একজন রাসূল, যে তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে; যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে যাতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোতে বের করে আনতে পারেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তিনি তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে; আল্লাহ তো তাকে অতি উত্তম রিয্ক দেবেন। আল-বায়ান
(তদুপরি তিনি পাঠিয়েছেন) একজন রসূল যে তোমাদের কাছে আল্লাহর স্পষ্ট আয়াত পাঠ করে, যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে গাঢ় অন্ধকার থেকে আলোতে আনার জন্য। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে আর সৎ কাজ করবে, তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে নির্ঝরিণী। তাতে তারা চিরকাল সর্বকাল থাকবে। আল্লাহ তার জন্য অতি উত্তম রিযকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তাইসিরুল
প্রেরণ করেছেন এমন এক রাসূল যে তোমাদের নিকট আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করে, যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনার জন্য। যে কেহ আল্লাহকে বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ তাকে উত্তম জীবনোপকরণ দিবেন। মুজিবুর রহমান
[He sent] a Messenger [Muhammad] reciting to you the distinct verses of Allah that He may bring out those who believe and do righteous deeds from darknesses into the light. And whoever believes in Allah and does righteousness - He will admit him into gardens beneath which rivers flow to abide therein forever. Allah will have perfected for him a provision. Sahih International
১১. এক রাসূল, যে তোমাদের কাছে আল্লাহ্র সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করে তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনার জন্য। আর যে কেউ আল্লাহর উপর ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তিনি তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ্ তো তাকে উত্তম রিযিক দেবেন।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১১) (প্রেরণ করেছেন) এমন এক রসূল,[1] যে তোমাদের নিকট আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করে, যাতে যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোকে বের করে আনে।[2] যে কেউ আল্লাহকে বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে,[3] তিনি তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ তাকে উত্তম রুযী দান করবেন।
[1] رَسُول শব্দটি ذِكْر শব্দের বদল বা তার পরিবর্ত স্বরূপ ব্যবহার হয়েছে। ‘মুবালাগা’ তথা আধিক্য বুঝানোর জন্য রসূলকে যিকর (উপদেশ) বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন عَدل মানে ন্যায়পরায়ণতার মূর্তপ্রতীক (তেমনি ذِكر মানে উপদেশের মূর্তপ্রতীক)। অথবা ذِكْر অর্থ কুরআন এবং رسولًا এর পূর্বে أَرسَلْنَا ক্রিয়াপদ ঊহ্য মেনে নিতে হবে। অর্থ দাঁড়াবে, অবতীর্ণ করেছেন উপদেশ (কুরআন) এবং প্রেরণ করেছেন এক রসূল।
[2] এখানে রসূলের মর্যাদা ও তাঁর দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে বলা হচ্ছে যে, তিনি কুরআনের মাধ্যমে নৈতিকতার অধঃপতন এবং শিরক ও ভ্রষ্টতার অন্ধকার থেকে বের করে ঈমান ও নেক আমলের জ্যোতির দিকে নিয়ে এসেছেন। আর রসূল বলতে এখানে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে বুঝানো হয়েছে।
[3] নেক আমলের মধ্যে দু’টি জিনিস শামিল থাকে। যথা, আদেশাবলী ও যাবতীয় ফরয কাজগুলো আদায় করা এবং সকল প্রকার অবাধ্যতা ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ, জান্নাতে কেবল সেই ঈমানদাররাই প্রবেশ করবেন, যাঁরা শুধুমাত্র মৌখিকভাবেই ঈমানের দাবী করেননি, বরং তাঁরা ঈমানের দাবীসমূহ অনুযায়ী ফরয কাজগুলো আদায় করেছেন এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থেকেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতিনি আল্লাহ, যিনি সাত আসমান এবং অনুরূপ যমীন সৃষ্টি করেছেন; এগুলির মাঝে তাঁর নির্দেশ অবতীর্ণ হয় যেন তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান এবং আল্লাহর জ্ঞানতো সব কিছুকে বেষ্টন করে আছে। আল-বায়ান
আল্লাহই সাত আসমান বানিয়েছেন আর ওগুলোর মত পৃথিবীও, সবগুলোর মাঝে (অর্থাৎ সকল আসমানে আর সকল যমীনে) নেমে আসে আল্লাহর নির্দেশ যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান আর আল্লাহ (স্বীয়) জ্ঞানে সব কিছুকে ঘিরে রেখেছেন। তাইসিরুল
আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণ। ওগুলির মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ; ফলে তোমরা বুঝতে পার যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সব কিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। মুজিবুর রহমান
It is Allah who has created seven heavens and of the earth, the like of them. [His] command descends among them so you may know that Allah is over all things competent and that Allah has encompassed all things in knowledge. Sahih International
১২. আসমান এবং অনুরূপ যমীন, তাদের মধ্যে নেমে আসে তার নির্দেশ; যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং জ্ঞানে আল্লাহ্ সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছেন।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১২) আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও অনুরূপ,[1] ওগুলোর মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ,[2] যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, অবশ্যই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। [3]
[1] أَيْ: خَلَقَ مِنَ الأَرْضِ مِثْلَهُنَّ সাত আসমানের ন্যায় সাত যমীনও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, সাতটি প্রদেশ। তবে এ কথা ঠিক নয়। বরং যেভাবে উপর্যুপরি সাতটি আসমান রয়েছে, অনুরূপ সাতটি যমীনও রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দূরত্ব ও ব্যবধানও আছে এবং প্রত্যেক যমীনে আল্লাহর সৃষ্টি আবাদ রয়েছে। (ক্বুরত্ববী) বহু হাদীস দ্বারা এ কথার সমর্থনও হয়। যেমন, নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি যুলুম করে বিঘত পরিমাণ যমীন আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’’ (মুসলিম, বাণিজ্য অধ্যায়, যুলুম করা হারাম পরিচ্ছেদ) সহীহ বুখারীর শব্দাবলী হল, (خُسِفَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرَضِينَ) ‘‘কিয়ামতের দিন তাকে সপ্ত যমীনের নীচ পর্যন্ত ধসিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারী, মাযালিম অধ্যায়, যমীন আত্মসাৎ করার পাপ পরিচ্ছেদ) কেউ কেউ এটাও বলেন যে, প্রত্যেক যমীনে ঐ রকমই পয়গম্বর রয়েছেন, যে রকম পয়গম্বর তোমাদের যমীনে এসেছেন। যেমন, আদমের মত আদম, নূহের মত নূহ। ইবরাহীমের মত ইবরাহীম। ঈসার মত ঈসা (আলাইহিমুস সালাম)। কিন্তু এ কথা কোন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
[2] যেভাবে, প্রত্যেক আসমানে আল্লাহর বিধান কার্যকরী ও বলবৎ আছে, অনুরূপ প্রত্যেক যমীনে তাঁর নির্দেশ চলে। সপ্ত আকাশের মত সপ্ত পৃথিবীর পরিচালনাও তিনিই করেন।
[3] অতএব কোন জিনিস তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়, চাহে তা যেমনই হোক না কেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান