আর তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণলতা নাও এবং তা দিয়ে আঘাত কর। আর কসম ভংগ করো না। নিশ্চয় আমি তাকে ধৈর্যশীল পেয়েছি। সে কতই না উত্তম বান্দা! নিশ্চয়ই সে ছিল আমার অভিমুখী। আল-বায়ান
(আমি তাকে বললাম) কিছু ঘাস লও আর তা দিয়ে আঘাত কর, (আর তোমার স্ত্রীকে একশত বেত্রাঘাত করার শপথ) ভঙ্গ করো না। আমি তাকে পেয়েছিলাম পূর্ণ ধৈর্যশীল, কতই না উত্তম বান্দাহ, প্রকৃতই (আল্লাহ) অভিমুখী। তাইসিরুল
আমি তাকে আদেশ করলামঃ এক মুষ্টি তৃণ তুলে নাও এবং তা দ্বারা আঘাত কর ও শপথ ভঙ্গ করনা। আমি তাকে পেলাম ধৈর্যশীল। কত উত্তম বান্দা সে! সে ছিল আমার অভিমুখী। মুজিবুর রহমান
[We said], "And take in your hand a bunch [of grass] and strike with it and do not break your oath." Indeed, We found him patient, an excellent servant. Indeed, he was one repeatedly turning back [to Allah]. Sahih International
৪৪. আর (আমি তাকে আদেশ করলাম) একমুঠ ঘাস নিন এবং তা দ্বারা আঘাত করুন এবং শপথ ভঙ্গ করবেন না। নিশ্চয় আমরা তাকে পেয়েছি ধৈর্যশীল।(১) কতই উত্তম বান্দা তিনি ! নিশ্চয় তিনি ছিলেন আমার অভিমুখী।
(১) ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত যে, আইয়ুব আলাইহিস সালামের অসুস্থতার সময় একদা শয়তান চিকিৎসকের বেশে আইয়ুব আলাইহিস সালামের পত্নীর সাথে সাক্ষাত করেছিল। তিনি ওকে চিকিৎসক মনে করে স্বামীর চিকিৎসা করতে অনুরোধ করেন। শয়তান বলল, এই শর্তে চিকিৎসা করতে পারি যে, আরোগ্য লাভ করলে একথার স্বীকৃতি দিতে হবে যে, আমিই তাকে আরোগ্য দান করেছি। এ স্বীকৃতিটুকু ছাড়া আমি আর কোন পারিশ্রমিক চাই না। স্ত্রী আইয়ুবকে একথা বললে, তিনি বললেন -তোমার সরলতা দেখে সত্যই দুঃখ হয়। ওতো শয়তান ছিল। এ ঘটনার বিশেষতঃ তার স্ত্রীর মুখ দিয়ে শয়তান কর্তৃক এমন একটা প্রস্তাব তার সামনে উচ্চারিত করানোর বিষয়টা তিনি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারলেন না। তিনি খুব দুঃখ পেলেন। কারণ, প্রস্তাবটা ছিল শেরেকীতে লিপ্ত করার একটা সূক্ষ্ম অপপ্রয়াস।
তাই তিনি শপথ করে বসলেন যে, আল্লাহ তাআলা আমাকে সুস্থ করে তুললে স্ত্রীর এ অপরাধের জন্য তাকে একশত বেত্ৰাঘাত করব। সে ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেই আল্লাহ পাক নির্দেশ দিচ্ছেন, শপথ ভঙ্গ করো না, বরং হাতে এক মুঠো তৃণশলাকা নিয়ে তদ্বারা স্ত্রীকে একশত বেত্ৰাঘাত করে শপথ পূর্ণ করা। তবে কোন অসমীচীন কাজের প্রতিজ্ঞা করলে তা ভেঙ্গে কাফফারা আদায় করাই শরীআতের বিধান। এক হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন প্ৰতিজ্ঞা করে, অতঃপর দেখে যে, এ প্রতিজ্ঞার বিপরীত কাজ করাই উত্তম, তবে তার উচিত উত্তম কাজটি করা এবং প্রতিজ্ঞার কাফফারা আদায় করা। [মুসলিম: ১৬৫০]
তাফসীরে জাকারিয়া(৪৪) আমি তাকে আদেশ করলাম, ‘এক মুষ্ঠি ঘাস নাও এবং তা দিয়ে আঘাত কর, আর শপথ ভঙ্গ করো না।’[1] নিশ্চয় আমি তাকে পেলাম ধৈর্যশীল। কত উত্তম দাস সে! নিশ্চয় সে ছিল আল্লাহ-অভিমুখী।
[1] অসুস্থ অবস্থায় আইয়ুব (আঃ) তাঁর শুশ্রূষাকারিণী পত্নীর প্রতি কোন কারণে অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে একশত বেত্রাঘাত করার শপথ করে ফেলেছিলেন। রোগমুক্ত হওয়ার পর আল্লাহ তাআলা তাঁকে নির্দেশ দিলেন যে, একশত ঘাসের গোছা বা ঝাঁটা (অথবা একশত ছড়াবিশিষ্ট খেজুর-কাঁদি) নিয়ে তাকে একবার আঘাত কর, তাহলেই তোমার কসম পূর্ণ হয়ে যাবে। উক্ত বিষয়ে উলামাগণের মাঝে মতভেদ রয়েছে যে, এই সুবিধা শুধু আইয়ুব (আঃ)-এর জন্য, না অন্য কেউ একশত বেত্রাঘাতের পরিবর্তে একশত কাঠির ঝাঁটা মেরে কসম ভঙ্গ করা থেকে বাঁচতে পারবে। কেউ কেউ প্রথম মতকে বেছে নিয়েছেন। আর কেউ কেউ বলেন যে, যদি কসমকারীর নিয়ত কঠিনভাবে মারার না হয়, তবে অনুরূপ আমল করা যাবে। (ফাতহুল ক্বাদীর) একটি হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, ‘‘নবী (সাঃ) একজন ওজর-ওয়ালা দুর্বল ব্যভিচারীকে একশত বেত্রাঘাতের পরিবর্তে একশত কাঠির ঝাঁটা দ্বারা মেরে শাস্তি দিয়েছিলেন। (আহমাদ, ইবনে মাজাহ) এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বিশেষ অবস্থাতে এরূপ করা বৈধ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান