিরহাম)। কুরাইশদের যেসব দাসদাসী ইসলাম গ্রহণের কারণে নির্যাতিত হচ্ছিল, এ অর্থ দিয়ে তিনি তাদের মুক্ত করে দেন। এদেরই একজন হলেন বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু- ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন।

বিলালকে তার মালিক উমাইয়া মরুভূমির তপ্ত বালুতে প্রখর রৌদ্রে চিৎ করে বুকে পাথর দিয়ে শুইয়ে রাখত। আর তিনি শুধু বলতেন: আহাদ, আহাদ।

আবু বকর পাঁচ উকিয়া স্বর্ণ দিয়ে তাকে কিনে নিয়ে মুক্ত করে দেন। আরো নানাভাবে আল্লাহর রাস্তায় তিনি তাঁর সম্পদ ব্যয় করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

‘‘আমি প্রতিটি মানুষের ইহসান পরিশোধ করেছি। কিন্তু আবু বকরের ইহসানসমূহ এমন যে তা পরিশোধ করতে আমি অক্ষম। তার প্রতিদান আল্লাহ দেবেন। তার অর্থ আমার উপকারে যেমন এসেছে, অন্য কারো অর্থ তেমন আসেনি।”

সাহাবাদের জন্য তিনি ছিলেন মুক্তহস্ত, উদার। তাবুকের যুদ্ধে তিনি তাঁর সমস্ত সম্পদ দান করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন:

“তোমার পরিবারের জন্য কি রেখে এসেছ?’’

তিনি তখন উত্তর দিয়েছিলেন: ‘‘তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই যথেষ্ট।”

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোনো বস্তুর এক জোড়া দান করবে, তাকে জান্নাতের কোনো একটি দরজা থেকে ডাকে হবে, ‘হে আল্লাহর বান্দা, এটি উত্তম।’ সালাত আদায়কারীকে সালাতের দরজা থেকে ডাকা হবে, জিহাদকারীকে জিহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে, সাদাকাকারীকে সাদাকার দরজা থেকে ডাকা হবে এবং সিয়াম পালনকারীকে সিয়ামের দরজা থেকে ডাকা হবে। আবু বকর জিজ্ঞেস করলেন: কাউকে কি সব কয়টি দরজা থেকে ডাকা হবে, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!’’

‘‘হ্যাঁ, এবং আমি আশা করি তুমি তাদের একজন, হে আবু বকর।”

আখিরাতের কল্যাণের কাজে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ব্যাপারে আবু বকর ছিলেন অগ্রগামী।

ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন : ঈমানের ক্ষেত্রে আবু বকরের ঈমান অন্য সকল উম্মাতের ঈমান একত্রিত করলে যা হয়, তার চেয়ে বেশি।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে যে, আবু বকর হবেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের মধ্যে প্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী।