৩০ সূরাঃ আর-রুম | Ar-Rum | سورة الروم - আয়াতঃ ৫৫
৩০:৫৫ وَ یَوۡمَ تَقُوۡمُ السَّاعَۃُ یُقۡسِمُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ۬ۙ مَا لَبِثُوۡا غَیۡرَ سَاعَۃٍ ؕ كَذٰلِكَ كَانُوۡا یُؤۡفَكُوۡنَ ﴿۵۵﴾
و یوم تقوم الساعۃ یقسم المجرمون ما لبثوا غیر ساعۃ كذلك كانوا یؤفكون ﴿۵۵﴾

আর যেদিন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে সেদিন অপরাধীরা কসম করে বলবে যে, তারা মুহূর্তকালের বেশী অবস্থান করেনি। এভাবেই তারা সত্যবিমুখ থেকেছে। আল-বায়ান

যেদিন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন অন্যায়কারীরা কসম করে বলবে যে, তারা মূহূর্তকালের বেশি অবস্থান করেনি। এভাবেই তারা সত্য পথ থেকে বিচ্যুত হত। তাইসিরুল

যেদিন কিয়ামাত হবে সেদিন অপরাধীরা শপথ করে বলবে যে, তারা এক ঘন্টার বেশি (দুনিয়ায়) অবস্থান করেনি। এভাবেই তারা সত্যভ্রষ্ট হত। মুজিবুর রহমান

And the Day the Hour appears the criminals will swear they had remained but an hour. Thus they were deluded. Sahih International

৫৫. আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন অপরাধীরা শপথ করে বলবে যে, তারা মুহুর্তকালের বেশী অবস্থান করেনি।(১) এভাবেই তাদেরকে পথ ভ্ৰষ্ট করা হত।(২)

(১) অর্থাৎ হাশরে কাফেররা কসম খেয়ে এই মিথ্যা কথা বলবে, আমরা দুনিয়াতে অথবা কবরে এক মুহুর্তের বেশী থাকিনি। অন্য এক আয়াতে মুশরিকদের এই উক্তি বর্ণিত আছে, “তারা কসম খেয়ে বলবে আমরা মুশরিক ছিলাম না।” [সূরা আল আন’আম: ২৩] এর কারণ এই যে, হাশরের ময়দানে রাব্বুল আলমীনের আদালত কায়েম হবে। তিনি সবাইকে স্বাধীনতা দেবেন। তারা সত্য কিংবা মিথ্যা যে কোন বিবৃতি দিতে পারবে। কেননা, রাব্বুল আলমীনের ব্যক্তিগত জ্ঞানও পূর্ণমাত্রায় আছে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্যে তিনি তাদের স্বীকারোক্তি করা না করার মুখাপেক্ষী নন। মানুষ যখন মিথ্যা বলবে, তখন তার মুখ মোহরাঙ্কিত করে দেয়া হবে এবং তার হস্ত-পদ ও চর্ম থেকে সাক্ষ্য নেয়া হবে। এসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা বিবৃত করে দেবে। এরপর আর কোন প্রমাণ আবশ্যক হবে না। আলোচ্য আয়াতের অর্থ তাই।

কুরআনের অন্যান্য আয়াত থেকে জানা যায় যে, হাশরের মাঠে বিভিন্ন অবস্থানস্থল হবে এবং প্রত্যেক অবস্থানস্থলের অবস্থা ভিন্নরূপ হবে। এক অবস্থানস্থলে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কারও কথা বলার অধিকার থাকবে না। যাকে অনুমতি দেয়া হবে, সে কেবল সত্য ও নির্ভুল কথা বলতে পারবে মিথ্যা বলার সামৰ্থ্য থাকবে না। যেমন এরশাদ হয়েছে, “যখন সেদিন আসবে তখন আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ কথা বলতে পারবে না”। সূরা হূদ: ১০৫] এর বিপরীতে সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে যে, কবরে যখন কাফেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমার পালনকর্তা কে এবং মুহাম্মদ কে? তখন সে বলবে, ‘হায়, হায়, আমি কিছুই জানি না” [মুসনাদে আহমাদ: ৪/২৮৭, ২৯৫–২৯৬, আবু দাউদ: ৪৭৫৩]।

(২) কাতাদাহ বলেন, এর অর্থ এভাবেই তারা দুনিয়াতে মিথ্যা বলত। তারা সত্য থেকে বিমুখ থাকত। সত্য থেকে বিরত হয়ে মিথ্যার দিকে চলে যেত। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫৫) যেদিন কিয়ামত হবে,[1] সেদিন অপরাধীরা শপথ করে বলবে যে, তারা (পৃথিবীতে) মুহূর্তকালের বেশী অবস্থান করেনি।[2] এভাবেই তারা সত্য বিমুখ হত। [3]

[1] سَاعَة এর অর্থ হল সময়, কাল, মুহূর্ত। উদ্দেশ্য হল মহাকাল কিয়ামতের দিন। سَاعَة এই জন্য বলা হয়েছে যে, আল্লাহ যখনই চাইবেন তা মুহূর্তের মধ্যে সাথে সাথে প্রতিষ্ঠিত হবে অথবা এই জন্য বলা হয়েছে যে, তা যখন প্রতিষ্ঠিত হবে, তখনকার সময়টা হবে পৃথিবীর সর্বশেষ সময়।

[2] পৃথিবীতে অথবা কবরে। তারা নিজেদের অভ্যাস মত মিথ্যা কসম খাবে। কারণ তারা পৃথিবীতে যতদিন অবস্থান করেছে তা তো তাদের জানা। আর যদি উদ্দেশ্য কবরের জীবন হয়, তবে তাদের কসম অজ্ঞতাবশতঃ হবে। কারণ কবরের অবস্থানের সময় তাদের অজানা। অনেকে বলেন যে, কিয়ামতের কঠিনতা ও ভয়াবহতা (বা দীর্ঘতা)র কারণে পৃথিবীর জীবন তাদেরকে সামান্য ক্ষণ বা মুহূর্তকাল মনে হবে।

[3] أَفَكَ الرَّجُلُ এর অর্থ হল ‘সত্যবিমুখ হয়ে গেছে’ উদ্দেশ্য তারা পৃথিবীতে সত্য থেকে বিমুখ ছিল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান