কখনো নয়, নিশ্চয় পাপাচারীদের ‘আমলনামা সিজ্জীনে।* আল-বায়ান
(তারা যে সব ধারণা করছে তা) কক্ষনো না, নিশ্চয়ই পাপীদের ‘আমালনামা সিজ্জীনে (সংরক্ষিত) আছে। তাইসিরুল
না, না, কখনই না; পাপাচারীদের ‘আমলনামা নিশ্চয়ই সিজ্জীনে থাকে; মুজিবুর রহমান
No! Indeed, the record of the wicked is in sijjeen. Sahih International
*সপ্তযমীনের নীচে অবস্থিত একটি স্থান। পাপীদের আমলনামা সেখানে রাখা হয়।
৭. কখনো না, পাপাচারীদের আমলনামা তো সিজ্জীনে(১) আছে।
(১) سِجِّين শব্দটি سجن থেকে গৃহীত। سجن এর অর্থ সংকীর্ণ জায়গায় বন্দী করা। [ইবন কাসীর] আর سِجِّين এর অর্থ চিরস্থায়ী কয়েদ। [মুয়াস্সার] এটি একটি বিশেষ স্থানের নাম। যেখানে কাফেরদের রূহ অবস্থান করে। অথবা এখানেই তাদের আমলনামা থাকে। [জালালাইন]
তাফসীরে জাকারিয়া৭। না, কখনই না, পাপাচারীদের আমলনামা নিশ্চয়ই সিজ্জীনে থাকবে। [1]
[1] سجين (সিজ্জীন): কেউ কেউ বলেন, এর উৎপত্তি سجن শব্দ থেকে; যার মানে জেলখানা। উদ্দেশ্য হল, জেলখানার মত একটি অতি সংকীর্ণ জায়গা। আর কেউ কেউ বলেন, এটি ভূগর্ভের সব থেকে নিচের অংশে একটি জায়গার নাম; যেখানে কাফের, অত্যাচারী এবং মুশরিকদের আত্মা এবং তাদের আমল-নামা জমা ও সংরক্ষিত থাকে। এই জন্য তাকে ‘লিপিবদ্ধ পুস্তক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকিসে তোমাকে জানাবে ‘সিজ্জীন’ কী? আল-বায়ান
তুমি কি জান সিজ্জীন কী তাইসিরুল
সিজ্জীন কি তা কি তুমি জান? মুজিবুর রহমান
And what can make you know what is sijjeen? Sahih International
৮. আর কিসে আপনাকে জানাবে সিজ্জীন কী?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৮। কিসে তোমাকে জানাল, সিজ্জীন কি?
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানলিখিত কিতাব। আল-বায়ান
সীলমোহরকৃত কিতাব। তাইসিরুল
ওটা হচ্ছে লিখিত পুস্তক। মুজিবুর রহমান
It is [their destination recorded in] a register inscribed. Sahih International
৯. চিহ্নিত আমলনামা।(১)
(১) مَرْقُومٌ শব্দের কয়েকটি অর্থ আছে, লিখিত, চিহ্নিত এবং মোহরাঙ্কিত। [কুরতুবী] অর্থাৎ কিতাবটি লিখা শেষ হওয়ার পর তাতে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। ফলে তাতে হ্রাসবৃদ্ধি ঘটবে না। আর কিতাব বলতে, আমলনামা বোঝানো হয়েছে। ইবনে কাসীর বলেন, এটা সিজীনের তাফসীর নয়; বরং পূর্ববর্তী (كِتَابَ الْفُجَّارِ) এর বর্ণনা। অৰ্থ এই যে, কাফের ও পাপাচারীদের আমলনামা মোহর লাগিয়ে সংরক্ষিত করা হবে। ফলে এতে হ্রাস-বৃদ্ধি ও পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকবে না। এই সংরক্ষণের স্থান হবে সিজ্জীন৷ এর প্রমাণ আমরা বারা ইবনে আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বৰ্ণিত হাদীসে দেখতে পাই। সেখানে বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ্ কাফেরদের রূহ হরণ হওয়ার পর বলবেন, اكْتُبُوا كِتَابَهُ فِي سِجِّينٍ فِي الأَرْضِ السُّفْلَى “তার কিতাবকে সর্বনিম্ন যমীনে সিজ্জীনে লিখে রাখ”। [মুসনাদে আহমাদ ৪/২৮৭]
তাফসীরে জাকারিয়া৯। ওটা হচ্ছে লিপিবদ্ধ পুস্তক।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসেদিন ধ্বংস অস্বীকারকারীদের জন্য । আল-বায়ান
সেদিন দুর্ভোগ হবে অস্বীকারকারীদের, তাইসিরুল
সেদিন মন্দ পরিণাম হবে মিথ্যাচারীদের – মুজিবুর রহমান
Woe, that Day, to the deniers, Sahih International
১০. সেদিন দুর্ভোগ হবে মিথ্যারোপকারীদের,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১০। সেদিন দুর্ভোগ হবে মিথ্যাচারীদের।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযারা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করে। আল-বায়ান
যারা কর্মফল দিবসকে অস্বীকার করে। তাইসিরুল
যারা কর্মফল দিনকে অস্বীকার করে, মুজিবুর রহমান
Who deny the Day of Recompense. Sahih International
১১. যারা প্রতিদান দিবসে মিথ্যারোপ করে,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১১। যারা কর্মফল দিবসকে মিথ্যা মনে করে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর সকল সীমালঙ্ঘনকারী পাপাচারী ছাড়া কেউ তা অস্বীকার করে না। আল-বায়ান
কেবল সীমালঙ্ঘনকারী, পাপাচারী ছাড়া কেউই তা অস্বীকার করে না। তাইসিরুল
আর সীমা লংঘনকারী মহাপাপী ব্যতীত কেহই ওকে মিথ্যা বলতে পারেনা। মুজিবুর রহমান
And none deny it except every sinful transgressor. Sahih International
১২. আর শুধু প্ৰত্যেক পাপিষ্ঠ সীমালংঘনকারীই এতে মিথ্যারোপ করে;
-
তাফসীরে জাকারিয়া১২। আর সীমালংঘনকারী পাপিষ্ঠ ব্যতীত কেউই ওকে মিথ্যা মনে করে না।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযখন তার কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, ‘পূর্ববর্তীদের রূপকথা।’ আল-বায়ান
তার সামনে যখন আমার আয়াত পড়ে শোনানো হয়, তখন সে বলে, ‘এ তো প্রাচীন কালের লোকেদের কাহিনী’’। তাইসিরুল
তার নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হলে সে বলেঃ এটাতো পূরাকালীন কাহিনী। মুজিবুর রহমান
When Our verses are recited to him, he says, "Legends of the former peoples." Sahih International
১৩. যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, পূর্ববর্তীদের উপকথা।
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৩। তার নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হলে সে বলে, এটা তো পূর্বকালীন উপকথা! [1]
[1] অর্থাৎ, তাদের পাপকর্মে অবিচলতা ও সীমালংঘন এত বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে যে, আল্লাহর আয়াত শুনে তার নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার পরিবর্তে তাকে ‘পূর্বযুগের উপকথা’ বলে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকখনো নয়, বরং তারা যা অর্জন করত তা-ই তাদের অন্তরসমূহকে ঢেকে দিয়েছে। আল-বায়ান
কক্ষনো না, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের অন্তরে জং ধরিয়ে দিয়েছে। তাইসিরুল
না, এটা সত্য নয়, বরং তাদের কৃতকর্মের ফলেই তাদের মনের উপর মরিচা জমে গেছে। মুজিবুর রহমান
No! Rather, the stain has covered their hearts of that which they were earning. Sahih International
১৪. কখনো নয়; বরং তারা যা অর্জন করেছে তা-ই তাদের হৃদয়ে জঙ ধরিয়েছে।(১)
(১) ران শব্দটি رين থেকে উদ্ভূত। অর্থ প্রাধান্য বিস্তার করা। [কুরতুবী] ঢেকে ফেলা। [তাতিম্মাতু আদওয়াইল বায়ান] যাজ্জাজ বলেন, মরিচা ও ময়লা। [কুরতুবী] অর্থাৎ শাস্তি ও পুরস্কারকে গল্প বা উপকথা গণ্য করার কোন যুক্তিসংগত কারণ নেই। কিন্তু যে কারণে তারা একে গল্প বলছে তা হচ্ছে এই যে, এরা যেসব গোনাহে লিপ্ত রয়েছে তাদের অন্তরে মরিচা ধরেছে। মরিচা যেমন লোহাকে খেয়ে মাটিতে পরিণত করে দেয়, তেমনি তাদের পাপের মরিচা তাদের অন্তরের যোগ্যতা নিঃশেষ করে দিয়েছে। ফলে তারা ভাল ও মন্দের পার্থক্য বোঝে না। ফলে পুরোপুরি যুক্তিসংগত কথাও এদের কাছে গল্প বলে মন হচ্ছে। [ইবন কাসীর] এই জঙ্ ও মরীচার ব্যাখ্যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বান্দা যখন কোন গোনাহ করে, তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। সে তওবা করলে দাগটি উঠে যায়। কিন্তু যদি সে গোনাহ করে যেতেই থাকে তাহলে সমগ্র দিলের ওপর তা ছেয়ে যায়। [তিরমিযী: ৩৩৩৪ ইবনে মজাহঃ ৪২৪৪]
তাফসীরে জাকারিয়া১৪। না এটা সত্য নয়; [1] বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের হৃদয়ে জং ধরিয়ে দিয়েছে। [2]
[1] অর্থাৎ, এই কুরআন কোন কেচ্ছা-কাহিনী নয়; যেমন কাফেররা বলে থাকে। বরং এটা হল আল্লাহর বাণী এবং তাঁর প্রত্যাদেশ যা তদীয় রসূল (সাঃ)-এর উপর জিবরীল (আঃ) মারফৎ অবতীর্ণ করা হয়েছে।
[2] অর্থাৎ, তারা এই কুরআন এবং আল্লাহর অহীর প্রতি ঈমান এই জন্য আনে না যে, গোনাহ করার দরুন তাদের অন্তরে পর্দা পড়ে গেছে এবং জং ধরে গেছে। رين গোনাহর সেই কালিমাকে বলা হয়, যা একাধারে পাপাচরণ করার কারণে অন্তরে ছেয়ে যায়। হাদীসে এসেছে যে, বান্দাহ যখন পাপ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো বিন্দু পড়ে যায়। যদি সে পাপ থেকে তওবা করে, তাহলে সেই কালো বিন্দু পরিষ্কার হয়ে যায়। আর তওবার পরিবর্তে যদি পাপের পর পাপ করেই যায়, তাহলে সেই কালো বিন্দুটি আরো বৃহৎ আকার ধারণ করে। এমনকি তা তার গোটা অন্তরে ছেয়ে যায়। এটাই হল সেই ‘রাইন’ যার কথা কুরআন মাজীদে এসেছে। (তিরমিযী সূরা মুতাফফিফীনের তফসীর পরিচ্ছেদ, ইবনে মাজাহ যুহদ অধ্যায় গোনাহ প্রসঙ্গ পরিচ্ছেদ, মুসনাদে আহমাদ ২/২৯৪ )
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকখনো নয়, নিশ্চয় সেদিন তারা তাদের রব থেকে পর্দার আড়ালে থাকবে। আল-বায়ান
কক্ষনো না, তারা সেদিন তাদের প্রতিপালক থেকে পর্দার আড়ালে থাকবে। তাইসিরুল
না, অবশ্যই সেদিন তারা তাদের রবের সাক্ষাত হতে অন্তরীণ থাকবে; মুজিবুর রহমান
No! Indeed, from their Lord, that Day, they will be partitioned. Sahih International
১৫. কখনো নয়; নিশ্চয় সেদিন তারা তাদের রব হতে অন্তরিত থাকবে(১);
(১) অর্থাৎ কেয়ামতের দিন এই কাফেররা তাদের রবের দীদার বা দর্শন ও যেয়ারত থেকে বঞ্চিত থাকবে এবং পর্দার আড়ালে অবস্থান করবে। এই আয়াত থেকে জানা যায় যে, সেদিন মুমিনগণ আল্লাহ্ তা'আলার দীদার ও যেয়ারত লাভে ধন্য হবে। নতুবা কাফেরদেরকে পর্দার অন্তরালে রাখার কোন উপকারিতা নেই। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৫। কক্ষনো না, অবশ্যই তারা সেদিন তাদের প্রতিপালক (দর্শন) থেকে পর্দাবৃত থাকবে। [1]
[1] আর এর বিপরীত ঈমানদারগণ আল্লাহর দর্শন লাভ করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারপর নিশ্চয় তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। আল-বায়ান
অতঃপর তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে। তাইসিরুল
অনন্তর নিশ্চয়ই তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে; মুজিবুর রহমান
Then indeed, they will [enter and] burn in Hellfire. Sahih International
১৬. তারপর নিশ্চয় তারা জাহান্নামে দগ্ধ হবে;
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৬। অতঃপর নিশ্চয়ই তারা জাহীম (জাহান্নামে) প্রবেশ করবে;
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারপর বলা হবে, এটাই তা যা তোমরা অস্বীকার করতে। আল-বায়ান
অতঃপর বলা হবে ‘এটাই তা যা তোমরা অস্বীকার করতে।’ তাইসিরুল
অতঃপর বলা হবেঃ এটাই তা যা তোমরা অস্বীকার করতে। মুজিবুর রহমান
Then it will be said [to them], "This is what you used to deny." Sahih International
১৭. তারপর বলা হবে, এটাই তা যাতে তোমরা মিথ্যারোপ করতে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৭। তারপর বলা হবে, এটাই তা, যা তোমরা মিথ্যাজ্ঞান করতে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান