৫ সূরাঃ আল-মায়েদা | Al-Ma'ida | سورة المائدة - আয়াত নং - ১০০ মাদানী
বল, ‘অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে মুগ্ধ করে। অতএব হে বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা, আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। যাতে তোমরা সফলকাম হও’। আল-বায়ান
বল, অপবিত্র আর পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্র বস্তুর প্রাচুর্য তোমাকে আকৃষ্ট করে। কাজেই হে জ্ঞানী সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। তাইসিরুল
তুমি বলে দাওঃ পবিত্র ও অপবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে। অতএব হে জ্ঞানীগণ! আল্লাহকে ভয় করতে থাক যেন তোমরা (পূর্ণ) সফলকাম হতে পার। মুজিবুর রহমান
Say, "Not equal are the evil and the good, although the abundance of evil might impress you." So fear Allah, O you of understanding, that you may be successful. Sahih International
১০০. বলুন, মন্দ ও ভাল এক নয়(১) যদিও মন্দের আধিক্য তোমাকে(২) চমৎকৃত করে(৩)। কাজেই হে বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরা! তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
(১) (الْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ) আরবী ভাষায় দুটি বিপরীত শব্দ। প্রত্যেক উৎকৃষ্ট বস্তুকে الطَّيِّب এবং প্রত্যেক নিকৃষ্ট বস্তুকে الْخَبِيث বলা হয়। অর্থাৎ কোন প্রকার خَبِيْث এর সাথেই কোন প্রকার طَيِّب এর তুলনা চলে না। আয়াতে خَبِيْث শব্দ দ্বারা হারাম ও অপবিত্র এবং طَيِّب শব্দ দ্বারা হালাল ও পবিত্র বস্তুকে বোঝানো হয়েছে। অতএব, আয়াতের অর্থ এই যে, আল্লাহ্ তা'আলার দৃষ্টিতে, এমনকি প্রত্যেক সুস্থ্য বুদ্ধিমান লোকের দৃষ্টিতে, পবিত্র ও অপবিত্র এবং হালাল ও হারাম সমান হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে (الْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ) শব্দ দুটি স্বীয় ব্যাপকতার দিক দিয়ে হালাল ও হারাম অর্থ-সম্পদ, উত্তম ও অধম মানুষ এবং ভাল ও মন্দ কাজ-কর্ম ও চরিত্রকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাই কোন বিচারেই সৎ ও অসৎ এবং ভাল ও মন্দ সমান নয়। এ স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহ তা'আলার কাছ থেকে হালাল ও হারাম কিংবা পবিত্র ও অপবিত্র বস্তু সমান নয়। ঈমান ও কুফর সমান নয়। জান্নাত ও জাহান্নাম সমান নয়। আনুগত্য ও অবাধ্যতা সমান নয়। সুন্নাতের অনুসারী ও বিদাআতের অনুসারী সমান নয়। [ইবন কাসীর, সা’দী, মুয়াসাসার]
(২) অর্থাৎ হে মানুষ যদিও খারাপ বস্তু তোমাকে চমৎকৃত করে তবুও খারাপ বস্তু ও ভালো বস্তু কখনও সমান হতে পারে না। এখানে সাধারণভাবে সকল মানুষকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর]
(৩) অর্থাৎ যদিও মাঝে মাঝে মন্দ ও অনুৎকৃষ্ট বস্তুর প্রাচুর্য দর্শকদের বিস্মিত করে দেয় এবং আশ-পাশে মন্দ ও অপবিত্র বস্তুর ব্যাপক প্রসারের কারণে সেগুলোকেই ভাল মনে করতে থাকে, কিন্তু আসলে এটি মানুষের অবচেতন মনের একটি রোগ এবং অনুভূতির ক্রটি বিশেষ। মন্দ বস্তু কখনও ভাল হতে পারে না। সুতরাং উপকারী হালাল বস্তু স্বল্প হলেও তা অপকারী হারাম বস্তু বেশী হওয়ার চেয়ে উত্তম। [ফাতহুল কাদীর] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অল্প ও প্রয়োজনের পক্ষে যথেষ্ট জিনিস সেই অধিক জিনিস হতে উত্তম যা মানুষকে আল্লাহর স্মরণ হতে গাফেল ও উদাসীন রাখে। [মুসনাদে আহমাদ ৫/১৯৭]
তাফসীরে জাকারিয়া(১০০) বল, ‘অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়; যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে।[1] সুতরাং হে বুদ্ধিশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’
[1] خبيث (অপবিত্র) এর ভাবার্থ হচ্ছে, হারাম অথবা কাফের অথবা পাপী অথবা খারাপ। طيب (পবিত্র) এর ভাবার্থ হচ্ছে, হালাল অথবা মু’মিন অথবা আনুগত্যশীল অথবা ভালো জিনিস; এ সবগুলি অর্থই উদ্দিষ্ট হতে পারে। উদ্দেশ্য এই যে, যার মধ্যে অপবিত্রতা থাকবে, তা কুফরী হোক অথবা পাপাচার অথবা অপকর্ম, তা কোন বস্তু হোক অথবা উক্তি; তা (সংখ্যা বা পরিমাণে) অধিক হওয়া সত্ত্বেও তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না, যার মধ্যে পবিত্রতা আছে। আর (খারাপ ও ভালো) এ দুই কখনও সমান হতে পারে না (যদিও খারাপ সংখ্যাগরিষ্ঠ)। কেননা অপবিত্রতা ও খারাবীর কারণে সেই জিনিসের উপকারিতা ও বরকত শেষ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যে জিনিসের মধ্যে পবিত্রতা ও কল্যাণ আছে তার উপকারিতা ও বরকত বৃদ্ধি পায়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান