২১ সূরাঃ আল-আম্বিয়া | Al-Anbiya | سورة الأنبياء - আয়াত নং - ১০১ - মাক্কী

২১ : ১০১ اِنَّ الَّذِیۡنَ سَبَقَتۡ لَهُمۡ مِّنَّا الۡحُسۡنٰۤی ۙ اُولٰٓئِكَ عَنۡهَا مُبۡعَدُوۡنَ ﴿۱۰۱﴾ۙ

আমার পক্ষ থেকে যাদের জন্য পূর্বেই কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে তাদেরকে তা থেকে দূরে রাখা হবে। আল-বায়ান

পূর্ব থেকেই আমার পক্ষ হতে যাদের জন্য কল্যাণ নির্ধারিত আছে তাদেরকে তাত্থেকে (অর্থাৎ জাহান্নাম থেকে) বহু দূরে রাখা হবে। তাইসিরুল

যাদের জন্য আমার নিকট থেকে পূর্ব হতে কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে তাদেরকে তা হতে দূরে রাখা হবে। মুজিবুর রহমান

Indeed, those for whom the best [reward] has preceded from Us - they are from it far removed. Sahih International

১০১. নিশ্চয় যাদের জন্য আমাদের কাছ থেকে পূর্ব থেকেই কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে তাদেরকে তা থেকে দূরে রাখা হবে।(১)

(১) পূর্ববর্তী ৯৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, “তোমরা এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাদের ইবাদত কর, সবাই জাহান্নামের ইন্দন হবে।” দুনিয়াতে কাফেরদের বিভিন্ন দল যেসব মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করেছে, এ আয়াতে তাদের সবার জাহান্নামে প্রবেশ করার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াত শোনার পর কাফেররা এটা বলতে শুরু করল যে, যদি প্রত্যেক অবৈধ উপাস্যই জাহান্নামে যায় তবে ঈসা আলাইহিস সালাম ও ফেরেশতারাও জাহান্নামে যাবে; কারণ অবৈধ ইবাদত তো ঈসা আলাইহিস সালাম ও ফেরেশতাদেরও করা হয়েছে। তাহলে তারাও কি জাহান্নামে যাবেন? এর জওয়াবে আল্লাহ্ তা'আলা এ আয়াত নাযিল করেন। [দেখুনঃ মুস্তাদরাকে হাকিমঃ ২/৩৮৪–৩৮৫]

এ থেকে জানা যায় যে, যারা দুনিয়ায় মানুষকে আল্লাহর বন্দেগী করার শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং লোকেরা তাদেরকেই উপাস্য পরিণত করে অথবা যারা এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ বেখবর যে দুনিয়ায় তাদের বন্দেগী ও পূজা করা হচ্ছে এবং এ কর্মে তাদের ইচ্ছা ও আকাংখার কোন দখল নেই, তাদের জাহান্নামে যাবার কোন কারণ নেই। কারণ, তারা এ শির্কের জন্য দায়ী নয়।

তাফসীরে জাকারিয়া

১০১। নিশ্চয় যাদের জন্য আমার নিকট থেকে পূর্ব হতে কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে, তাদেরকে তা (জাহান্নাম) হতে দূরে রাখা হবে। [1]

[1] কোন কোন মানুষের মনে এ প্রশ্ন জাগতে পারে বা মুশরিকদের পক্ষ হতে এ প্রশ্ন উঠতে পারে; বরং বাস্তবে উঠেও থাকে যে, যেমন ঈসা (আঃ), উযায়র, ফিরিশতা ও বহু সৎলোকদেরও তো ইবাদত করা হয়ে থাকে, তাহলে এরাও কি তাদের ইবাদতকারীর সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করবে? এ আয়াতে সে উত্তর দেওয়া হয়েছে। আর তা এই যে, তাঁরা ছিলেন আল্লাহর নেক বান্দা; যাঁদের নেকীর কারণে আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁদেরকে চিরস্থায়ী সুখী জীবন বা জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জাহান্নাম হতে সুদূরে থাকবেন। এ শব্দগুলি দ্বারা এ কথাও পরিষ্কারভাবে বুঝা যায় যে, যে ব্যক্তি পৃথিবীতে এই ইচ্ছা ও কামনা রেখে মারা যায় যে, তার মৃত্যুর পর তার কবরকে মাজার বানানো হোক এবং লোকেরা তাকে প্রয়োজন পূরণকারী (দাতা) মনে করে তার নামে নযর-নিয়ায পেশ করুক ও তার পূজা (ও সিজদাহ) হোক, তাহলে সে ব্যক্তিও জাহান্নামের ইন্ধন হবে। কারণ আল্লাহকে ছেড়ে অথবা তাঁর সাথে নিজের ইবাদতের প্রতি আহবানকারী (তাগূত) নিঃসন্দেহে সেই নেক মানুষদের আওতায় কখনও পড়বে না, ‘যাদের জন্য আল্লার নিকট থেকে পূর্ব হতে কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে।’

তাফসীরে আহসানুল বায়ান