যে শ্রেণীর প্রচার জাহেলী যুগে ছিল। জাহেলী যুগে উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করা হত। ৪৬৮ (আলবানী) সুতরাং মাইকে ঘোষণা করা উক্ত শ্রেণীভুক্ত।
না। কেউ মারা গেলে ওয়াজেব হল বিধির বিধান মেনে নিয়ে শোক দমন করে ধৈর্যধারণ করা। স্বাভাবিকভাবে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে যাওয়াও দোষাবহ নয়। দোষাবহ হল মাতাম করে ইনিয়ে বিনিয়ে কান্না করা।
রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “লোকের মধ্যে দুটি এমন দোষ রয়েছে, যা আসলে কাফেরদের (আচরণ) বংশে খোটা এবং মৃত ব্যক্তির জন্য মাতাম করা।” ৪৬৯ (মুসলিম)
মহানবী (সঃ) বলেছেন, “মৃত ব্যক্তিকে তার কবরের মধ্যে তার জন্য মাতাম করে কান্না করার দরুন শাস্তি দেওয়া হয়।” ৪৭০ (বুখারী ও মুসলিম)
আবূ বুরদাহ বলেন, একদা (তার পিতা) আবূ মূসা আশআরী (রঃ) যন্ত্রণায় কাতর হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। আর (ঐ সময়) তার মাথা তার স্ত্রীর কলে রাখা ছিল এবং সে চিৎকার করে কান্না করতে লাগল। তিনি (অজ্ঞান থাকার কারণে) তাকে বাঁধা দিত পারলেন না। সুতরাং যখন তিনি চেতনা ফিরে পেলেন, তখন বলে উঠলেন, ‘আমি সেই মহিলা থেকে সম্পর্কমুক্ত, যে মহিলা থেকে আল্লাহ্র রাসুল (সঃ) সম্পর্কমুক্ত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্র রাসুল (সঃ) সেই মহিলার থেকে সম্পর্কমুক্ত হয়েছেন, যে শোকে উচ্চস্বরে মাতম করে কান্না করে, মাথা মুণ্ডন করে এবং কাপড় ছিঁড়ে ফেলে।’ ৪৭১ (বুখারী ও মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “ মাতামকারিনী মহিলা যদি মরনের পূর্বে তওবাহ না করে, তাহলে আল-কাতারের পায়জামা এবং পাঁচড়ার জামা পরিহিতা অবস্থায় তাকে কিয়ামতের দিনে দাঁড় করানো হবে।” ৪৭২ (মুসলিম)
না। জাবের (রঃ) বলেন, ‘নবী (সঃ) কবর পাকা করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে বারণ করেছেন।’আবূ দাঊদ ও নাসাঈ প্রভৃতির বর্ণনায় আছে, ‘তার উপর লেখাও নিষেধ করেছেন।’ ৪৭৪ (ইবনে বায)
না। কবরস্থানে ফুল, ফল বা অন্য কিছুর গাছ লাগালে প্রথমতঃ তা পার্কের মতো হয়ে যায়। ফলে আখেরাত স্মরনের জায়গায় দুনিয়ার সৌন্দর্য ও আকর্ষণই সৃষ্টি করে সেই উদ্যান-সদৃশ পরিবেশ। দ্বিতীয়তঃ তাতে খ্রিষ্টানদের [নাসারা] সাদৃশ্য অবলম্বন হয়। (ইবনে উসাইমীন)
কারোর জন্য শোক পালনে কালো কাপড় পড়া শরীয়তসম্মত নয়। স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর জন্যও তা বিধেয় নয়। আত্মীয় মারা গেলে মহিলারা তিনদিন পর্যন্ত শোক পালন করতে পারে। আর স্বামী মারা গেলে ৪ মাস ১০ দিন শোক পালন করা ওয়াজেব। অবশ্য গর্ভবতীর ইদ্দত প্রসবকাল পর্যন্ত। এই সময় কোনও সুগন্ধি, অলঙ্কার ও সৌন্দর্যময় পোশাক ব্যবহার করতে পারবে না। সাদা কাপড়ে সৌন্দর্য থাকলে তাও ব্যবহার করা বৈধ নয়।
বরকতময় তিনটি মসজিদ (অনুরূপ কুবার মসজিদ)ছাড়া বরকত ও সওয়াবের উদ্দেশ্যে অন্য কোন মসজিদ, মাযার বা ঐতিহাসিক স্থান যিয়ারত করার জন্য সফর নিষেধ। আল্লাহ্র রাসুল (সঃ) বলেছেন, “তিনটি মসজিদ ছাড়া সফর করা যাবে না, (মক্কার) মসজিদে হারাম, (মদিনার) আমার এই মসজিদ এবং (জেরুজালেমের) মসজিদে আকসা।” ৪৭৬ (বুখারী-মুসলিম)
সুতরাং যে ব্যক্তি মদিনা যাবে, তার কবরে নববীর যিয়ারত যেন উদ্দেশ্য না হয়। মসজিদে নববীর যিয়ারতের নিয়তে গিয়ে কবর কবর যিয়ারত করবেন। বৈধ নয় কোন আলী-আওলিয়ার কবর বা মাযার দূর থেকে যিয়ারত করতে আসা। অবশ্য তার সাথে যদি কোন অন্য অবৈধ আশা বা চাহিদা থাকে, তাহলে নীতি অনুযায়ী তা বিদআত বা শিরক হবে।
প্রথমতঃ ঐ হাদীস সহীহ নয়। দ্বিতীয়তঃ তাতে এ কথা নেই যে, তিনি মাটি দেওয়ার সময় ঐ আয়াত পড়েছিলেন। বরং তিনি কবরে লাশ রাখার সময় বলেছিলেন। সুতরাং তাতে অভিষ্ট দলীল নেই। ৪৭৮ (আহকামুল জানাইয, আলবানী ১৫৩ পৃঃ)
না। মসজিদের এরিয়ার ভিতরে কবর দেওয়া বৈধ নয়, বৈধ নয় কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করা। আল্লাহ্র রাসূল (সঃ) মৃত্যুশয্যায় বলে গেছেন, “আল্লাহ ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে অভিশাপ (ও ধ্বংস) করুন। কারণ তারা তাদের নবীগণের কবরসমূহকে মসজিদ (সিজদা ও নামাযের স্থান) বানিয়ে নিয়েছে।” ৪৭৯ (বুখারী, মুসলিম ৫২৯ নং, নাসাঈ)
‘সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়ো না। এরূপ করতে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি।’ ৪৮০ (মুসলিম ৫৩২ নং)
যেহেতু এ কাজ শিরকের ছিদ্রপথ, সেহেতু তাতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আর মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর এই যে, মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লহর সাথে তোমরা অন্য কাউকেও ডেকো না।” (জ্বিনঃ ১৮)
কোন নেক, বুযূর্গ বা ওলী-আওলিয়ার লাশ মসজিদে দাফন করা বৈধও নয়। যেহেতু তাতে তাঁদেরকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয় এবং তাদের কবর শিরকের অসীলায় পরিণত হয়। আর নবী (সঃ) বলেছেন, “ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের উপর আল্লাহ্র অভিশাপ, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” ৪৮১ (বুখারী ১৩৩০, মুসলিম ৫২৯ নং)
তিনি আর বলেছেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও নেক লোকেদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিত। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়ো না। এরূপ করতে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করেছি।” ৪৮২ (মুসলিম ৫৩২ নং)
তাছাড়া মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর এই যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ্রই জন্য। সুতরাং আল্লাহ্র সাথে তোমরা অন্য কাউকেও ডেকো না।” (জ্বিনঃ ১৮)
সুতরাং মসজিদ সর্বপ্রকার শিরকমুক্ত হয়ে কেবল আল্লাহ্র থাকা উচিৎ, তাতে অন্য কারো আহবান বা ইবাদত হওয়া আদৌ উচিৎ নয়। ৪৮৩( ইবনে উসাইমীন)
মহানবী (সঃ) কে মসজিদে দাফন করা হয়নি। আর নিষেধ এই জন্য করা হয় যে, “ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের উপর আল্লাহ্র অভিশাপ, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” ৪৮৪ (বুখারী ১৩৩০, মুসলিম ৫২৯ নং)
তিনি আর বলেছেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী তাদের নবী ও নেক লোকেদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিত। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়ো না। এরূপ করতে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি।” ৪৮৫ (মুসলিম ৫৩২ নং)
অনুরূপ তার কবরের উপর ঘর নির্মাণ করা হয়নি। বরং তার কবরই হয়েছিল তার ঘরের ভেতরে। যেহেতু নবীরা যেখানে ইন্তিকাল করেন, সেখানেই তাদের দাফন করা হয়। আর গম্বুজ বানিয়েছে পরবর্তী কালের শাসকেরা। কবরের উপর ঘর ও গম্বুজ বানাতে নিষেধ করা হয় এই জন্য যে, জাবের (রঃ) বলেন, “নবী (সঃ) কবর পাকা করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে মানা করেছেনে।” ৪৮৬ (মুসলিম)