৭৫ সূরাঃ আল-ক্বিয়ামাহ | Al-Qiyama | سورة القيامة - আয়াত নং - ২৩ - মাক্কী
তাদের রবের প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপকারী। আল-বায়ান
তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে। তাইসিরুল
তারা তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে। মুজিবুর রহমান
Looking at their Lord. Sahih International
২৩. তারা তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে।(১)
(১) অর্থাৎ সেদিন কিছু মুখমন্ডল হাসি-খুশী ও সজীব হবে এবং তারা তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আখেরাতে জান্নাতীগণ স্বচক্ষে আল্লাহ তা'আলার দীদার (দর্শন) লাভ করবে। আহলে সুন্নাত-ওয়াল-জামা'আতের সকল আলেম ও ফেকাহবিদ এ বিষয়ে একমত। বহু সংখ্যক হাদীসে এর যে ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে তাহলো, আখেরাতে আল্লাহর নেককার বান্দাদের আল্লাহর সাক্ষাত লাভের সৌভাগ্য হবে। এক হাদীসে এসেছে, “তোমরা প্রকাশ্যে সুস্পষ্টভাবে তোমাদের রবকে দেখতে পাবে” [বুখারী: ৭৪৩৫, ৫৫৪, ৪৭৩, ৪৮৫১, ৭৪৩৪, ৭৪৩৬]
অন্য হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বেহশতবাসীরা বেহেশতে প্ৰবেশ করার পর আল্লাহ তা'আলা তাদের জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা কি চাও যে, আমি তোমাদের আরো কিছু দান করি? তারা আরয করবে, আপনি কি আমাদের চেহারা দীপ্তিময় করেননি? আপনি কি আমাদের জান্নাতে প্ৰবেশ করাননি এবং জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেননি? তখন আল্লাহ তা’আলা পর্দা সরিয়ে দেবেন। ইতিপুর্বে তারা যেসব পুরস্কার লাভ করেছে তার কোনটিই তাদের কাছে তাদের রবের সাক্ষাতলাভের সম্মান ও সৌভাগ্য থেকে অধিক প্রিয় হবে না। এটিই হচ্ছে সে অতিরিক্ত পুরস্কার যার কথা কুরআনে এভাবে বলা হয়েছে, অর্থাৎ “যারা নেক কাজ করেছে তাদের জন্য উত্তম পুরস্কার রয়েছে। আর এ ছাড়া অতিরিক্ত পুরস্কারও রয়েছে।” [সূরা ইউনুস: ২৬] [মুসলিম: ১৮১, তিরমিযী: ২৫৫২, মুসনাদে আহমাদ: ৪/৩৩৩]
অন্য হাদীসে এসেছে, সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল, আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাবো? জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যখন মেঘের আড়াল থাকে না তখন সূর্য ও চাঁদকে দেখতে তোমাদের কি কোন কষ্ট হয়? সবাই বলল, না। তিনি বললেন, তোমরা তোমাদের রবকে এরকমই স্পষ্ট দেখতে পাবে। [বুখারী: ৭৪৩৭, মুসলিম: ১৮২] এ সমস্ত হাদীস এবং অন্য আরো বহু হাদীসের ভিত্তিতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীগণ প্ৰায় সর্বসম্মতভাবেই এ আয়াতের যে অর্থ করেন তাহলো, জান্নাতবাসীগণ আখেরাতে মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভে ধন্য হবে। কুরআন মজীদের এ আয়াত থেকেও তার সমর্থন পাওয়া যায়। “কক্ষনো নয়, তারা (অর্থাৎ পাপীগণ)” সেদিন তাদের রবের সাক্ষাৎ থেকে বঞ্চিত হবে। [সূরা আল-মুতাফফিফীন: ১৫] এ থেকে স্বতই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, এ বঞ্চনা হবে পাপীদের জন্য নেককারদের জন্য নয়। [দেখুন: ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(২৩) তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে। [1]
[1] এটা হবে ঈমানদারদের চেহারা। তারা নিজেদের শুভ পরিণামের কারণে বড়ই প্রশান্ত, প্রসন্ন ও দীপ্তিমান হবে। এ ছাড়া তারা আল্লাহর মুখমন্ডল দর্শন লাভেও ধন্য হবে। যা সহীহ হাদীসসমূহে সুসাব্যস্ত এবং আহলে-সুন্নাহর সর্বসম্মত আকীদাও এটাই।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান