সূরাঃ আল-বাকারা | Al-Baqara | سورة البقرة - আয়াত নং - ৬৩ মাদানী

২ : ৬৩ وَ اِذۡ اَخَذۡنَا مِیۡثَاقَكُمۡ وَ رَفَعۡنَا فَوۡقَكُمُ الطُّوۡرَ ؕ خُذُوۡا مَاۤ اٰتَیۡنٰكُمۡ بِقُوَّۃٍ وَّ اذۡكُرُوۡا مَا فِیۡهِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۶۳﴾

আর স্মরণ কর, যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম এবং তূর পাহাড়কে তোমাদের উপর উঠালাম আমি (বললাম) ‘তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা শক্তভাবে ধর এবং তাতে যা রয়েছে তা স্মরণ কর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার’। আল-বায়ান

স্মরণ কর, যখন তোমাদের শপথ নিয়েছিলাম এবং তূর পর্বতকে তোমাদের উপর তুলে ধরেছিলাম, বলেছিলাম, 'আমি যা দিলাম দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ কর এবং তাতে যা আছে তা স্মরণ রেখ, যেন তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পার'। তাইসিরুল

এবং যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম যে, আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা দৃঢ় রূপে ধারণ কর এবং এতে যা আছে তা স্মরণ কর - সম্ভবতঃ তোমরা নিস্কৃতি পাবে। মুজিবুর রহমান

And [recall] when We took your covenant, [O Children of Israel, to abide by the Torah] and We raised over you the mount, [saying], "Take what We have given you with determination and remember what is in it that perhaps you may become righteous." Sahih International

৬৩. আর স্মরণ কর, যখন আমরা তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম(১) এবং তোমাদের উপর উত্তোলন করেছিলাম তুর পর্বত; (বলেছিলাম,) আমরা যা দিলাম দৃঢ়তার সাথে(২) তা গ্রহণ কর এবং তাতে যা আছে তা স্মরণ রাখ, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার।(৩)

১. আবুল আলীয়াহ বলেন, এ অঙ্গীকার ছিল, নিষ্ঠাসহকারে একমাত্র আল্লাহ্ ইবাদত করা। আর কারও ইবাদত না করা। [আত-তাফসীরুস সহীহ] তবে অন্যান্য তাফসীরকারগণ বলেন, এর সাথে সাথে অঙ্গীকারের অন্যান্য বিষয়াবলী আয়াতের শেষেই বর্ণিত হয়েছে।

২. আয়াতে বর্ণিত بِقُوَّةٍ এর তাফসীর কেউ করেছেন, দৃঢ়তার সাথে। কাতাদাহ করেছেন, গুরুত্বের সাথে আবুল আলীয়াহ বলেছেন, আনুগত্যের সাথে। আর মুজাহিদ বলেছেন, এর উপর আমল করার স্বীকারোক্তির সাথে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

৩. যখন মূসা আলাইহিস সালাম-কে তুর পর্বতে তাওরাত প্রদান করা হল, তখন তিনি ফিরে এসে তা ইসরাঈল-বংশধরকে দেখাতে ও শোনাতে আরম্ভ করলেন। এতে হুকুমগুলো কিছুটা কঠোর ছিল - কিন্তু তাদের অবস্থানুযায়ীই ছিল। এ সম্পর্কে প্রথম তারা এ কথাই বলেছিল যে, যখন স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলা আমাদেরকে বলে দেবেন। যে, এটা আমার কিতাব' তখনই আমরা মেনে নেবো। (যে বর্ণনা উপরে চলে গেছে) মোটকথা যে সত্তরজন লোক মূসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে গিয়েছিল, তারাও ফিরে এসে সাক্ষী দিল। কিন্তু ইসরাঈল-বংশধররা পরিস্কারভাবে বলে দিল, আমাদের দ্বারা এ গ্রন্থের উপর আমল করা সম্ভব হবে না। ফলে আল্লাহ্ তাআলা ফেরেশতাদেরকে হুকুম করলেন, তুর পর্বতের একটি অংশ তুলে নিয়ে তাদের মাথার উপর ঝুলিয়ে দাও এবং বল, হয় কিতাব মেনে নাও, নইলে এক্ষুণি মাথার উপর পড়লো। অবশেষে নিরুপায় হয়ে তা মেনে নিতে হলো। এ আয়াতে বর্ণিত তুর পাহাড় উঠানোর তাফসীর আল্লাহ্ তা'আলা অন্য আয়াতে করে দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, “স্মরণ করুন, আমরা পর্বতকে তাদের উপরে উঠাই, আর তা ছিল যেন এক শামিয়ানা। তারা মনে করল যে, ওটা তাদের উপর পড়ে যাবে। বললাম, আমি যা দিলাম তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং ওটাতে যা আছে তা স্মরণ কর” [সূরা আল-আ’রাফ: ১৭১]

তাফসীরে জাকারিয়া

৬৩। (স্মরণ কর) যখন তোমাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তোমাদের ঊর্ধ্বে ‘ত্বুর’ পর্বতকে উত্তোলন করেছিলাম, (1) (বলেছিলাম,) ‘আমি যা (গ্রন্থ) দিলাম (সেই গ্রন্থে যে নির্দেশ আছে) দৃঢ়তার সাথে তোমরা তা গ্রহণ কর এবং তাতে যা আছে তা স্মরণ রাখ, যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পার।’

(1) যখন তাওরাতের বিধানের ব্যাপারে ইয়াহুদীরা অবাধ্যতামূলক আচরণ প্রকাশ করে বলল যে, এই বিধানগুলোর উপর আমল করা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়, তখন মহান আল্লাহ ত্বূর পাহাড়কে তাদের মাথার উপর ছায়ামন্ডপের মত তুলে ধরলেন। ফলে ভয়ে তারা আমল করার অঙ্গীকার করল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান