লগইন করুন
১৫ সূরাঃ আল-হিজর | Al-Hijr | سورة الحجر - আয়াত নং - ১৬ - মাক্কী
আর আমি আসমানে স্থাপন করেছি কক্ষপথসমূহ এবং তাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছি দর্শকদের জন্য। আল-বায়ান
আমি আকাশে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি আর দর্শকদের জন্য তা সুসজ্জিত করে দিয়েছি। তাইসিরুল
আকাশে আমি গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং ওকে করেছি সুশোভিত, দর্শকদের জন্য। মুজিবুর রহমান
And We have placed within the heaven great stars and have beautified it for the observers. Sahih International
১৬. আর অবশ্যই আমরা আকাশে বুরুজসমূহ সৃষ্টি করেছি(১) এবং দর্শকদের জন্য সেগুলোকে সুশোভিত করেছি(২);
(১) بروج শব্দটি برج এর বহুবচন। এটি বৃহৎ প্রাসাদ, দুর্গ ও মজবুত ইমারত ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। মুজাহিদ, কাতাদাহ, প্রমুখ তাফসীরবিদগণ এখানে بروج এর তাফসীরে বৃহৎ নক্ষত্র উল্লেখ করেছেন। [তাবারী] সে হিসেবে আয়াতের অর্থ, আমি আকাশে বৃহৎ নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি। সাধারণত: সূর্যের পরিভ্রমণ পথকে যে বারটি স্তরে বিভক্ত করা হয়ে থাকে, বুরুজ শব্দটি দ্বারা এখানে তা উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে বলে কোন কোন মুফাসসির মনে করেছেন। হাসান বসরী ও কাতাদা এটিকে গ্রহ-নক্ষত্র অর্থে গ্রহণ করেছেন। [ফাতহুল কাদীর]
(২) অন্য এক স্থানে আকাশকে তারকারাজির সাহায্যে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার কথা বলেছেন। যেমনঃ “আমি কাছের আকাশকে নক্ষত্ররাজির সুষমা দ্বারা সুশোভিত করেছি, [সূরা আস-সাফফাতঃ ৬] “আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা।” [সূরা আল-মুলকঃ ৫]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৬) আকাশে আমি গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি[1] এবং ওকে করেছি দর্শকদের জন্য সুশোভিত।
[1] بروج শব্দটি برج এর বহুবচন। যার অর্থ প্রকাশ হওয়া। আর এর থেকেই تبرج শব্দের উৎপত্তি; যার অর্থ মহিলাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করা। এখানে আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রকে بروج বলা হয়েছে, কারণ সেগুলি বড় উঁচুতে প্রকাশমান। কেউ কেউ বলেন, بروج বলতে সূর্য, চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহের কক্ষপথসমূহকে বুঝানো হয়েছে যা তাদের জন্য নির্দিষ্ট। আর তা হল বারটি; মেষরাশি, বৃষরাশি, মিথুনরাশি, কর্কটরাশি, সিংহরাশি, কন্যারাশি, তুলারাশি, বৃশ্চিকরাশি, ধনুঃরাশি, মকররাশি, কুম্ভরাশি ও মীনরাশি। আরবের লোকেরা এই সকল রাশিচক্র দ্বারা আবহাওয়ার অবস্থা জানার চেষ্টা করত। অবশ্য এতে কোন দোষ নেই, দোষ হল তার দ্বারা কোন পরিবর্তমান সংঘটিতব্য ঘটনা জানার দাবি করা, যেমন আজকাল কিছু অজ্ঞ মানুষদের মধ্যে তার প্রচলন রয়েছে; যাদের মাধ্যমে অনেকে নিজেদের ভূত-ভবিষ্যৎ ও ভাগ্য পরীক্ষা করে ও জেনে থাকে। অথচ পৃথিবীতে সংঘটিতব্য ঘটনা ও মঙ্গলামঙ্গলের সাথে এ সবের কোন সম্পর্ক নেই। যা কিছু হয় তা একমাত্র মহান আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। এখানে মহান আল্লাহ ঐ সকল গ্রহ-নক্ষত্রের কথা উল্লেখ নিজ অসীম ক্ষমতা ও অনন্য সৃষ্টিকৌশল প্রকাশ করার জন্য করেছেন। এ ছাড়া তিনি এ কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এ সকল আকাশের সৌন্দর্য স্বরূপ সৃষ্ট।
(আরো দ্রষ্টব্য সূরা ফুরক্বানের ৬১নং আয়াতের টীকা)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান