আর তোমার পরিবার-পরিজনকে সালাত আদায়ের আদেশ দাও এবং নিজেও তার উপর অবিচল থাক। আমি তোমার কাছে কোন রিয্ক চাই না। আমিই তোমাকে রিয্ক দেই আর শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্য। আল-বায়ান
আর তোমার পবিরার-পরিজনকে নামাযের নির্দেশ দাও আর তাতে অবিচল থাক। তোমার কাছে আমি রিযক চাই না, আমিই তোমাকে রিযক দিয়ে থাকি, উত্তম পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য নির্দিষ্ট। তাইসিরুল
আর তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও এবং তাতে অবিচল থাক। আমি তোমার নিকট কোন জীবনোপকরণ চাইনা, আমিই তোমাকে জীবনোপকরণ দিই এবং শুভ পরিণামতো মুত্তাকীদের জন্য। মুজিবুর রহমান
And enjoin prayer upon your family [and people] and be steadfast therein. We ask you not for provision; We provide for you, and the [best] outcome is for [those of] righteousness. Sahih International
১৩২. আর আপনার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দিন ও তাতে অবিচল থাকুন(১), আমরা আপনার কাছে কোন রিযিক চাই না; আমরাই আপনাকে রিযিক দেই।(২) আর শুভ পরিণাম তো তাকওয়াতেই নিহিত।(৩)
(১) অর্থাৎ আপনি পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দিন এবং নিজেও এর উপর অবিচল থাকুন। বাহ্যতঃ এখানে আলাদা আলাদা দুটি নির্দেশ রয়েছে। (এক) পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ এবং (দুই) নিজেও সালাত অব্যাহত রাখা। এর এমন ফলাফল সামনে এসে যাবে যাতে আপনার হৃদয় উৎফুল্ল হয়ে উঠবে। এ অর্থটি কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন অন্যত্ৰ সালাতের হুকুম দেবার পর বলা হয়েছেঃ “আশা করা যায়, আপনার রব আপনাকে ‘মাকামে মাহমুদে' (প্ৰশংসিত স্থান) পৌঁছিয়ে দেবেন।” [সূরা আল-ইসরাঃ ৭৯] অন্যত্র বলা হয়েছেঃ “আপনার জন্য পরবর্তী যুগ অবশ্যি পূর্ববর্তী যুগের চাইতে ভালো। আর শিগগির আপনার রব আপনাকে এত কিছু দেবেন যার ফলে আপনি খুশি হয়ে যাবেন।” [সূরা ‘আদ-দুহাঃ ৪–৫]
(২) অর্থাৎ আপনি নিজের পরিবারবর্গের রিযক নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা ও কর্মের জোরে সৃষ্টি করুন এবং সালাত থেকে দূরে থাকবেন এটা যেন না হয়। আপনি আল্লাহর ইবাদাতের দিকে বেশী মশগুল হোন। আপনি যদি সালাত কায়েম করেন তবে আপনার রিযিকের কোন ঘাটতি হবে না। কোত্থেকে রিযিক আসবে তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন। না। [ইবন কাসীর] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যার যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা দুনিয়ার প্রতি ধাবিত হয়, আল্লাহ্ তার যাবতীয় কর্মকান্ড বিক্ষিপ্ত করে দেন। আর তার কপালে দারিদ্র্যতা লিখে দেন। আর তার কাছে দুনিয়া শুধু অতটুকুই নিয়ে আসে, যতটুকু আল্লাহ তার জন্য লিখেছেন এবং যার যাবতীয় উদ্দেশ্য হবে আখেরাত, আল্লাহ্ তার যাবতীয় কাজ গুছিয়ে দেন, তার অন্তরে অমুখাপেক্ষীতা সৃষ্টি করে দেন। আর দুনিয়া তার কাছে বাধ্য হয়ে এসে পড়ে। [ইবনে মাজাহঃ ৪১০৫]
(৩) আমার কোন লাভের জন্য আমি তোমাদের সালাত পড়তে বলছি না। বরং এতে লাভ তোমাদের নিজেদেরই। সেটি হচ্ছে এই যে, তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হবে। আর এটিই দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে স্থায়ী ও শেষ সাফল্যের মাধ্যম। এক হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে দেখলেন যে, তার কাছে রুতাব তা’জা’ খেজুর নিয়ে আসা হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটার ব্যাখ্যা করলেন যে, আমাদের এ দ্বীনের মর্যাদা দুনিয়াতে বৃদ্ধি পাবে। [দেখুন, মুসলিম: ২২৭০]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৩২) তুমি তোমার পরিবারবর্গকে নামাযের আদেশ দাও এবং ওতে অবিচলিত থাক।[1] আমি তোমার নিকট কোন জীবনোপকরণ চাই না। আমিই তোমাকে জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। আর সংযমীদের জন্য শুভ পরিণাম।
[1] এই আদেশ নবী (সাঃ)-এর সাথে তাঁর সমস্ত উম্মতের জন্য। অর্থাৎ, মুসলিমদের জন্য জরুরী যে, তাঁরা নিজেদের নামাযের প্রতি যত্নবান হবে এবং পরিবারের লোকেদেরকেও নামাযের জন্য তাকীদ করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান