কুরআনের আয়াতের অনুবাদ/তাফসীর 'টি ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code

১৫ সূরাঃ আল-হিজর | Al-Hijr | سورة الحجر - আয়াত নং - ৪৪ - মাক্কী

১৫ : ৪৪ لَهَا سَبۡعَۃُ اَبۡوَابٍ ؕ لِكُلِّ بَابٍ مِّنۡهُمۡ جُزۡءٌ مَّقۡسُوۡمٌ ﴿۴۴﴾

‘তার সাতটি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী’। আল-বায়ান

তার সাতটা দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্য তাদের মধ্যে শ্রেণী নির্দিষ্ট আছে।’ তাইসিরুল

ওর সাতটি দরযা আছে, প্রত্যেক দরযার জন্য পৃথক পৃথক দল আছে। মুজিবুর রহমান

It has seven gates; for every gate is of them a portion designated." Sahih International

৪৪. সেটার সাতটি দরজা আছে(১), প্রত্যেক দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য (শয়তানের অনুসারীদের) নির্দিষ্ট অংশ রয়েছে(২)

(১) এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হলো যে, জাহান্নামের সাতটি দরজা রয়েছে, তাছাড়া এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীসও রয়েছে। [দেখুনঃ সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ৪৬৬৩] এগুলো অপরাধ অনুসারে শাস্তি দেয়ার জন্য একই জাহান্নামের বিভিন্ন স্তর। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, জাহান্নামের দরজা সাতটি, সেগুলো একটির উপরে আরেকটি। প্রথমটি পূর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয়টি তারপর তৃতীয়টি, এভাবে সবগুলো পূর্ণ হবে। ইকরিমা বলেন, জাহান্নামের সাত দরজার অর্থ, সাত তলা। ইবন জুরাইজ বলেন, প্রথমটি জাহান্নাম, দ্বিতীয়টি লাযা, তৃতীয়টি হুতামা, চতুর্থটি সায়ীর, পঞ্চমটি সাকার, ষষ্ঠটি জাহীম, আর সপ্তমটি হা-ওয়ীয়াহ। [ইবন কাসীর]

(২) যেসব গোমরাহী ও গোনাহের পথ পাড়ি দিয়ে মানুষ নিজের জন্য জাহান্নামের পথের দরজা খুলে নেয় সেগুলোর প্রেক্ষিতে জাহান্নামের এ দরজাগুলো নির্ধারিত হয়েছে। যেমন কেউ নাস্তিক্যবাদের পথ পাড়ি দিয়ে জাহান্নামের দিকে যায়। কেউ যায় শির্কের পথ পাড়ি দিয়ে, কেউ মুনাফিকীর পথ ধরে, কেউ প্রবৃত্তি পূজা, কেউ অশ্লীলতা ও ফাসেকী, কেউ জুলুম, নিপীড়ন ও নিগ্রহ, আবার কেউ ভ্রষ্টতার প্রচার ও কুফরীর প্রতিষ্ঠা এবং কেউ অশ্লীলতা ও নৈতিকতা বিরোধী কার্যকলাপের প্রচারের পথ ধরে জাহান্নামের দিকে যায়। আবার জাহান্নামেও তাদের শাস্তির পর্যায় হবে ভিন্ন ভিন্ন। হাদীসে এসেছে, “তাদের কাউকে কাউকে আগুন দু গোড়ালী পর্যন্ত আক্রমন করবে। আবার কারো কারো হবে কোমর পর্যন্ত। আর কারো কারো গর্দান পর্যন্ত পাকড়াও করবে”। [মুসলিমঃ ২৮৪৫]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৪) ওর সাতটি দরজা আছে; প্রত্যেক দরজার জন্য তাদের মধ্য থেকে পৃথক পৃথক দল আছে। [1]

[1] অর্থাৎ, প্রত্যেক দরজা এক এক ধরনের বিশেষ লোকেদের জন্য নিদিষ্ট হবে। যেমন একটি হবে মুশরিকদের জন্য, একটি হবে নাস্তিকদের জন্য, একটি হবে ধর্মদ্রোহীদের জন্য, একটি ব্যভিচারী, সুদখোর ও চোর-ডাকাত ইত্যাদিদের জন্য হবে আলাদা আলাদা। অথবা সাতটি দরজা বলতে জাহান্নামের সাতটি স্তরকে বুঝানো হয়েছে। প্রথমটির নাম জাহান্নাম, তারপর লাযা, তারপর হুত্বামাহ, তারপর সায়ীর, তারপর সাক্বার, তারপর জাহীম, তারপর হাবিয়াহ। সবার উপরের স্তরটি আল্লাহর একতত্ত্ববাদে বিশ্বাসীদের জন্য হবে। তাদেরকে (পাপ অনুপাতে) কিছুদিন শাস্তি দেওয়ার পর অথবা কারো সুপারিশের পর বের করে নেওয়া হবে। দ্বিতীয়টিতে ইয়াহুদী, তৃতীয়টিতে খ্রিষ্টান, চতুর্থটিতে সবী, পঞ্চমটিতে অগ্নিপূজক, ষষ্ঠটিতে মুশরিক এবং (সর্বনিম্ন স্তর) সপ্তমটিতে মুনাফিকরা থাকবে। সবচেয়ে উপরের স্তরটির নাম জাহান্নাম তার পর পর্যায়ক্রমে যেমন উল্লেখ হয়েছে। (ফাতহুল কাদীর)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান