যেভাবে আমি নাযিল করেছিলাম বিভক্তকারীদের (ইয়াহূদী ও নাসারা) উপর, আল-বায়ান
যে ধরনের সতর্কীকরণ পাঠানো হয়েছিল (আল্লাহর কিতাবকে) বিভক্তকারী (ইয়াহূদী ও খ্রীস্টান)দের উপর। তাইসিরুল
যেভাবে আমি অবতীর্ণ করেছিলাম বিভক্তকারীদের উপর, মুজিবুর রহমান
Just as We had revealed [scriptures] to the separators Sahih International
৯০. যেভাবে আমরা নাযিল করেছিলাম বিভক্তকারীদের উপর;(১)
(১) সেই বিভক্তকারী দল বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে কয়েকটি মত বর্ণিত হয়েছে। কারও কারও মতে এখানে তাদেরকে বুঝানো হয়েছে যারা নবীদের বিরোধিতার জন্য, তাদের উপর মিথ্যারোপ করার জন্য, তাদের কষ্ট দেয়ার জন্য পরস্পর শপথ করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল। যেমন সালেহ আলাইহিস সালামের লোকেরা এরকম করেছিল। “তারা বলল, তোমরা আল্লাহর নামে শপথ গ্রহণ কর, ‘আমরা রাতেই শেষ করে দেব তাকে ও তার পরিবার-পরিজনকে; তারপর তার অভিভাবককে নিশ্চিত করে বলব যে, তার পরিবার-পরিজনের হত্যা আমরা প্রত্যক্ষ করিনি।” [সূরা আন-নামল: ৪৯] কারও কারও মতে, এখানে বাস্তবিকই সালেহ আলাইহিস সালামের কাওমের সে লোকদেরকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর]
মুকাতিল বলেন, মক্কার কুরাইশদের মধ্যে ষোলজন এ জঘন্য কাজটি করেছিল। তারা পরস্পর শপথ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মানুষকে দূরে রাখছিল। [বাগভী] কারও কারও মতে, এখানে শব্দটি ‘ভাগ-ভাটোয়ারা’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কুরআনকে বলত, জাদু। কেউ বলত, কবিতা। কেউ বলত, মিথ্যা। আর কেউ বলত পূর্ববর্তীদের কাহিনী। কারও কারও মতে, এখানে ইয়াহুদী নাসারাদেরকে বুঝানো হয়েছে। [বাগভী] তাদেরকে বিভক্তকারী এ অর্থে বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহর দীনকে বিভক্ত করে ফেলেছে। তার কিছু কথা মেনে নিয়েছে এবং কিছু কথা মেনে নেয়নি। [বাগভী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৯০) যেভাবে আমি অবতীর্ণ করেছি বিভক্তকারীদের উপর। [1]
[1] কিছু ব্যখ্যাকারীদের নিকট أنزلنا ক্রিয়ার কর্মকারক العذابَ ঊহ্য আছে। যার অর্থ হল, আমি তোমাদেরকে সেইরূপ আযাব হতে প্রকাশ্য সতর্ককারী; যেরূপ আযাব মহান আল্লাহ বিভক্তকারীদের উপর অবতীর্ণ করেছিলেন। এই বিভক্তকারী কারা? যারা কুরআনকে বিভক্ত করে নিয়েছিল। কেউ কেউ বলেন, তারা কুরায়েশ, যারা আল্লাহর কিতাবকে বিভক্ত করেছিল। তার কিছু অংশকে বলত যাদু, কিছু অংশকে বলত গণকের কথা, আবার কিছু অংশকে বলত উপকথা। পক্ষান্তরে কিছু মুফাসসিরীন বলেন, বিভক্তকারী বলতে আহলে কিতাব এবং কুরআন বলতে তাওরাত ও ইঞ্জীলকে বুঝানো হয়েছে। তারা ঐ সকল কিতাবকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করে রেখেছিল। আবার কেউ বলেন, এর অর্থ আপোসে শপথ বা প্রতিজ্ঞা গ্রহণকারী; এখানে সালেহ (আঃ)-এর জাতিকে বুঝানো হয়েছে, যারা আপোসে শপথ করেছিল যে, সালেহ ও তার পরিবারের সকলকে রাত্রির অন্ধকারে হত্যা করে ফেলবে। {قَالُوا تَقَاسَمُوا بِاللهِ لَنُبَيِّتَنَّهُ وَأَهْلَهُ} আর তারা আসমানী কিতাবকে টুকরো টুকরোও করেছিল। (সূরা নামল : ৪৯) عضين এর একটি অর্থ কিছু গ্রহণ করা ও কিছু বর্জন করা। কিতাবের কিছু অংশকে বিশ্বাস ও কিছুকে অস্বীকার করা।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান