৫৫ সূরাঃ আর-রাহমান | Ar-Rahman | سورة الرحمن - আয়াতঃ ২৭
৫৫:২৭ وَّ یَبۡقٰی وَجۡهُ رَبِّكَ ذُو الۡجَلٰلِ وَ الۡاِكۡرَامِ ﴿ۚ۲۷﴾
و یبقی وجه ربك ذو الجلل و الاكرام ﴿۲۷﴾

আর থেকে যাবে শুধু মহামহিম ও মহানুভব তোমার রবের চেহারা*। আল-বায়ান

কিন্তু চিরস্থায়ী তোমার প্রতিপালকের চেহারা (সত্তা)- যিনি মহীয়ান, গরীয়ান, তাইসিরুল

অবিনশ্বর শুধু তোমার রবের মুখমণ্ডল যিনি মহিমাময়, মহানুভব। মুজিবুর রহমান

And there will remain the Face of your Lord, Owner of Majesty and Honor. Sahih International

*চেহারা বলতে কোন কোন তাফসীরকার আল্লাহর সত্তাকে বুঝিয়েছেন।

২৭. আর অবিনশ্বর শুধু আপনার রবের চেহারা(১), যিনি মহিমাময়, মহানুভব(২);

(১) এখানে وجه শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যা দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালার চেহারার সাথে সাথে তাঁর সত্তাকেও বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তিনি অবিনশ্বর। তাঁর চেহারাও অবিনশ্বর। তিনি ব্যতীত আর যা কিছু রয়েছে সবই ধ্বংসশীল। এগুলোর মধ্যে চিরস্থায়ী হওয়ার যোগ্যতাই নেই। আরেক অর্থ এরূপ হতে পারে যে, কিয়ামতের দিন এগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। কোন তফসীরবিদ (وَجْهُ رَبِّكَ) এর তফসীর এরূপ করেছেন যে, সমগ্র সৃষ্ট জগতের মধ্যে একমাত্র সেই বস্তুই স্থায়ী; যা আল্লাহ তা'আলার দিকে আছে। এতে শামিল আছে আল্লাহ তা'আলার সত্তা এবং মানুষের সেইসব কর্ম ও অবস্থা; যা আল্লাহ তা'আলার সাথে সম্পর্কযুক্ত। [দেখুন: কুরতুবী]

এর সারমর্ম এই যে, মানব, জিন ও ফেরেশতা যে কাজ আল্লাহর জন্যে করে, সেই কাজও চিরস্থায়ী, অক্ষয়। তা কোন সময় ধ্বংস হবে না। পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াত থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়েছে, (مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللَّهِ بَاقٍ) [সূরা আন-নাহল: ৯৬] অর্থাৎ তোমাদের কাছে যা কিছু অর্থ সম্পদ শক্তি-সামৰ্থ্য, সুখ-কষ্ট ভালবাসা ও শক্ৰতা আছে, সব নিঃশেষ হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে আল্লাহর কাছে যা কিছু আছে, তা অবশিষ্ট থাকবে। আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত মানুষের যেসব কর্ম ও অবস্থা আছে, সেগুলো ধ্বংস হবে না।

(২) অর্থাৎ সেই রব মহিমামণ্ডিত এবং মহানুভবও। মহানুভব হওয়ার এক অর্থ যে, প্রকৃতপক্ষে সম্মান বলতে যা কিছু আছে, এ সবেরই যোগ্য একমাত্র তিনিই। আরেক অর্থ এই যে, তিনি মহিমাময় হওয়া সত্বেও দুনিয়ার রাজা-বাদশাহ ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের মত নন। [দেখুন, ইবন কাসীর] পরবর্তী আয়াত এই দ্বিতীয় অর্থের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। আয়াতে বর্ণিত (ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ) বাক্যটি আল্লাহ তা'আলার বিশেষ গুণাবলীর অন্যতম। এই শব্দগুলো উল্লেখ করে দোআ করার জন্য রাসূলের হাদীসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “তোমরা “ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম” বলে দো'আ করো।” [তিরমিযী: ৩৫২৫]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৭) অবিনশ্বর শুধু তোমার মহিমময়, মহানুভব প্রতিপালকের মুখমন্ডল (সত্তা)।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান