২০ সূরাঃ ত্ব-হা | Ta-Ha | سورة طه - আয়াতঃ ১১৪
২০:১১৪ فَتَعٰلَی اللّٰهُ الۡمَلِكُ الۡحَقُّ ۚ وَ لَا تَعۡجَلۡ بِالۡقُرۡاٰنِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یُّقۡضٰۤی اِلَیۡكَ وَحۡیُهٗ ۫ وَ قُلۡ رَّبِّ زِدۡنِیۡ عِلۡمًا ﴿۱۱۴﴾
فتعلی الله الملك الحق و لا تعجل بالقران من قبل ان یقضی الیك وحیهٗ و قل رب زدنی علما ﴿۱۱۴﴾

সুতরাং আল্লাহ মহান যিনি সত্যিকার অধিপতি; তোমার প্রতি ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তুমি কুরআন পাঠে তাড়াহুড়া করো না এবং তুমি বল, ‘হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন।’ আল-বায়ান

আল্লাহ সর্বোচ্চ, প্রকৃত অধিপতি, তোমার প্রতি (আল্লাহর) ওয়াহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তুমি কুরআন বক্ষে ধারণের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করো না। আর বল, ‘হে আমার প্রতিপালক! জ্ঞানে আমায় সমৃদ্ধি দান করুন।’ তাইসিরুল

আল্লাহ অতি মহান, প্রকৃত অধিপতি। তোমার প্রতি কুরআনের আয়াত সম্পূর্ণ হবার পূর্বে তুমি ত্বরা করনা এবং বলঃ হে আমার রাব্ব! আমার জ্ঞানকে বৃদ্ধি করুন। মুজিবুর রহমান

So high [above all] is Allah, the Sovereign, the Truth. And, [O Muhammad], do not hasten with [recitation of] the Qur'an before its revelation is completed to you, and say, "My Lord, increase me in knowledge." Sahih International

১১৪. সুতরাং প্রকৃত মালিক আল্লাহ অতি মহান, সর্বোচ্চ স্বত্বা।(১) আর আপনার প্রতি আল্লাহর ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার আগে আপনি কুরআন পাঠে তাড়াহুড়া করবেন না এবং বলুন, হে আমার রব! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ করুন।

(১) মহান আল্লাহ্ বলছেন, যখন পুনরুত্থানের দিন, ভাল-মন্দ প্রতিফলের দিন অবশ্যই ঘটবে, তখন আমরা এ কুরআন নাযিল করেছি, যাতে এরা নিজেদের গাফলতি থেকে সজাগ হবে, ভুলে যাওয়া শিক্ষাকে কিছুটা স্মরণ করবে এবং পথ ভুলে কোন পথে যাচ্ছে আর এই পথ ভুলে চলার পরিণাম কি হবে সে সম্পর্কে এদের মনে বেশ কিছুটা অনুভূতি জগবে। সুতরাং সেই মহান হক বাদশাহর জন্যই যাবতীয় মহত্ব। যিনি হক, যাঁর ওয়াদা হক, যার সাতর্কীকরণ হক, যার রাসূলরা হক, জান্নাত হক, জাহান্নাম হক, তার থেকে যা কিছু আসে সবই হক। তাঁর আদল ও ইনসাফ হচ্ছে যে, তিনি কাউকে সাবধান না করে রাসূল না পাঠিয়ে শাস্তি দেন না। যাতে করে তিনি মানুষের ওযর আপত্তির উৎস বন্ধ করে দিতে পারেন। ফলে তাদের কোন সন্দেহ বা প্রমাণ অবশিষ্ট না থাকে। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১১৪) আল্লাহ অতি মহান, সত্য অধীশ্বর।[1] তোমার প্রতি আল্লাহর অহী (প্রত্যাদেশ) সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তুমি কুরআন পাঠে তাড়াতাড়ি করো না। [2] আর বল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি কর।’[3]

[1] যাঁর সুখের প্রতিশ্রুতি ও শাস্তির ধমক সত্য, জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য এবং তাঁর প্রতিটি কথা সত্য।

[2] জিবরীল (আঃ) যখন অহী নিয়ে আসতেন ও শুনাতেন, তখন নবী (আঃ)ও তার কিছু ভুলে যাওয়ার ভয়ে তাড়াতাড়ি পড়তেন। আল্লাহ তাঁকে এ রকম করতে নিষেধ করে বললেন, প্রথমে অহী মনোযোগ দিয়ে শোনো, তা মুখস্থ করানো ও অন্তরে স্থান করে দেওয়া আমার কাজ; যেমন এ কথা সূরা কিয়ামাহ ১৬-১৯নং আয়াতে আসবে।

[3] অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে অধিক জ্ঞান লাভের জন্য প্রার্থনা করতে থাকো। এ নির্দেশে উলামাদের জন্য উপদেশ রয়েছে যে, তাঁরা যেন ফতোয়া দেওয়ার ব্যাপারে পূর্ণ গবেষণা-বিবেচনা ও চিন্তা-ভাবনা করবেন। তাড়াহুড়ো থেকে দূরে থাকবেন এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করার পথ অবলম্বন করতে কোন প্রকার আলস্য ও ক্রটি করবেন না। এখানে জ্ঞান বলতে কুরআন-হাদীসের জ্ঞান। কুরআনে এটিকেই ‘ইলম’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর এর জ্ঞানীদেরকে উলামা বলা হয়েছে। অন্যান্য জ্ঞান যা মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য অর্জন করে থাকে তা হল, শিল্প, পেশা ও কারিগরী। নবী (সাঃ) যে জ্ঞানের জন্য প্রার্থনা করতেন, তা একমাত্র অহী ও রিসালাতের জ্ঞান; যা কুরআন ও হাদীসে বিদ্যমান। যার দ্বারা মানুষের সাথে আল্লাহর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়, চরিত্র ও ব্যবহারে সংস্কার সাধন হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির কথা বুঝতে পারা যায়। এই শ্রেণীর দু’আর মধ্যে একটি দু’আ যা তিনি বলতেন তা এই, اَللّهُمَّ انْفَعْنِيْ بِمَا عَلَّمْتَنِيْ وَعَلِّمْنِيْ مَا يَنْفَعُنِيْ وَزِدْنِيْ عِلْمًا। অর্থাৎ, হে আল্লাহ! যা কিছু আমাকে শিখিয়েছ তার দ্বারা আমাকে উপকৃত কর এবং আমাকে সেই জ্ঞান দান কর, যা আমাকে উপকৃত করবে। আর আমার ইলম আরো বৃদ্ধি কর। (সঃ ইবনে মাজাহ ১/৪৭)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান