১১ সূরাঃ হূদ | Hud | سورة هود - আয়াতঃ ৮৬
১১:৮৬ بَقِیَّتُ اللّٰهِ خَیۡرٌ لَّكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ۬ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡكُمۡ بِحَفِیۡظٍ ﴿۸۶﴾
بقیت الله خیر لكم ان كنتم مؤمنین و ما انا علیكم بحفیظ ﴿۸۶﴾

‘আল্লাহর দেয়া উদ্বৃত্ত লাভ তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা মুমিন হও। আর আমি তো তোমাদের হিফাযতকারী নই’। আল-বায়ান

আল্লাহর অনুমোদিত উদ্বৃত্ত (অর্থাৎ লাভ) তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা মু’মিন হও, আমি তোমাদের পর্যবেক্ষক নই।’ তাইসিরুল

আল্লাহ প্রদত্ত যা অবশিষ্ট থাকে তা’ই তোমাদের জন্য অতি উত্তম যদি তোমাদের বিশ্বাস হয়, আর আমি তোমাদের পাহারাদার নই। মুজিবুর রহমান

What remains [lawful] from Allah is best for you, if you would be believers. But I am not a guardian over you." Sahih International

৮৬. যদি তোমরা মুমিন হও তবে আল্লাহ অনুমোদিত যা বাকী থাকবে তা তোমাদের জন্য উত্তম; আর আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই।(১)

(১) অর্থাৎ ওজন-পরিমাপে হের-ফের করার হীন মানসিকতা দুর করার জন্য শু'আইব আলাইহিস সালাম প্রথমে তার জাতিকে নবীসুলভ স্নেহ ও দরদের সাথে বললেন, বর্তমানে আমি তোমাদের অবস্থা খুব ভাল ও স্বচ্ছল দেখছি। তোমাদের রিযক ও জীবন-জীবিকায় রয়েছে প্রাচুর্য। [ইবন কাসীর] হাসান বসরী বলেন, তাদের জিনিসপত্রের দাম ছিল খুব সস্তা। [কুরতুবী] সুতরাং প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করার মত কোন কারণ দেখি না। তাই আল্লাহ তা'আলার এ অনুগ্রহে শোকর আদায় করার জন্য হলেও তোমাদের পক্ষে তার কোন সৃষ্ট জীবকে ঠকানো উচিত নয়। তোমরা যদি আমার কথা না শোন, আমার নিষেধ অমান্য কর, তাহলে আমার ভয় হয় যে, আল্লাহর আযাব তোমাদেরকে ঘিরে ফেলবে। এখানে আখেরাতের আযাব বুঝানো হয়েছে, দুনিয়ার আযাবও হতে পারে, আবার দুনিয়ার আযাব বিভিন্ন প্রকারও হতে পারে। তন্মধ্যে এক আযাব হচ্ছে, তোমাদের স্বচ্ছলতা খতম হয়ে যাবে। [ইবন কাসীর] তোমরা অভাবগ্রস্ত ও দুর্ভিক্ষ কবলিত হবে। তোমাদের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। [কুরতুবী]

তিনি আরো বললেনঃ মানুষের পাওনা ঠিকমত ওজন করে পুরোপুরি দিয়ে দেয়ার পর যে লভ্যাংশ উদ্ধৃত্ত থাকে, তোমাদের জন্য তাই উত্তম। [তাবারী] পরিমাণে স্বল্প হলেও আল্লাহ তা'আলা তার মধ্যে বরকত দান করবেন, যদি তোমরা আমার কথা মান্য কর। আর যদি অমান্য কর, তবে মনে রেখ তোমাদের উপর কোন আযাব অবতীর্ণ হলে, তা থেকে তোমাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমার নয়। তোমাদের উপর আমার কোন জোর নেই। আমি তো শুধু একজন কল্যাণকামী উপদেষ্টা মাত্র। বড় জোর আমি তোমাদের বুঝাতে পারি। তারপর তোমরা চাইলে মানতে পারো আবার নাও মানতে পারো। আমার কাছে জবাবদিহি করার ভয় করা বা না করার প্রশ্ন নয়। বরং আসল প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করা। [ইবন কাসীর] আল্লাহর কিছু ভয় যদি তোমাদের মনে থেকে থাকে তাহলে তোমরা যা কিছু করছে তা থেকে বিরত থাকো। এভাবে তিনি তার সুললিত বর্ণনা ও অপূর্ব বাগ্মীতার মাধ্যমে নিজ জাতিকে বোঝানো এবং সৎপথে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৮৬) যদি তোমরা বিশ্বাসী হও, তাহলে আল্লাহ প্রদত্ত যা অবশিষ্ট থাকে,[1] তাই তোমাদের জন্য অতি উত্তম। আর আমি তো তোমাদের পাহারাদার নই।’ [2]

[1] بقيت الله (আল্লাহ প্রদত্ত অবশিষ্ট) এর অর্থ হল, সেই মুনাফা যা ওজনে কোন প্রকার কম-বেশি না করে সঠিক মাপে ধার্মিকতার সাথে পণ্য দেওয়ার পর অর্জন হয়ে থাকে। যেহেতু তা হালাল ও পবিত্র এবং তাতে বরকত আছে, যার জন্য সেই মুনাফাকে আল্লাহর অবশিষ্ট সম্পদ বলে গণ্য করা হয়েছে।

[2] অর্থাৎ আমি তোমাদেরকে শুধু তবলীগ করতে পারি এবং তাও আল্লাহর আদেশে করছি। কিন্তু তোমাদেরকে অসৎকর্ম থেকে বিরত রাখা ও তার উপর শাস্তি দেওয়া আমার ইচ্ছাধীন নয়। উভয় কর্মের এখতিয়ার একমাত্র আল্লাহর আছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান