সূরাঃ আলে-ইমরান | Al-i-Imran | سورة آل عمران - আয়াতঃ ৭৪
৩:৭৪ یَّخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهٖ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰهُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۷۴﴾
یختص برحمتهٖ من یشآء و الله ذو الفضل العظیم ﴿۷۴﴾

তিনি যাকে চান, তাঁর রহমত দ্বারা একান্ত করে নেন। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহের অধিকারী। আল-বায়ান

তিনি যাকে ইচ্ছে নিজের দয়ার জন্য খাস করে বেছে নেন এবং আল্লাহ মহা কল্যাণের অধিকারী। তাইসিরুল

তিনি যার প্রতি ইচ্ছা করেন স্বীয় করুনা নির্দিষ্ট করেন এবং আল্লাহ মহান, অনুগ্রহশীল। মুজিবুর রহমান

He selects for His mercy whom He wills. And Allah is the possessor of great bounty. Sahih International

৭৪. তিনি স্বীয় অনুগ্রহের জন্য যাকে ইচ্ছে একান্ত করে বেছে নেন(১)। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।

(১) অনুগ্রহ বলতে যাবতীয় অনুগ্রহই উদ্দেশ্য হতে পারে। তবে তাফসীরবিদ মুজাহিদের মতে, এখানে অনুগ্রহ বলে নবুওয়াত বোঝানো হয়েছে। কারণ, পূর্বের আয়াতে এ কারণেই ইয়াহুদীরা হিংসা করে ঈমান আনতে বিরত থাকছে বলে জানানো হয়েছে। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৭৪) যাকে ইচ্ছা তিনি নিজ করুণা দ্বারা নির্বাচিত করেন। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।’ [1]

[1] এই আয়াতের দু’টি অর্থ করা হয়। একটি হল, ইয়াহুদীদের বড় বড় পন্ডিতরা যখন তাদের শিষ্যদেরকে শিখাত যে, তোমরা সকালে মুসলিম হয়ে আবার সন্ধ্যায় কাফের হয়ে যেও, যাতে যারা সত্যিকারে মুসলিম হয়ে গেছে, তারাও সন্দিহানে পড়ে ইসলাম থেকে ফিরে যায়, তখন সেই শিষ্যদেরকে অতিরিক্ত তাকীদ এও করত যে, সাবধান! তোমরা কেবল বাহ্যিক মুসলিম হয়ো; সত্যিকারের নয়। বরং সত্যিকারে তোমরা ইয়াহুদীই থাকবে এবং কখনোও এ কথা মনে করো না যে, যে অহী ও শরীয়ত এবং যে জ্ঞান ও মর্যাদা তোমরা লাভ করেছ, তা অন্য কেউ লাভ করতে পারে অথবা তোমরা ব্যতীত অন্য কেউ সত্যের উপর আছে, যে তোমাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে হুজ্জত কায়েম করে তোমাদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে পারবে। এই অর্থের দিক দিয়ে মাঝে স্বতন্ত্র বাক্যটি ছাড়া عِنْدَ رَبِّكُمْ পর্যন্ত সম্পূর্ণটাই ইয়াহুদীদের কথা। দ্বিতীয় অর্থ হল, হে ইয়াহুদ সম্প্রদায়! তোমরা সত্যকে দাবানো ও মিটানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছ এবং যেসব চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছ, তা কেবল এই জন্যই যে, প্রথমতঃ এ ব্যাপারে তোমরা দুঃখ ও হিংসা-জ্বালায় ভুগছ যে, যে জ্ঞান ও মর্যাদা, অহী ও শরীয়ত এবং যে দ্বীন তোমাদেরকে দেওয়া হয়েছিল, তদ্রূপ জ্ঞান ও মর্যাদা এবং দ্বীন অন্যদেরকে কেন দেওয়া হল? দ্বিতীয়তঃ তোমরা আশঙ্কা কর যে, সত্যের এই দাওয়াত যদি অগ্রগতি লাভ করে এবং তার শিকড় যদি মজবুত হয়ে যায়, তাহলে শুধু যে দুনিয়া থেকে তোমাদের মান-মর্যাদা চলে যাবে তা নয়, বরং যে সত্যকে তোমরা গোপন করে রেখেছ, তাও মানুষের কাছে প্রকাশ হয়ে যাবে। আর এ কারণেই মানুষ আল্লাহর কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে হুজ্জত খাড়া করবে। অথচ তোমাদের জানা উচিত যে, দ্বীন ও শরীয়ত হল আল্লাহর অনুগ্রহ। এটা কারো উত্তরাধিকার সূত্রে লব্ধ জিনিস নয়, বরং তিনি তাঁর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা দান করেন এবং এ অনুগ্রহ কাকে দেওয়া উচিত তাও তিনিই জানেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান