পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২৬৪-[৬৯] কতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আরবের গোত্ৰসমূহের কোন গোত্রের শহীদের সংখ্যা কিয়ামতের দিন আনসারদের তুলনায় অধিক এবং প্রিয়তর হবে বলে আমাদের জানা নেই। কতাদাহ্ (রাঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, তাঁদের মধ্য হতে সত্তরজন ’উহুদের দিন’, সত্তরজন “বী’রি মা’উনার দিন” এবং আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর খিলাফত ’আমলে, আর সত্তরজন ’ইয়ামামার দিন’ শহীদ হয়েছেন। (বুখারী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)
وَعَنْ قَتَادَةَ قَالَ مَا نَعْلَمُ حَيًّا مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ أَكْثَرَ شَهِيدًا أَعَزَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنَ الْأَنْصَارِ. قَالَ: وَقَالَ أَنَسٌ: قُتِلَ مِنْهُمْ يَوْمَ أُحُدٍ سَبْعُونَ وَيَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ سَبْعُونَ وَيَوْمَ الْيَمَامَةِ عَلَى عَهْدِ أَبِي بَكْرٍ سَبْعُونَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ
رواہ البخاری (4078) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (قُتِلَ مِنْهُمْ يَوْمَ أُحُدٍ سَبْعُونَ) তারা সবাই ছিলেন আনসার যেমনটি বলা যায়। মাত্র কিছু সংখ্যক ব্যতীত। উহুদের যুদ্ধে যেসব মুসলিম শহীদ হয়েছিলেন তাদের যে নাম ইবনু ইসহাক বর্ণনা করেছেন তাতে পঁয়ষট্টি জনে দাঁড়ায়। তন্মধ্যে চার জন হলেন মুহাজির। যারা হলেন- ১) হামযাহ্ ২) আবদুল্লাহ ইবনু জাহশ ৩) শাম্মাস ইবনু উসমান ৪) মু'আব ইবনু উমায়র। বেশি বাদ পড়েছেন হাত্বিব-এর দাস সা'দ। অবশ্য মূসা ইবনু উকবাহ্ তার নাম উল্লেখ করেছেন।
হাকিম (الاكليل) গ্রন্থে ও ইবনু মুনদিহ উবাই ইবনু কা'ব-এর হাদীসে বলেন, উহুদে নিহত আনসারদের সংখ্যা চৌষট্টি জন এবং মুহাজির ছয় জন। সম্ভবত ষষ্ঠ জন হবেন বানী ‘আবদ শামসের মিত্র সাকীফ ইবনু ‘আমর আল আসলামী। তাকে ওয়াকিদী তাদের মধ্যে গণ্য করেন। যারা উহুদে শহীদ হন তাদের মধ্যে আনসার নয় এমন ব্যক্তি হিসেবে হারিস ইবনু উবাহ্ ইবনু কুবস আল মুযানী, তাঁর চাচা ওয়াহব ইবনু কুবস, বান্ সা'দ ইবনু লায়স-এর ক্ষুদ্রতম শাখার আল হাবীব এর দুই একত্ববাদী সন্তান আবদুল্লাহ ও ‘আবদুর রহমান, খলফ ইবনু আওফ আল আসলামী-এর তনয়দ্বয় মালিক ও নু'মান-কে ইবনু সা'দ ধরেন। এ দু’জন ছিলেন রসূলের প্রথম সারির লোক। উভয়ে নিহত হন।
আমি বলি, সম্ভবত তারা আনসারদের মিত্র, তাদেরকেই গণ্য করা হয়েছে যদি তারা প্রথমেই গণনার বাহিরে থাকেন তবুও আনসারদের সংখ্যা সত্তর জনে পূর্ণ হবেন। আর নিহত মুসলিমদের মোট সংখ্যা সত্তরের চাইতে অধিক হবে। যে তাদের সত্তর জন শহীদ হয়েছেন বলে মত ব্যক্ত করেছেন, তিনি খুচরাদের সংখ্যাকে বাদ দিয়েছেন। আল্লাহই ভালো জানেন।
(يَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ سَبْعُونَ) স্পষ্টতই বলা যায় তাদের সকলেই আনসারী ছিলেন না। বরং তাদের কেউ কেউ মুহাজির ছিলেন। যেমন আবূ বাকর (রাঃ)-এর মুক্ত দাস আমির ইবনু ফাহীরাহ, নাফি ইবনু ওরাকা আল খুযা'ঈ প্রমুখ ব্যক্তিরা মুহাজির ছিলেন।
(وَيَوْمَ الْيَمَامَةِ عَلَى عَهْدِ أَبِي بَكْرٍ سَبْعُونَ) যারা রিদ্দার যুদ্ধে তরবারির মতো তেজস্বী ও শক্তিশালীদের শ্রেণিভুক্ত হয়েছিলেন তাদের নাম বর্ণিত হয়েছে। (ফাতহুল বারী হা, ৪০৭৮)।
ইয়ামামার যুদ্ধের দিন বলতে যারা আবূ বাকর (রাঃ)-এর সময় মুসায়লামাহ্ কাযযাব-এর সাথে যুদ্ধ করার জন্য বের হয়েছিলেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৭)।