কুরআনের আয়াতের অনুবাদ/তাফসীর 'টি ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code

১৩ সূরাঃ আর-রাদ | Ar-Ra'd | سورة الرعد - আয়াত নং - ১৫ মাদানী

১৩ : ১৫ وَ لِلّٰهِ یَسۡجُدُ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّ كَرۡهًا وَّ ظِلٰلُهُمۡ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ ﴿ٛ۱۵﴾ (سُجود‎‎)

আর আল্লাহর জন্যই আসমানসমূহ ও যমীনের সবকিছু অনুগত ও বাধ্য হয়ে সিজদা করে এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের ছায়াগুলোও। [সাজদাহ] ۩ আল-বায়ান

আসমানে আর যমীনে যা কিছু আছে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর প্রতি সাজদাহয় অবনত হয় আর তাদের ছায়াগুলোও। [সাজদাহ] ۩ তাইসিরুল

আল্লাহর প্রতি সাজদাহবনত হয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকাল-সন্ধ্যায়। [সাজদাহ] ۩ মুজিবুর রহমান

And to Allah prostrates whoever is within the heavens and the earth, willingly or by compulsion, and their shadows [as well] in the mornings and the afternoons. Sahih International

১৫. আর আল্লাহর প্রতিই সিজদাবনত হয় আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায়(১) এবং তাদের ছায়াগুলোও সকাল ও সন্ধ্যায়(২)। [সাজদাহ] ۩

(১) সিজদা মানে আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য ঝুঁকে পড়া, আদেশ পালন করা এবং পুরোপুরি মেনে নিয়ে মাথা নত করা। পৃথিবী ও আকাশের প্রত্যেকটি সৃষ্টি আল্লাহর আইনের অনুগত এবং তাঁর ইচ্ছার চুল পরিমাণও বিরোধিতা করতে পারে না -এ অর্থে তারা প্রত্যেকেই আল্লাহকে সিজদা করছে। মুমিন স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে তাঁর সামনে নত হয় কিন্তু কাফেরকে বাধ্য হয়ে নত হতে হয়। কারণ আল্লাহর প্রাকৃতিক আইনের বাইরে চলে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। আর তারা নিজেরা স্রষ্টার মুখাপেক্ষী এটা প্রমাণ করছে। [কুরতুবী]

(২) তাদের ছায়াগুলো নত হওয়া ও সিজদা করার মানে হচ্ছে, ছায়ার সকাল-সাঁঝে পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ে সিজদা করা। এ এমন একটি আলামত যা থেকে বুঝা যায় যে, এসব জিনিস কারো হুকুমের অনুগত এবং কারোর নিয়ন্ত্রণাধীন। [কুরতুবী] মুফাসসিরগণ বলেন, সিজদাকারীদের কেউ ইচ্ছাকৃত আল্লাহর সিজদা করে আবার কেউ করে অনিচ্ছাকৃত কিন্তু তাদের ছায়াগুলো ঠিকই ইচ্ছাকৃতভাবে সিজদা করে। [বাগভী] মুজাহিদ বলেন, ঈমানদারের ছায়া ইচ্ছাকৃত সিজদা করে, আর সেও তা মেনে নিয়েছে। পক্ষান্তরে কাফেরের ছায়া ইচ্ছাকৃতভাবে সিজদা করে অথচ সে অপছন্দ করছে। [তাবারী] এ আয়াতের সমার্থে আরো এসেছে, “তারা কি লক্ষ্য করে না আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যার ছায়া ডানে ও বামে ঢলে পড়ে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হয়? [সূরা আন-নাহলঃ ৪৮]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৫) আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকাল ও সন্ধ্যায়।[1] [সাজদাহ] ۩

[1] এতে আল্লাহর মহিমা ও ক্ষমতার কথা উল্লেখ হয়েছে যে, প্রত্যেক বস্তুর উপর তাঁর আধিপত্য রয়েছে এবং প্রত্যেক বস্তু তাঁর অধীন ও তাঁর সামনে সিজদাবনত। চাহে মুমিনদের ন্যায় স্বেচ্ছায় করুক বা মুশরিকদের ন্যায় অনিচ্ছায়। তাদের ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায় সিজদা করে। যেমন তিনি অন্যত্র বলেন, ﴿أَوَ لَمْ يَرَوْاْ إِلَى مَا خَلَقَ اللهُ مِن شَيْءٍ يَتَفَيَّأُ ظِلاَلُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالْشَّمَآئِلِ سُجَّدًا لِله وَهُمْ دَاخِرُونَ﴾ অর্থাৎ, তারা কি লক্ষ্য করে না আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুর প্রতি যার ছায়া বিনীতভাবে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হয়ে ডানে ও বামে ঢলে পড়ে? (সূরা নাহল ৪৮) উক্ত সিজদার স্বরূপ কি? এটা মহান আল্লাহই ভাল জানেন। অথবা দ্বিতীয় অর্থ এর এই যে, কাফের সমেত সকল সৃষ্টি আল্লাহর আদেশাধীন, কারো তা লঙ্ঘন করার শক্তি নেই। আল্লাহ কাউকে সুস্থ করুন অথবা অসুস্থ, ধনী করুন অথবা কাঙ্গাল, জীবন দান করুন অথবা মৃত্যু। উক্ত সৃষ্টিমূলক নিয়মকে অমান্য করার শক্তি কোন কাফেরেরও নেই।

(এই আয়াত পাঠ করার পর সিজদা করা মুস্তাহাব। সিজদার আহকাম জানতে সূরা আ’রাফের শেষ আয়াতের টীকা দেখুন।)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান