হারাম মাস হারাম মাসের বদলে এবং পবিত্র বিষয়সমূহ কিসাসের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে তোমাদের উপর আক্রমণ করেছে, তোমরা তার উপর আক্রমণ কর, যেরূপ সে তোমাদের উপর আক্রমণ করেছে। আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন। আল-বায়ান
সম্মানিত মাস হচ্ছে সম্মানিত মাসের বিনিময়ে এবং পবিত্রতা রক্ষার দায়িত্ব সবার জন্য সমান, কাজেই যে কেউ তোমাদের প্রতি কঠোর আচরণ করে, তবে তোমরাও তাদের প্রতি কঠোর আচরণ কর যেমনি কঠোরতা সে তোমাদের প্রতি করেছে এবং আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জেনে রেখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন। তাইসিরুল
নিষিদ্ধ মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ মাস ও সমস্ত নিষিদ্ধ বিষয় পরস্পর সমান; অতঃপর যে কেহ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে, তাহলে সে তোমাদের প্রতি যেরূপ অত্যাচার করবে তোমরাও তার প্রতি সেরূপ অত্যাচার কর এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, আল্লাহ সংযমশীলদের সঙ্গী। মুজিবুর রহমান
[Fighting in] the sacred month is for [aggression committed in] the sacred month, and for [all] violations is legal retribution. So whoever has assaulted you, then assault him in the same way that he has assaulted you. And fear Allah and know that Allah is with those who fear Him. Sahih International
১৯৪. পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে(১)। যার পবিত্রতা অলংঘনীয় তার অবমাননা কিসাসের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যে কেউ তোমাদেরকে আক্রমণ করবে তোমরাও তাকে অনুরূপ আক্রমণ করবে এবং তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন করবে। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
(১) সাহাবীগণের মনে সন্দেহ এই ছিল যে, আশহুরে-হারাম বা সম্মানিত মাসসমূহে কোথাও কারো সাথে যুদ্ধ করা জায়েয নয়। এমতাবস্থায় যদি মক্কার মুশরিকরা যুদ্ধ শুরু করে তবে তার প্রতিরোধকল্পে কিভাবে যুদ্ধ করব? তাদের এ দ্বিধা দূর করার জন্যই আয়াতটি নাযিল করা হয়েছে। অর্থাৎ মক্কার হারাম শরীফের সম্মানার্থে শত্রুর হামলা প্রতিরোধকল্পে যুদ্ধ করা যেমন শরীআতসিদ্ধ, তেমনি হারাম মাসে (সম্মানিত মাসেও) যদি কাফেররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়, তবে তার প্রতিরোধকল্পে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাও জায়েয।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৯৪) নিষিদ্ধ (পবিত্র) মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ (পবিত্র) মাস এবং সকল নিষিদ্ধ (পবিত্র) জিনিসের জন্য এরূপ বিনিময়।[1] সুতরাং যে তোমাদেরকে (ঐ মাসে) আক্রমণ করবে, তোমরাও তাকে অনুরূপ (মাসে) আক্রমণ কর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ সাবধানীদের সাথী।
[1] হিজরী সনের ৬ষ্ঠ বছরে যুলহজ্জ মাসে রসূল (সাঃ) চৌদ্দশ সাহাবীদেরকে সাথে নিয়ে উমরাহ করার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু মক্কার কাফেররা তাঁদেরকে প্রবেশ করতে বাধা দিল এবং আপোসে ফায়সালা এই হল যে, আগামী বছর মুসলিমরা তিন দিনের জন্য উমরাহ করার উদ্দেশ্যে মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে। মাসটা ছিল ‘হারাম’ (যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ) মাসসমূহের একটি মাস। পরের বছরে চুক্তি অনুযায়ী মুসলিমরা যখন উক্ত মাসেই উমরা করার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন, তখন মহান আল্লাহ এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন। উদ্দেশ্য এই যে, এবারও যদি মক্কার কাফেররা এই মাসের সম্মান রক্ষা না করে (গতবারের মত) তোমাদেরকে মক্কায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়, তবে তোমরাও এর মর্যাদার কোন খেয়াল না করে তাদের সাথে পূর্ণ উদ্যমে মোকাবেলা কর। ‘সকল নিষিদ্ধ (পবিত্র) জিনিসের জন্য এরূপ বিনিময়’ অর্থাৎ, তারা যদি নিষিদ্ধ মাসের সম্মান রক্ষা করে, তাহলে তোমরাও তার সম্মান রক্ষা কর। অন্যথা তোমরাও এই সম্মানকে দৃষ্টিচ্যুত করে কাফেরদেরকে উপদেশমূলক শিক্ষা দাও। (ইবনে কাসীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান