কুরআনের আয়াতের অনুবাদ/তাফসীর 'টি ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code

৯২ সূরাঃ আল-লাইল | Al-Lail | سورة الليل - আয়াত নং - ১০ - মাক্কী

৯২ : ১০ فَسَنُیَسِّرُهٗ لِلۡعُسۡرٰی ﴿ؕ۱۰﴾

আমি তার জন্য কঠিন পথে চলা সুগম করে দেব। আল-বায়ান

আমি তার জন্য কঠিন পথ (অর্থাৎ অন্যায়, অসত্য, হিংসা ও হানাহানির পথ) সহজ করে দিব। তাইসিরুল

অচিরেই তার জন্য আমি সুগম করে দিব কঠোর পরিণামের পথ – মুজিবুর রহমান

We will ease him toward difficulty. Sahih International

১০. তার জন্য আমরা সুগম করে দেব কঠোর পথ।(১)

(১) অর্থ এই যে, যারা তাদের প্রচেষ্টা ও শ্রম প্রথমোক্ত তিন কাজে নিয়োজিত করে, (অর্থাৎ আল্লাহর পথে দান করা, আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করা এবং ঈমানকে সত্য মনে করা) তাদেরকে আমি সৎ ও উত্তম কাজের জন্যে সহজ করে দেই। পক্ষান্তরে যারা তাদের প্রচেষ্টা ও শ্রমকে শেষোক্ত তিন কাজে নিয়োজিত করে, আমি তাদেরকে খারাপ ও দুর্ভাগ্যের কাজের জন্য সহজ করে দেই। [মুয়াস্‌সার] এ আয়াতগুলোতে তাকদীরের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া আছে। হাদীসে এসেছে, আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা বাকী আল-গারকাদে এক জানাযায় এসেছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সেখানে আসলেন, তিনি বসলে আমরাও বসে গেলাম। তার হাতে ছিল একটি ছড়ি। তিনি সেটি দিয়ে মাটিতে খোচা দিচ্ছিলেন।

তারপর বললেন, “তোমাদের প্রত্যেকের এমনকি প্রতিটি আত্মারই স্থান জান্নাত কিংবা জাহান্নাম নির্ধারিত হয়ে গেছে। প্রত্যেকের ব্যাপারেই সৌভাগ্যশালী কিংবা দূর্ভাগা লিখে দেয়া হয়েছে। তখন একজন বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আমাদের লিখা গ্রন্থের উপর নির্ভর করে কাজ-কর্ম ছেড়ে দেব না? কারণ, যারা সৌভাগ্যশালী তারা তো অচিরেই সৌভাগ্যের দিকে ধাবিত হবে, আর যারা দূৰ্ভাগা তারা দূর্ভাগ্যের দিকে ধাবিত হবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যারা সৌভাগ্যশালী তাদের জন্য সৌভাগ্যপূর্ণ কাজ করা সহজ করে দেয়া হবে, পক্ষান্তরে যারা দূৰ্ভাগা তাদের জন্য দূর্ভাগ্যপূর্ণ কাজ করা সহজ করে দেয়া হবে। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন।” [বুখারী: ৪৯৪৮, মুসলিম: ২৬৪৭] [বাদা’ই’উত তাফসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

১০। অচিরেই তার জন্য আমি সুগম করে দেব (জাহান্নামের) কঠোর পরিণামের পথ।[1]

[1] عُسرَى (সংকীর্ণতা বা কঠোর পরিণামের পথ) বলতে কুফর, অবাধ্যতা ও মন্দ পথকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, তার জন্য আমি অবাধ্যতার পথ আসান করে দেব। যার কারণে তার জন্য ভাল ও সৌভাগ্যের পথ জটিল হয়ে যাবে। কুরআন মাজীদে কয়েক জায়গায় এই বিষয়কে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি ভাল ও হিদায়াতের পথ অবলম্বন করে, তার প্রতিদানে আল্লাহ তাকে মঙ্গলের তওফীক দান করেন। আর যে ব্যক্তি মন্দ ও অবাধ্যতার পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তাকে সেই অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। আর এটা সেই ভাগ্য অনুযায়ী হয়, যা আল্লাহ নিজ ইলম অনুসারে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। (ইবনে কাসীর) এই বিষয়টি হাদীসেও বর্ণিত হয়েছে। নবী (সাঃ) বলেছেন, তোমরা আমল কর। প্রত্যেক ব্যক্তিকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ সহজ করে দেওয়া হয়। যে সৌভাগ্যবান, তাকে সৌভাগ্যবানের কাজের জন্য তওফীক দেওয়া হয়। আর যে দুর্ভাগ্যবান, তাকে দুর্ভাগ্যবানের কাজের তওফীক দেওয়া হয়। (সহীহ বুখারীঃ সূরা লাইলের তফসীর পরিচ্ছেদ।)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান