সূরাঃ আলে-ইমরান | Al-i-Imran | سورة آل عمران - আয়াতঃ ৯০
৩:৯০ اِنَّ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا بَعۡدَ اِیۡمَانِهِمۡ ثُمَّ ازۡدَادُوۡا كُفۡرًا لَّنۡ تُقۡبَلَ تَوۡبَتُهُمۡ ۚ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الضَّآلُّوۡنَ ﴿۹۰﴾
ان الذین كفروا بعد ایمانهم ثم ازدادوا كفرا لن تقبل توبتهم و اولٓئك هم الضآلون ﴿۹۰﴾

নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে ঈমান আনার পর, তারপর তারা কুফরীতে বেড়ে গিয়েছে, তাদের তাওবা কখনো কবুল করা হবে না। আর তারাই পথভ্রষ্ট। আল-বায়ান

নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনার পর কুফরী করল, অতঃপর তাদের কুফরী বেড়েই চলল, তাদের তাওবাহ কক্ষনো কবুল করা হবে না এবং এ লোকেরাই পথভ্রষ্ট। তাইসিরুল

নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছে, অতঃপর অবিশ্বাস পরিবর্ধিত করেছে - তাদের ক্ষমা প্রার্থনা কখনই গৃহীত হবেনা এবং তারাই পথভ্রান্ত। মুজিবুর রহমান

Indeed, those who reject the message after their belief and then increase in disbelief - never will their [claimed] repentance be accepted, and they are the ones astray. Sahih International

৯০. নিশ্চয় যারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে তারপর তারা কুফরীতে বেড়ে গিয়েছে তাদের তওবা কখনো কবুল করা হবে না। আর তারাই পথ ভ্ৰষ্ট।(১)

(১) কাতাদা বলেন, তারা হচ্ছে আল্লাহর দুশমন ইয়াহুদী সম্প্রদায়। তারা ইঞ্জল ও ঈসা আলাইহিস সালামের সাথে কুফরী করেছে। তারপর তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও কুরআনের সাথে কুফরী করছে। [তাবারী] সুতরাং তাদের জন্যই অপেক্ষা করছে ভয়াবহ পরিণতি। তাদের তাওবাহ কবুল হওয়ার নয়। আবুল আলীয়া বলেন, তাদের তাওবাহ কবুল না হওয়ার কারণ হচ্ছে, তারা কোন কোন গোনাহ হতে তাওবাহ করলেও মূল গোনাহ (কুফরী) থেকে তাওবাহ করে না। সুতরাং তাদের তাওবাহ কিভাবে কবুল হবে? [ইবন আবী হাতেম]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৯০) নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করার পর অবিশ্বাস করে[1] এবং যাদের অবিশ্বাস-প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাদের তওবা কখনো মঞ্জুর করা হয় না। [2] এরাই তো পথভ্রষ্ট।

[1] এই আয়াতে তাদের শাস্তির কথা বলা হচ্ছে, যারা মুরতাদ হওয়ার পর তাওবা করার তাওফীক লাভ থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং কুফরীর উপরেই যাদের মৃত্যু হয়েছে।

[2] এটা হল সেই তওবা যা মৃত্যুর সময়ে করা হয়। তাছাড়া তওবার দরজা তো সবার জন্য সব সময়ের জন্য খোলা। এর পূর্বের আয়াতেও তওবা কবুল হওয়ার প্রমাণ রয়েছে। এ ছাড়াও কুরআনে মহান আল্লাহ বারবার তওবার গুরুত্ব এবং তা কবুল করার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, [أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ] অর্থাৎ, তারা কি এটা অবগত নয় যে, আল্লাহই নিজ বান্দাদের তওবা কবুল করে থাকেন এবং তিনিই দান-খয়রাত গ্রহণ করেন, আর আল্লাহ হচ্ছেন তওবা কবুলকারী ও পরম করুণাময়? (সূরা তওবা ১০৪ আয়াত) [وَهُوَ الَّذِي يَقْبَلُ التَّوبَةَ عَنْ عِبَادِهِ ] অর্থাৎ, তিনি তাঁর দাসদের তওবা গ্রহণ করেন এবং পাপ মোচন করেন এবং তোমরা যা কর তিনি তা জানেন। (সূরা শূরা ২৫ আয়াত) হাদীসসমূহে তওবা কবুল হওয়ার কথা বড়ই গুরুত্বের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কাজেই এই আয়াতে যে তওবার কথা বলা হয়েছে, তা হল একেবারে শেষ মুহূর্তের তওবা, যা কবুল হবে না। যেমন, কুরআনের অন্য এক স্থানে বলা হয়েছে,

[وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّى إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ] {النساء: 18} ‘‘আর এমন লোকদের জন্য কোন তওবা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো নিকট মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়ে যায়, তখন বলে, আমি এখন তওবা করছি।’’ হাদীসেও আছে যে, ‘‘অবশ্যই আল্লাহ বান্দার তওবা মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত কবুল করে থাকেন।’’ (মুসনাদ আহমাদ-তিরমিযী) অর্থাৎ, জাকান্দানীর সময়ের তওবা কবুল হয় না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান