ছবি ও মূর্তিতে যেহেতু পৌত্তলিকতা আছে, সেহেতু তা ঘরে ও রাস্তার মোড়ে স্থাপন করা বৈধ নয়। মূর্তি থেকেই পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম মূর্তিপূজা শুরু হয়েছে নূহ (আঃ) এর যুগে। তাই ইসলাম মূর্তি ও মূর্তিপূজার ঘোর বিরোধী। সে জন্যই শরিয়তের নির্দেশ হোল, “ কোন (বিচরণশীল প্রাণীর) ছবি বা মূর্তি দেখলেই তা নিশ্চিহ্নকরে দেবে এবং কোন উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দেবে।” (মুসলিম ৯৬৯ নং )
রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “ কিয়ামতের দিনে ছবি বা মূর্তি নির্মাতাদের সর্বাধিক কঠিন শাস্তি হবে” (বুখারি ৫৯৫০, মুসলিম ২১০৯) ।
সে ঘরে (রহমতের) ফিরিশতা প্রবেশ করেন না, যে ঘরে কুকুর থাকে এবং সে ঘরেও নয়, যে ঘরে ছবি ও মূর্তি থাকে। (বুখারি ও মুসলিম )
যে লেবাসে কোন (বিচরণশীল) প্রাণীর ছবি থাকে, সে লেবাস পরা মুসলিমের জন্য বৈধ নয়। কারণ ছবি ও মূর্তি ইসলামের চরম পরিপন্থী। (ইবনে উষাইমীন)
অনেকে বলেছেন, “ক্যামেরার ছবি নিষেধের পর্যায়ভুক্ত নয়।” কিন্তু নিষেধের কারণ বিশ্লেষণ করলেই তা অবৈধ মনে হয়। তবে পরিচয়পত্র ইত্যাদির প্রয়োজনে তা বৈধ।
অনেকে বলেছেন ভিডিওর ছবি গুপ্ত থাকে সময়ে দেখা যায় । সুতরাং তা আয়না ও পানির উপর প্রকাশিত ছবির মত । তা নিষেধের পর্যায়ভুক্ত নয়। বর্তমান যুগে সে ছবির প্রয়োজনীয়তা অধিকাংশ উলামা অস্বীকার করতে পারে না।
বাচ্চারা নিজে যে সব পুতুল কাপড় দিয়ে বানিয়ে খেলা করে, তা বৈধ হবার ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই। যেহেতু এই শ্রেণির পুতুল নিয়ে মা আয়েশা দাম্পত্যের প্রথম জীবনে নবী (সঃ) এর সামনে খেলা করতেন। কিন্তু যে খেলনা নিখুঁতভাবে মানুষের বা অন্য প্রাণীর আকার-আকৃতি দিয়ে তৈরি, যা কথা বলে, কান্না করে, আওয়াজ করে, হাঁটে বা নাচে, তা বৈধ কি না---তাতে সন্দেহ আছে। ( ইবনে ঊষাইমীন )
অনেক উলামার মতে যা শিশুদের খেলনা এবং যা অবজ্ঞা ও অবমাননার পুতুল বা ছবি, তা বৈধ। অনেকের মতে কাপড় বা তুলার পুতুল ছাড়া অন্য পুতুল অবৈধ। অবশ্য পূর্ব সতর্কতামূলক আমল হিসেবে তা শিশুদের জন্য ক্রয় না করাই উত্তম।
বিচরণশীল প্রাণীর ছবি আঁকা বৈধ নয়। যদি কেউ আঁকতে একানই বাধ্য হয়, তাহলে প্রাণীর মাথাটা আঁকবে না। ( ইবনে ঊষাইমীন )
ড্রেসের ডিজাইন আঁকতে মাথাহীন দেহের উপর ড্রেস আঁকতে পারা যায়। মাথাহীন স্ট্যাচুর দেহে পোশাক পরিয়ে তা শো করা যায়। কোন ছবি বা মূর্তির মাথা না থাকলে ক্ষতির আওতায় পড়ে না। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “মূর্তি বা ছবি হল মাথাটাই। সুতরাং মাথা কেটে দেওয়া হলে সে ছবি বা মূর্তিতে সমস্যা নেই।” (সিঃ সহীহাহ ১৯২১ নং )
এমন কারখানায় চাকরি বৈধ নয়। বৈধ নয় এমন শিল্প ও ছবি নির্মাতাদের উপার্জন। যেহেতু ইসলামে তা হারাম, তার ব্যবসা হারাম, তাতে কোন প্রকার সহযোগিতা করে চাকরি করা হারাম।
আল্লাহর রাসুল (সঃ) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উভয় সাক্ষদাতাকে অভিশাপ করেছেন। আর বলেছেন, “ পাপে ওরা সকলেই সমান।” ( মুসলিম ১৫৯৮ নং )
মদের ব্যপারে তিনি বলেছেন, ‘ মদ পানকারীকে, মদ পরিবেশনকারীকে, তার ক্রেতা ও বিক্রেতাকে, তার প্রস্তুতকারককে, যার জন্য প্রস্তুত করা হয় তাকে, তার বাহকে ও যার জন্য বহন করা হয় তাকে আল্লাহ অভিশাপ করেছেন।’ ( আবু দাউদ ৩৬৭৪, ইবনে মাজাহ ৩৩৮০ নং )
ইবনে মাজাহর বর্ণনায় আছে, ‘ তার মূল্য ভক্ষণকারীও ( অভিশপ্ত )’ ( সহিহুল জামে ৫০৯১ নং )
এ কাজ মূর্তি নির্মাণের সামিল নয় এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে টেক্কা দেওয়া ও নয়। তবে তাতে অযথা প্রাণী হত্যা ও অপচয় রয়েছে এবং তা গৃহে মূর্তিস্থাপনের চোরা পথ ও সূসদৃশ। তাই তা বৈধ নয়। ( লাজনাহ দায়েমাহ )