১৬ সূরাঃ আন-নাহাল | An-Nahl | سورة النحل - আয়াতঃ ২৬
১৬:২৬ قَدۡ مَكَرَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِهِمۡ فَاَتَی اللّٰهُ بُنۡیَانَهُمۡ مِّنَ الۡقَوَاعِدِ فَخَرَّ عَلَیۡهِمُ السَّقۡفُ مِنۡ فَوۡقِهِمۡ وَ اَتٰىهُمُ الۡعَذَابُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۲۶﴾
قد مكر الذین من قبلهم فاتی الله بنیانهم من القواعد فخر علیهم السقف من فوقهم و اتىهم العذاب من حیث لا یشعرون ﴿۲۶﴾

তাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা ষড়যন্ত্র করেছিল, অতঃপর আল্লাহ তাদের দালানের ভীতে আঘাত করেছিলেন, ফলে তাদের উপর থেকে তাদের ছাদ ধ্বসে পড়েছিল। আর তাদের উপর আযাব এসছিল এমনভাবে যে, তারা তা উপলব্ধি করতে পারেনি। আল-বায়ান

তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও চক্রান্ত করেছিল। ফলে আল্লাহ তাদের ইমারাতকে মূল থেকে উৎপাটিত করেছিলেন আর উপর থেকে ছাদ তাদের উপর ভেঙ্গে পড়ল, আর তাদের প্রতি শাস্তি পতিত হল এমন দিক হতে যা তারা এতটুকু টের পায়নি। তাইসিরুল

তাদের পূর্ববর্তীরাও চক্রান্ত করেছিল। আল্লাহ তাদের ইমারাতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন; ফলে ইমারাতের ছাদ তাদের উপর ধ্বসে পড়ল এবং তাদের প্রতি শাস্তি নেমে এলো এমন দিক হতে যা ছিল তাদের ধারনার বাহির। মুজিবুর রহমান

Those before them had already plotted, but Allah came at their building from the foundations, so the roof fell upon them from above them, and the punishment came to them from where they did not perceive. Sahih International

২৬. অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীগণ চক্রান্ত করেছিল; অতঃপর আল্লাহ তাদের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন; ফলে ইমারতের ছাদ তাদের উপর ধ্বসে পড়ল এবং তাদের প্রতি শাস্তি আসল এমনভাবে যে, তারা উপলব্ধি করতে পারেনি।(১)

(১) এ আয়াতে কাদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে এ ব্যাপারে আলেমগণ বিভিন্ন মত পোষণ করেছেন। কোন কোন মুফাসসির বলেনঃ এর দ্বারা নমরূদকে বুঝানো হয়েছে। যে নিজেকে ইলাহ বলে দাবী করেছিল এবং আকাশে উঠার জন্য সিড়ি স্থাপন করেছিল। সে সিড়ির মুলোৎপাটিত করা হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তাকে সামান্য একটি মশা দিয়ে শাস্তি দিয়েছিলেন। যা তার নাকের ছিদ্র পথে ঢুকে গিয়েছিল। তারপর চারশ’ বছর পর্যন্ত সে এ শাস্তি ভোগ করেছে। তার কাছে ঐ ব্যক্তি বেশী দরদী বলে বিবেচিত হতো যে দুহাতে হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় পেটতো। সে চারশ’ বছর মানুষকে পদানত করে রেখেছিল। তাই আল্লাহ তাকে চারশ’ বছর পর্যন্ত হাতুড়ির পেটা খাইয়েছেন। তারপর আল্লাহ তাকে মৃত্যু দেন। [ইবন কাসীর] কোন কোন মুফাসসির অবশ্য বলেন যে, এ আয়াতের উদ্দেশ্য বুখতনাসর। [ইবন কাসীর] তার সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা ইয়াহুদী ও নাসারাদের গ্রন্থে এসেছে। অবশ্য অধিকাংশ মুফাসসির বলেনঃ এখানে কোন সুনির্দিষ্ট লোক না বুঝিয়ে যারাই আল্লাহর দ্বীন থেকে মানুষকে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ও কুটকৌশল অবলম্বন করেছিল তাদের সবার জন্য উদাহরণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে। [ইবন কাসীর] বিভিন্ন সূরায় আল্লাহ তা'আলা এ বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করেছেন। [দেখুন, সূরা ইবরাহীমঃ ৪৬, সূরা নূহঃ ২২, সূরা সাবাঃ ৩৩]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৬) নিশ্চয় তাদের পূর্ববর্তীগণ চক্রান্ত করেছিল; আল্লাহ তাদের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করলেন; ফলে ইমারতের ছাদ তাদের উপর ধসে পড়ল[1] এবং এমন দিক হতে তাদের উপর শাস্তি এল, যা ছিল তাদের ধারণার বাইরে। [2]

[1] কিছু মুফাসসির ইসরাঈলী বর্ণনার উপর ভিত্তি করে বলেন, এখানে উদ্দেশ্য নমরূদ বা বুখতে নাসর। সে কোনভাবে আকাশে চড়ে আল্লাহর বিরূদ্ধে চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু তাতে সে অসফল হয়ে ফিরে আসে। কারো কারো মতে এটি একটি উপমা মাত্র। যার উদ্দেশ্য এ কথা বলা যে, আল্লাহর সাথে কুফরী ও শিরককারীদের আমল ঐভাবেই ধ্বংস হবে, যেভাবে কোন ব্যক্তির ঘরের ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়ে এবং ছাদসহ ধসে ভূমিসাৎ হয়ে যায়। কিন্তু সঠিক কথা হল ঐ সকল জাতির পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করা, যারা নবীদেরকে মিথ্যার পর মিথ্যা মনে করে। আর শেষ পর্যন্ত আল্লাহর আযাবে তারা তাদের ঘর সহ ধ্বংস হয়ে যায়। যেমন আদ জাতি, লূত-সম্প্রদায় প্রভৃতি।

[2] যেমন অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন,{فَأَتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوا} "সুতরাং আল্লাহর শাস্তি তাদের উপর এমন এক জায়গা হতে এল, যা ছিল তাদের ধারণার বাইরে।" (সূরা হাশর ২ আয়াত)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান