২০ সূরাঃ ত্ব-হা | Ta-Ha | سورة طه - আয়াত নং - ৩২ - মাক্কী
এবং তাকে আমার কাজে শরীক করুন’। আল-বায়ান
আমার কাজে তাকে অংশীদার কর। তাইসিরুল
এবং তাকে আমার কাজে অংশী করুন। মুজিবুর রহমান
And let him share my task Sahih International
৩২. এবং তাকে আমার কাজে অংশীদার করুন,(১)
(১) পঞ্চম দো'আ হচ্ছে, হারূনকে নবুওয়াত ও রিসালাতেও শরীক করুন। মূসা ‘আলাইহিস সালাম তার দো'আয় প্রথমে অনির্দিষ্টভাবে বলেছেন যে, উযীর আমার পরিবারভুক্ত লোক হওয়া চাই। অতঃপর নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে, আমি যাকে উযীর করতে চাই, তিনি আমার ভাই হারূন- যাতে রিসালাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতে আমি তার কাছ থেকে শক্তি অর্জন করতে পারি। হারূন আলাইহিস সালাম মূসা আলাইহিস সালাম থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন এবং মূসার পূর্বেই মারা যান। বর্ণিত আছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা একবার উমরায় বের হলে পথিমধ্যে এক বেদুঈনের মেহমান হলেন। তিনি তখন দেখলেন, তাদের একজন তার সাথীদের প্রশ্ন করছে, দুনিয়াতে কোন ভাই তার ভাইয়ের সবচেয়ে বড় উপকার করেছে? তারা বলল, জানি না। লোকটা বলল, মূসা। যখন সে তার ভাইয়ের জন্য নবুওয়াত চেয়ে নিল। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি বললাম, সত্য বলেছে। আর এজন্যই আল্লাহ তার প্রশংসায় বলেছেন, “আর আল্লাহর কাছে তিনি মর্যাদাবান।” [সূরা আল-আহযাব: ৬৯] [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩২) এবং তাকে আমার কর্মে অংশী কর।[1]
[1] কথিত আছে যে, মূসা (আঃ) যখন ফিরআউনের রাজ-প্রাসাদে লালিত-পালিত হচ্ছিলেন তখন এক (পরীক্ষার) সময় তিনি খেজুর বা মুক্তার বদলে আগুনের অঙ্গারটুকরো মুখে ভরে নিয়েছিলেন। যার ফলে তাঁর জিভ পুড়ে যায় এবং তিনি তোতলা হয়ে যান। (ইবনে কাসীর) যখন আল্লাহ তাঁকে আদেশ করলেন যে, তুমি ফিরআউনের কাছে যাও এবং আমার পয়গাম তাকে পৌঁছে দাও তখন মূসা (আঃ)-এর অন্তরে দুটি কথার উদ্রেক হয়; প্রথম এই যে, ফিরআউন অত্যন্ত দোর্দন্ড-প্রতাপ ও অহংকারী রাজা; বরং প্রতিপালক ও প্রভু হওয়ার পর্যন্ত দাবীদার। আর দ্বিতীয় এই যে, তাঁর হাতে ফিরআউনের জাতিভুক্ত একটি লোক (ভুলক্রমে) খুন হয়েছিল, যার কারণে তিনি নিজের জীবন রক্ষার্থে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ এক ফিরআউনের প্রতাপ ও পরাক্রমশালিতার, আর দুই নিজের হাতে ঘটে যাওয়া খুনের বদলার আশঙ্কা। অন্য একটি তৃতীয় জিনিস তা হল, তোতলামি বা জিহ্বার জড়তা। মূসা (আঃ) দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! আমার হৃদয় উন্মুক্ত কর; যাতে আমি রিসালাতের বোঝা বইতে পারি। আমার কাজ সহজ করে দাও; অর্থাৎ যে গুরুদায়িত্ব আমার উপর অর্পণ করেছ, তাতে আমার সাহায্য কর। আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও, যাতে আমি ফিরআউনের সামনে তোমার পয়গাম পূর্ণভাবে পৌঁছাতে পারি এবং প্রয়োজনে জবানী প্রতিরক্ষা করতে পারি। সেই সাথে এই দু’আও করলেন যে, আমার ভাই হারূনকে (যিনি বয়সে মূসার চেয়ে বড় ছিলেন) আমার পৃষ্ঠপোষক ও সহায়ক হিসাবে আমার উজির ও সহকর্মী বানিয়ে দাও। وَزِير শব্দটি مُوَازِر এর অর্থে, অর্থাৎ অপরের বোঝা বহনকারী। যেরূপ একজন উজির (মন্ত্রী) রাজার বোঝা বহন করেন ও রাজ্য পরিচালনায় তাঁর উপদেষ্টা হন, সেইরূপ হারূন (আঃ) আমার উপদেষ্টা ও বোঝা বহনকারী সঙ্গী হোক।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান