আর যারা অনুসরণ করেছে, তারা বলবে, ‘যদি আমাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ হত, তাহলে আমরা তাদের থেকে আলাদা হয়ে যেতাম, যেভাবে তারা আলাদা হয়ে গিয়েছে’। এভাবে আল্লাহ তাদেরকে তাদের আমলসমূহ দেখাবেন, তাদের জন্য আক্ষেপস্বরূপ। আর তারা আগুন থেকে বের হতে পারবে না। আল-বায়ান
অনুসরণকারীরা বলবে, যদি কোনও প্রকারে আমাদের ফিরে যাবার সুযোগ ঘটত, তাহলে আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমনভাবে তারা সম্পর্ক ছিন্ন করল। এভাবে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কাজগুলো দেখাবেন তাদের জন্য আক্ষেপরূপে এবং জাহান্নাম হতে তারা বের হতে পারবে না। তাইসিরুল
অনুসরণকারীরা বলবেঃ যদি আমরা ফিরে যেতে পারতাম তাহলে তারা যেরূপ আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে আমরাও তদ্রুপ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করতাম। এভাবে আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের পরিণাম দুঃখজনকভাবে প্রদর্শন করবেন এবং তারা অগ্নি হতে উদ্ধার পাবেনা। মুজিবুর রহমান
Those who followed will say, "If only we had another turn [at worldly life] so we could disassociate ourselves from them as they have disassociated themselves from us." Thus will Allah show them their deeds as regrets upon them. And they are never to emerge from the Fire. Sahih International
১৬৭.আর যারা অনুসরণ করেছিল তারা বলবে, ‘হায়! যদি একবার আমাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ হতো তবে আমরাও তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমন তারা আমাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে’(১)। এভাবে আল্লাহ তাদের কার্যাবলী তাদেরকে দেখাবেন, তাদের জন্য আক্ষেপস্বরূপ(২)। আর তারা কখনো আগুন থেকে বহির্গমণকারী নয়।
(১) এ আয়াতে জাহান্নামবাসীদের মধ্যে নেতারা ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে যে সমস্ত ঝগড়া-বিবাদ হবে সেটার কিছু কথোপকথন ও তাদের অনুতাপের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের অন্যান্য স্থানে এ বিষয়টি আরও বেশী করে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে, “আর যারা কুফরী করেছে তারা বলে, “আমরা এ কুরআনে কখনো বিশ্বাস করব না, এর পূর্ববতী কিতাবসমূহেও নয়। হায়! আপনি যদি দেখতেন যালিমদেরকে যখন তাদের রবের সামনে দাঁড় করানো হবে তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রবিবাদ করতে থাকবে, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম।
যারা ক্ষমতাদর্পী ছিল তারা, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদের বলবে, ‘তোমাদের কাছে সৎপথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে তা থেকে নিবৃত্ত করেছিলাম? বরং তোমরাই ছিলে অপরাধী। যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, প্রকৃত পক্ষে তোমরাই তো দিনরাত চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, যখন তোমরা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহর সাথে কুফর করি এবং তার জন্য সমকক্ষ (শির্ক) স্থাপন করি। আর যখন তারা শাস্তি দেখতে পাবে তখন তারা অনুতাপ গোপন রাখবে এবং যারা কুফরী করেছে আমরা তাদের গলায় শৃংখল পরাব। তাদেরকে তারা যা করত তারই প্রতিফল দেয়া হবে।” [সূরা সাবা: ৩১-৩৩]
(২) আবুল আলীয়াহ বলেন, তাদের খারাপ আমলসমূহ কিয়ামতের দিন তাদের জন্য আফসোস ও পরিতাপের কারণ হবে। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “সেদিন প্রত্যেকেই জান্নাতে তাদের ঘর এবং জাহান্নামে তাদের ঘরের দিকে তাকাবে। সেদিন হচ্ছে আফসোসের দিন। তিনি বলেন, জাহান্নামীরা জান্নাতে তাদের জন্য নির্দিষ্ট ঘরের দিকে তাকাবে তারপর তাদের বলা হবে, হায় যদি তোমরা এর জন্য আমল করতে। তখন তাদেরকে আফসোস পেয়ে বসবে। আর জান্নাতীরা জাহান্নামে তাদের জন্য নির্দিষ্ট তাদের ঘরের দিকে তাকাবে, তখন তাদের বলা হবে, যদি আল্লাহ তোমাদের উপর তার দয়া না করতেন তবে তো তোমরা সেখানকার অধিবাসীই হতে।” [মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪/৪৯৬-৪৯৭]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৬৭) অনুসারীরা বলবে, ‘হায়! যদি একটিবার (পৃথিবীতে) ফিরে যাবার সুযোগ আমাদের ঘটত, তাহলে আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমন তারা আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল!’ এভাবে আল্লাহ তাদের কার্যাবলীকে তাদের পরিতাপরূপে দেখাবেন। আর তারা কখনও আগুন হতে বের হতে পারবে না।[1]
[1] আখেরাতে পীর ও গদিনশীন মাজারীদের অপারগতা ও বিশ্বাসঘাতকতা দেখে মুশকিরা আফসোস করবে, কিন্তু সেখানে তখন সে আফসোস ও অনুতাপের কোন ফল হবে না। হায়! দুনিয়াতেই যদি তারা শিরক থেকে তওবা করত! (তাহলে তারা মুক্তি পেয়ে যেত।)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান