এটি নিকটতম যে, তারা সাক্ষ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করবে অথবা তারা (মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারীরা) ভয় করবে যে, তাদের (নিকটাত্মীয়দের) কসমের পর (পূর্বোক্ত) কসম প্রত্যাখ্যান করা হবে। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং শুন! আর আল্লাহ ফাসিক কওমকে হিদায়াত করেন না। আল-বায়ান
এ পন্থায় বেশি সম্ভাবনা আছে যে, লোকে ঠিকভাবে সাক্ষ্যদান করবে, কিংবা অন্ততঃপক্ষে তারা এ ভয় অবশ্যই করবে যে, তাদের কসম করার পর অপর কোন কসম দ্বারা তাদের প্রতিবাদ করা না হয়। আল্লাহকে ভয় কর আর শোন; আল্লাহ সত্য পরিত্যাগকারী সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। তাইসিরুল
এটাই এ বিষয়ে অতীব সহজ পন্থা যে, তারা ঘটনা যথাযথভাবে প্রকাশ করে দিবে, অথবা এই ভয় করবে যে, তাদের শপথ গ্রহণ করার পর (পুনঃ) শপথ করানো হবে; আল্লাহকে ভয় কর এবং (বিধানসমূহ) শ্রবণ কর, আর আল্লাহ ফাসিকদেরকে পথ দেখাবেননা। মুজিবুর রহমান
That is more likely that they will give testimony according to its [true] objective, or [at least] they would fear that [other] oaths might be taken after their oaths. And fear Allah and listen; and Allah does not guide the defiantly disobedient people. Sahih International
১০৮. এ পদ্ধতিই(১) বেশী নিকটতর যে, তারা সাক্ষ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করবে অথবা তারা (মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারীরা) ভয় করবে যে, তাদের (নিকটাত্মীয়দের) শপথের পর (পূর্বোক্ত) শপথ প্রত্যাখ্যান করা হবে। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং শুন(২); আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।
(১) অর্থাৎ সন্দেহের সময় সাক্ষীদেরকে সালাতের পরে শপথ করানো এবং তাদের মধ্যে শপথ ভঙ্গের সম্ভাবনা প্রাপ্ত হলে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ না করাটা হচ্ছে সঠিকভাবে সাক্ষ্য উপস্থাপনে লোকদের বাধ্য করার সবচেয়ে সুন্দর পদ্ধতি। হয় তারা আখেরাতের শাস্তির ভয়ে সঠিক সাক্ষ্য দিবে, না হয় দুনিয়ায় মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়দের পাল্টা শপথের মাধ্যমে তাদের সাক্ষ্যের অগ্রহণযোগ্যতা প্রকাশিত হওয়ার মত অপমানের ভয়ে তারা সঠিক সাক্ষ্য প্রদানে উদ্বুদ্ধ হবে। [মুয়াসসার]
(২) অর্থাৎ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করো না। তোমাদের মিথ্যা সাক্ষীর মাধ্যমে কোন হারাম সম্পদ কুক্ষিগত করো না। আর তোমাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হচ্ছে তা ভালভাবে শোন এবং সেটা অনুযায়ী আমল কর। [মুয়াসসার]
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৮) এ পদ্ধতিতেই লোকের যথাযথ সাক্ষ্যদানের অধিকতর সম্ভাবনা আছে অথবা তারা ভয় করবে যে, শপথের পর আবার তাদেরকে শপথ করানো হবে।[1] আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং শ্রবণ কর। অধিকন্তু আল্লাহ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
[1] এখানে সেই উপকারিতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা উক্ত নির্দেশে নিহিত আছে। আর তা এই যে, উক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করার ফলে যাদেরকে অসিয়ত করা হয়েছে তারা সঠিক সঠিক সাক্ষী দেবে। কেননা, তাদের এই আশঙ্কা হবে যে, যদি আমরা খেয়ানত করি অথবা মিথ্যা বলি, অথবা পরিবর্তন করি, তাহলে এর প্রতিক্রিয়া তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্বন্ধে বুদাইল বিন আবী মারয়্যামের ঘটনা উল্লেখ করা হয়। তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম সফরে ছিলেন এবং সেখানে অসুস্থ তথা মরণোন্মুখ হয়ে পড়েন। তাঁর সাথে মাল-পত্র ও চাঁদির একটি পিয়ালা ছিল; যা তিনি দুজন খ্রিষ্টানকে সমর্পণ করে নিজ আত্মীয়দের নিকট পৌঁছে দেওয়ার অসিয়ত করেন। অতঃপর তিনি মারা যান। উক্ত অসী দুইজন চাঁদির পিয়ালা বিক্রি করে অর্থ ভাগ করে নেয় এবং ফিরে এসে বাকী মাল-পত্র তাঁর ওয়ারেসদেরকে প্রত্যর্পণ করে। ঐ মাল-পত্রে একটি চিঠিও ছিল; যাতে মাল-পত্রের একটি তালিকাও ছিল। যার ভিত্তিতে চাঁদির পিয়ালা বিদ্যমান ছিল না। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা মিথ্যা কসম খেয়ে তা আত্মসাৎ না করার কথা বলল। কিন্তু পরে জানা গেল যে, তারা ঐ পিয়ালা অমুক মুদ্রা-ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছে। সুতরাং তাঁর ওয়ারেসরা ঐ অমুসলিমদের বিরুদ্ধে কসম খেয়ে ঐ পিয়ালার মূল্য আদায় করে নিল। এ বর্ণনা সনদের দিক থেকে যয়ীফ। (তিরমিযী ৩০৫৯নং) কিন্তু অন্য সনদ দ্বারা ইবনে আববাস (রাঃ) কর্তৃকও সংক্ষিপ্তাকারে উক্ত ঘটনা বর্ণিত আছে। যাকে আল্লামা আলবানী সহীহ বলেছেন। (সহীহ তিরমিযী ২৪৪৯নং)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান