১১ সূরাঃ হূদ | Hud | سورة هود - আয়াত নং - ৩৪ - মাক্কী

১১ : ৩৪ وَ لَا یَنۡفَعُكُمۡ نُصۡحِیۡۤ اِنۡ اَرَدۡتُّ اَنۡ اَنۡصَحَ لَكُمۡ اِنۡ كَانَ اللّٰهُ یُرِیۡدُ اَنۡ یُّغۡوِیَكُمۡ ؕ هُوَ رَبُّكُمۡ ۟ وَ اِلَیۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿ؕ۳۴﴾

‘আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের কোন উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ তোমাদের বিভ্রান্ত করতে চান। তিনি তোমাদের রব এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে’। আল-বায়ান

আমি তোমাদের কোন কল্যাণ করতে চাইলেও আমার কল্যাণ কামনা তোমাদের কোন উপকারে আসবে না যদি আল্লাহ তোমাদেরকে পথহারা করতে চান। তিনিই তোমাদের রবব, আর তাঁর কাছেই তোমরা ফিরে যাবে।’’ তাইসিরুল

আর আমার মঙ্গল কামনা (নাসীহত) করা তোমাদের উপকারে আসতে পারেনা, তা আমি তোমাদের যতই মঙ্গল কামনা করতে চাইনা কেন, যদি আল্লাহরই তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা হয়। তিনিই তোমাদের রাব্ব, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। মুজিবুর রহমান

And my advice will not benefit you - although I wished to advise you - If Allah should intend to put you in error. He is your Lord, and to Him you will be returned." Sahih International

৩৪. আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে চান।(১) তিনিই তোমাদের রব এবং তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।

(১) অর্থাৎ আল্লাহ যদি তোমাদের হঠকারিতা, দুর্মতি এবং সদাচারে অনাগ্রহ দেখে এ ফায়সালা করে থাকেন যে, তোমাদের সঠিক পথে চলার সুযোগ আর দেবেন না এবং যেসব পথে তোমরা উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াতে চাও সেসব পথে তোমাদের ছেড়ে দেবেন তাহলে এখন আর তোমাদের কল্যাণের জন্য আমার কোন প্রচেষ্টা সফলকাম হতে পারে না। আল্লাহ্ তা'আলা নুহ আলাইহিস সালামকে প্রায় এক হাজার বছরের দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত প্রাণপন চেষ্টা করা সত্ত্বেও তারা যখন ঈমান আনলনা তখন তিনি আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের দরবারে তাদের সম্পর্কে ফরিয়াদ করলেন- “নিশ্চয় আমি আমার জাতিকে দিবা রাত্রি দাওয়াত দিয়েছি। কিন্তু আমার দাওয়াত তাদের শুধু সত্যপথ থেকে পলায়নের প্রবণতাই বৃদ্ধি করেছে।” [সূরা নূহঃ ৫–৬] সুদীর্ঘকাল যাবত অসহনীয় কষ্ট ক্লেশ ভোগ করার পর তিনি দোআ করলেন, “হে আল্লাহ আমাকে সাহায্য করুন, কারণ তারা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে।”[সুরা আল মুমিনুনঃ ৩৯]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৪) আর আমি যদি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাই, তবুও আমার উপদেশ তোমাদের কোন উপকারে আসবে না; যদি আল্লাহই তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা রাখেন।[1] তিনিই তোমাদের প্রতিপালক। আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।’ [2]

[1] إِغْوَآءٌ এর অর্থ হল পথভ্রষ্ট করা। অর্থাৎ, তোমাদের কুফরী ও অস্বীকার করা এমন পর্যায়ে পৌছে যায়, যেখান থেকে ফিরে আসা এবং হিদায়াত পাওয়া অসম্ভব। উক্ত অবস্থাকে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মোহর লাগিয়ে দেওয়া বলা হয়। যার পরে হিদায়াতের আর কোন আশা করা যায় না। উদ্দেশ্য এই যে, যদি তোমরাও সেই বিপদ সীমায় পৌঁছে গেছ, তাহলে যদিও আমি তোমাদের মঙ্গল কামনা করি; অর্থাৎ সঠিক পথের দিশা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি, তবুও এই মঙ্গল কামনা ও চেষ্টা তোমাদের জন্য ফলপ্রসূ হবে না, কারণ তোমরা ভ্রষ্টতার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছ।

[2] হিদায়াত ও ভ্রষ্টতাও তাঁরই হাতে আছে এবং তাঁরই নিকট সকলকে ফিরে যেতে হবে, যেখানে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমলের প্রতিদান দেবেন। ভাল লোকদেরকে তাদের ভাল আমলের প্রতিদান এবং মন্দ লোকদেরকে তাদের মন্দ আমলের প্রতিফল দেবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান