কাফেররা দুনিয়াতে উন্নত, যেহেতু তাদের জন্য দুনিয়া এবং মুসলিমদের জন্য আখেরাত। কাফেররা দুনিয়ার উন্নতি নিয়ে চিন্তা গবেষণা করে। আর মুসলিমরা আখেরাত নিয়ে চিন্তা গবেষণা করে। মুসলিমদের দুনিয়া উন্নত না হলেও তাদের আখেরাত উন্নত। কাফেরদের অবস্থা সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
“ওরা পার্থিব জীবনের বাহ্য দিক সম্বন্ধে অবগত, অথচ পরলৌকিক জীবন সম্বন্ধে ওরা উদাসীন।” (রুমঃ ৭)
একদা দুই জাহানের বাদশাহ নবী (সঃ) চাটাই এর উপর হেলান দিয়ে শুয়ে ছিলেন। তার পার্শ্বদেশে চাটাই এর স্পষ্ট দাগ পড়ে গিয়েছিল। তার বগলে ছিল খেজুর গাছের চোকার বালিশ! তা দেখে উমার কেঁদে ফেললেন। আল্লাহর রাসুল (সঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, “হটাৎ কেঁদে উঠলে কেন, হে উমার?” উমার বললেন, ‘যে আল্লাহর রাসুল! পারস্য ও রোম সম্রাট কত সুখ বিলাসে বাস করছে। আর আপনি আল্লাহর রাসুল হয়েও এ অবস্থায় কালাতিপাত করছেন?আপনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন, যেন তিনি আপনার উম্মাতকে পার্থিব সুখ সম্পদে সমৃদ্ধ করেন। পারস্য ও রোমবাসীদেরকে আল্লাহ দুনিয়ার সুখ সামগ্রী দান করেছেন, অথচ তারা তার ইবাদত করে না!’
এ কথা শুনে মহানবী (সঃ) হেলান ছেড়ে উঠে বসলেন এবং বললেন, “হে উমার! এ ব্যাপারে তুমি এমন কথা বল? ওরা হল এমন জাতি, যাদের সুখ সম্পদকে এ জগতেই ত্বরান্বিত করা হয়েছে। তুমি কি চাও না যে, ওদের সুখ ইহকালে আর আমাদের সুখ পরকালে হোক?” (বুখারি ৫১৯১, মুসলিম, ইবনে মাজাহ, সহিহুল জামে ১৩২৭ নং)
মুসলিমের দোষ ঢাকার উদ্দেশ্যে সাক্ষ্য গোপন করা বৈধ, যদি সেই গোপন করাতে সত্যের আপলাপ না হয়, নোংরা কাজ বৃদ্ধি না পায় এবং অপরাধী অপরাধে উদ্বুদ্ধ না হয়। নচেৎ সাক্ষ্য গোপন করা এবং সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করা বৈধ নয়। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন,
“যখন (সাক্ষ্য দিতে) ডাকা হয়, তখন যেন সাক্ষীরা অস্বীকার না করে।” (বাকারাহঃ ২৮২)
অর্থাৎ, তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না, বস্তুতঃ যে তা গোপন করে, নিশ্চয় তার অন্তর পাপময়। তোমরা জা কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত। (বাকারাহঃ ২৮২)
পক্ষান্তরে যারা হক ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য এবং বাতিল ও অন্যায় নিপাতনের জন্য সাক্ষ্য দিতে ডাকার আগেই সাক্ষ্য দিতে চায়, তারাই হল সর্বশ্রেষ্ঠ সাক্ষী। মহানবী (সঃ) বলেন, “তোমাদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ সাক্ষীর কথা বলে দেব না কি? যে চাওয়ার আগেই নিজের সাক্ষ্য নিয়ে উপস্থিত হয়।” (মুসলিম ১৭২০ নং)
কুরআন মজিদের ছেঁড়া পাতা পবিত্র জায়গায় দাফন করা উচিৎ। অথবা তা পুড়িয়ে তার ছাইও দাফন করা উচিৎ। যাতে আল্লাহর কালামে কোন প্রকার অমর্যাদা না হয়। কুরআন মজিদের পাতা পানিতে ফেলা উচিৎ নয়। কারণ তাতে অমর্যাদার আশঙ্কা আছে। আর নষ্ট হয়ে যাওয়া কুরআন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলাতে তার অমর্যাদা হয় না। এরূপ আমল সাহাবা কর্তৃক প্রমাণিত আছে। (লাজনাহে দায়েমাহ)
কুরআন মজিদ আল্লাহর কালাম, তা মুসলিমদের অত্যন্ত তা’যীমযোগ্য জিনিস। সুতরাং তাতে থুথু লাগানো বৈধ নয়। আমাদের কেউ যদি আঙ্গুলে থুথু লাগিয়ে অন্যের মুখে লাগিয়ে দেয়, তাহলে তাতে ঘৃণা প্রকাশ করতে দেখা যায়। অতএব এমন ঘৃণ্য আচরণ আল্লাহর কালামের সাথে করা আদৌ উচিৎ নয়।