কুরআনের আয়াতের অনুবাদ/তাফসীর 'টি ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code

১১ সূরাঃ হূদ | Hud | سورة هود - আয়াত নং - ৪১ - মাক্কী

১১ : ৪১ وَ قَالَ ارۡكَبُوۡا فِیۡهَا بِسۡمِ اللّٰهِ مَ‍‍جۡؔرٖىهَا وَ مُرۡسٰىهَا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۴۱﴾

আর সে বলল, ‘তোমরা এতে আরোহণ কর। এর চলা ও থামা হবে আল্লাহর নামে। নিশ্চয় আমার রব অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান

নূহ বলল, ‘এতে আরোহণ কর, আল্লাহর নামে এর গতি ও এর স্থিতি, আমার প্রতিপালক অবশ্যই বড়ই ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু।’ তাইসিরুল

আর সে বললঃ তোমরা এতে আরোহণ কর, এর গতি ও এর স্থিতি আল্লাহরই নামে; নিশ্চয়ই আমার রাব্ব ক্ষমাশীল, দয়াবান। মুজিবুর রহমান

And [Noah] said, "Embark therein; in the name of Allah is its course and its anchorage. Indeed, my Lord is Forgiving and Merciful." Sahih International

৪১. আর তিনি বললেন, তোমরা এতে আরোহন কর, আল্লাহর নামে এর গতি ও স্থিতি(১), আমার রব তো অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

(১) এ হলো মুমিনের সত্যিকার পরিচয়। কার্যকারণের এ জগতে সে অন্যান্য দুনিয়াবাসীর ন্যায় প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী সমস্ত উপায় ও কলাকৌশল অবলম্বন করে। কিন্তু সে উপায় ও কলা-কৌশলের উপর ভরসা করে না। ভরসা করে একমাত্র আল্লাহর উপর। আর এটি অনস্বীকার্য সত্য যে প্রত্যেকটি যানবাহনের গতি ও স্থিতি, নিয়ন্ত্রণ ও হেফাযত একমাত্র আল্লাহ তা'আলার কুদরতের অধীন। তাই আয়াতে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আপনার চলা ও থামা সবই আল্লাহর নামে হোক। আল্লাহর নির্দেশ ও কর্তৃত্বেই সেটি চলবে। [সা’দী] অন্য আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তাআলা নূহ আলাইহিস সালামকে এরপর বলেছিলেন যে, “যখন আপনি ও আপনার সংগীরা নৌযানের উপরে স্থির হবেন তখন বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাদেরকে উদ্ধার করেছেন যালেম সম্প্রদায় থেকে। আরো বলুন, হে আমার রব! আমাকে নামিয়ে দিন কল্যাণকরভাবে; আর আপনিই শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।” [সূরা মুমিনুন: ২৮–২৯]

আর এ জন্যই যখন কেউ কোন নৌকা কিংবা বাহনে উঠবে তার জন্য বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। যেমন আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, “আর যিনি সকল প্রকারের জোড়া যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এমন নৌযান ও গৃহপালিত জন্তু যাতে তোমরা আরোহণ কর; যাতে তোমরা এর পিঠে স্থির হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের রবের অনুগ্রহ স্মরণ করবে যখন তোমরা এর উপর স্থির হয়ে বসবে; এবং বলবে, ‘পবিত্ৰ-মহান তিনি, যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন। আর আমরা সমর্থ ছিলাম না এদেরকে বশীভূত করতে। [সূরা আয-যুখরুফ ১২–১৪] তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতেও এ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা এসেছে। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪১) সে বলল, ‘তোমরা এতে আরোহণ কর, এর গতি ও স্থিতি আল্লাহরই নামে;[1] নিশ্চয় আমার প্রতিপালক চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়াবান।’

[1] উক্ত বাক্য দ্বারা ঈমানদারগণকে সান্তনা ও সাহস দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল যে, নির্ভয়ে ও নিঃশঙ্ক চিত্তে কিশ্তীতে আরোহণ কর, আল্লাহ তাআলাই এই কিশ্তীর সংরক্ষক, তা তারই আদেশে চলবে ও তারই আদেশে থামবে। যেমন আল্লাহ তাআলা অন্য স্থানে বলেন, (فَإِذَا اسْتَوَيْتَ أَنْتَ وَمَنْ مَعَكَ عَلَى الْفُلْكِ فَقُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي نَجَّانَا مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ، وَقُلْ رَبِّ أَنْزِلْنِي مُنْزَلًا مُبَارَكًا وَأَنْتَ خَيْرُ الْمُنْزِلِينَ) অর্থাৎ, যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা কিশ্তীতে আরোহণ করবে, তখন বল, আল্লাহর যাবতীয় প্রশংসা, যিনি আমাদেরকে যালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে উদ্ধার করেছেন। আরও বল, পালনকর্তা! আমাকে এমনভাবে অবতরণ করাও, যা হবে কল্যাণকর; আর তুমিই শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।’’ (সূরা মু’মিনুন ২৮-২৯) কোন কোন উলামা কিশ্তী বা সওয়ারীতে আরোহণ করার সময় بِسْمِ اللَّهِ مَجْرَاهَا وَمُرْسَاهَا পড়া মুস্তাহাব বলেছেন। কিন্তু (سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ، وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ) আয়াত পড়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান