সেদিন কতক চেহারা সাদা হবে এবং কতক চেহারা হবে কালো। আর যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা আযাব আস্বাদন কর। কারণ তোমরা কুফরী করতে’। আল-বায়ান
সে দিন কতক মুখ উজ্জ্বল হবে আর কতক মুখ কালো হবে, যাদের মুখ কালো হবে, (তাদেরকে বলা হবে), তোমরা কি ঈমান আনার পরও কুফরী করেছিলে? কাজেই নিজেদের কুফরীর জন্য শাস্তি ভোগ করতে থাক। তাইসিরুল
সেদিন কতগুলি মুখমণ্ডল হবে শ্বেতবর্ণ এবং কতক মুখমণ্ডল হবে কৃষ্ণবর্ণ; অতঃপর যাদের মুখমণ্ডল কৃষ্ণবর্ণ হবে, (তাদেরকে বলা হবে) তাহলে কি তোমরা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছ? অতএব তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর, যেহেতু তোমরা অবিশ্বাস করেছিলে। মুজিবুর রহমান
On the Day [some] faces will turn white and [some] faces will turn black. As for those whose faces turn black, [to them it will be said], "Did you disbelieve after your belief? Then taste the punishment for what you used to reject." Sahih International
১০৬. সেদিন কিছু মুখ উজ্জল হবে এবং কিছু মুখ কালো হবে(১) যাদের মুখ কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে), ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে(২)? সুতরাং তোমরা শাস্তি ভোগ কর, যেহেতু তোমরা কুফরী করতে।
(১) উজ্জ্বল মুখ ও কালো মুখ কারা, এ সম্পর্কে তাফসীরবিদগণের বিভিন্ন উক্তি বর্ণিত আছে। ইবনে-আব্বাস বলেনঃ আহলে সুন্নাত সম্প্রদায়ের মুখমণ্ডল শুভ্র হবে এবং বিদ'আতীদের মুখমণ্ডল কালো হবে। আতা বলেনঃ মুহাজির ও আনসারগণের মুখমণ্ডল সাদা হবে এবং বণী-নদ্বীরের মুখমণ্ডল কালো হবে। ইকরিমাহ বলেনঃ আহলে কিতাবগণের এক অংশের মুখমণ্ডল কালো হবে অর্থাৎ যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত লাভের পূর্বে তিনি নবী হবেন বলে বিশ্বাস করতো কিন্তু নবুওয়ত প্রাপ্তির পর তাকে সাহায্য ও সমর্থন করার পরিবর্তে তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে শুরু করে। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘খারেজী সম্প্রদায়ের মুখমণ্ডল কালো হবে। আর যারা তাদের হত্যা করবে, তাদের মুখমণ্ডল সাদা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এটি যদি আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাতবার না শুনতাম, তবে বর্ণনাই করতাম না। [তিরমিযী: ৩০০০]
(২) তাদের চেহারা কেন কালো হবে, তার কারণ বর্ণনায় এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তাদের চেহারা কালো হবার কারণ হচ্ছে, “তারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে”। অন্য আয়াতে আল্লাহর উপর মিথ্যাচার করাকেই চেহারা কালো হওয়ার কারণ বলা হয়েছে, “আর যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, আপনি কিয়ামতের দিন তাদের চেহারাসমূহ কালো দেখবেন। অহংকারীদের আবাসস্থল কি জাহান্নাম নয়?” [সূরা আয-যুমার: ৬০] আবার কোন কোন আয়াতে গোনাহ অর্জন করার কারণে তাদের চেহারা কালো হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। “আর যারা মন্দ কাজ করে তাদের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ এবং তাদেরকে হীনতা আচ্ছন্ন করবে; আল্লাহ থেকে তাদের রক্ষা করার কেউ নেই; তাদের মুখমন্ডল যেন রাতের অন্ধকারের আস্তরণে আচ্ছাদিত। তারা আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।” [সূরা ইউনুস: ২৭] কোন কোন আয়াতে কুফর ও অপরাধী হওয়াকেই চেহারা কালো হবার কারণ হিসেবে ধরা হয়েছে, “আর অনেক চেহারা সেদিন হবে ধূলিধূসর, সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে কালিমা। এরাই কাফির ও পাপাচারী।” [সূরা আবাসাঃ ৪০-৪১]। বস্তুত: এগুলোতে কোন বিরোধ নেই। কারণ, এ সব কারণেই চেহারা কালো হবে। কাফেরদের চেহারা কালো হবেই।
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৬) সেদিন কতকগুলো মুখমন্ডল সাদা (উজ্জ্বল) হবে এবং কতকগুলো মুখমন্ডল কালো হবে।[1] যাদের মুখমন্ডল কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে), বিশ্বাসের পর কি তোমরা অবিশ্বাস করেছিলে? সুতরাং তোমরা অবিশ্বাস করার পরিণামে শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর।
[1] ইবনে আববাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এ থেকে আহলে-সুন্নাত এবং আহলে-বিদআতকে বুঝিয়েছেন। (ইবনে কাসীর ও ফাতহুল ক্বাদীর) (অর্থাৎ, কিয়ামতে সুন্নাহর অনুসারীদের চেহারা উজ্জ্বল হবে এবং বিদআতীদের চেহারা কালো হবে।) আর এ থেকে এ কথাও পরিষ্কার হয়ে গেলো যে, ইসলাম হল ওটাই, যার উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে আহলে-সুন্নাত। আহলে-বিদআত এই নিয়ামত থেকে বঞ্চিত। অথচ এটাই হল মুক্তির একমাত্র পথ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান