৬২২১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২২১-[২৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর সিদ্দীক ও ’আব্বাস (রাঃ) একদিন আনসারদের কোন এক বৈঠকের কাছ দিয়ে গমন করেন। এ সময় তারা কাঁদছিল। তা দেখে এঁরা উভয়ে প্রশ্ন করলেন, আপনারা কাঁদছেন কেন? তারা বললেন, আমাদের সাথে নবী (সা.)-এর উঠাবসার কথা আমরা স্মরণ করছিলাম। অতঃপর তাঁদের একজন নবী (সা.) -এর কাছে গেলেন এবং তাঁকে এ ব্যাপারে অবহিত করলেন। তখন নবী (সা.) একটি চাদরের এক প্রান্ত মাথায় বাঁধা অবস্থায় ঘর হতে বাইরে এসে মিম্বারে আরোহণ করলেন। ঐ দিনের পর তিনি আর মিম্বারে আরোহণ করেননি। অতঃপর তিনি (সা.) আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলি উল্লেখ করলেন, তারপর বললেন, আনসারদের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখার জন্য তোমাদেরকে আমি ওয়াসিয়্যাত করে যাচ্ছি। কেননা তারা আমার অন্তরঙ্গ এবং আমার বিশ্বস্ত। তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব তারা যথাযথ সম্পাদন করেছেন, কিন্তু তাদের উত্তম লোকেদের (উত্তম কাজকে) তোমরা সানন্দে গ্রহণ কর এবং তাঁদের মন্দ লোকেদের (মন্দকে) তোমরা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখ। (বুখারী)

الفصل الاول (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْهُ قَالَ: مَرَّ أَبُو بَكْرٍ وَالْعَبَّاسُ بِمَجْلِسٍ من مجَالِس الْأَنْصَار وهم يَبْكُونَ فَقَالَ: مَا يُبْكِيكُمْ؟ قَالُوا: ذَكَرْنَا مَجْلِسَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَّا فَدَخَلَ أَحَدُهُمَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِذَلِكَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ عَصَّبَ عَلَى رَأْسِهِ حَاشِيَةَ بُرْدٍ فَصَعِدَ الْمِنْبَر وَلم يَصْعَدهُ بعد ذَلِك الْيَوْم. فَحَمدَ الله وَأَثْنَى عَلَيْهِ. ثُمَّ قَالَ: «أُوصِيكُمْ بِالْأَنْصَارِ فَإِنَّهُمْ كَرِشِي وَعَيْبَتِي وَقَدْ قَضَوُا الَّذِي عَلَيْهِمْ وَبَقِيَ الَّذِي لَهُمْ فَاقْبَلُوا مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَتَجَاوَزُوا عَنْ مسيئهم» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3799) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: مر ابو بكر والعباس بمجلس من مجالس الانصار وهم يبكون فقال: ما يبكيكم؟ قالوا: ذكرنا مجلس النبي صلى الله عليه وسلم منا فدخل احدهما على النبي صلى الله عليه وسلم فاخبره بذلك فخرج النبي صلى الله عليه وسلم وقد عصب على راسه حاشية برد فصعد المنبر ولم يصعده بعد ذلك اليوم. فحمد الله واثنى عليه. ثم قال: «اوصيكم بالانصار فانهم كرشي وعيبتي وقد قضوا الذي عليهم وبقي الذي لهم فاقبلوا من محسنهم وتجاوزوا عن مسيىهم» . رواه البخاري رواہ البخاری (3799) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, (ذَكَرْنَا مَجْلِسَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) অর্থাৎ আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বৈঠকের কথা মনে করছি। এ কথার মাধ্যমে আনসারগণ বুঝিয়েছেন যে, আমরা আশঙ্কা করছি যদি আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভাগ্যে মৃত্যু লিখে রাখেন তাহলে তো আমরা আর তার বৈঠকে বসতে পারব না। তারপর তাদের দুজনের একজন তথা ‘আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কছে প্রবেশ করে আনসারদের বিষয়টি জানালেন। তখন প্রচণ্ড ব্যথার কারণে রাসূলুল্লাহ (সা.) মাথায় পট্টি বেঁধে বের হয়ে মিম্বারে আরোহণ করে ভাষণ দিলেন।
হাদীসে উল্লেখিত ( كَرِشِي) শব্দের অর্থ নিয়ে কয়েকটি মত আছে। যেমন- তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর অর্থ হলো মানুষের নির্ভরতার স্থান। নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে এর অর্থ হলো, গোপন রহস্যের স্থান। কেউ কেউ বলেন, এর অর্থ হলো দল বা জামা'আত। (শারহুন নাবাবী ১৬শ খণ্ড, ৫৮ পৃ., হা, ২৫১০)
আর (كَرِشِىْ) শব্দের অর্থ হলো বিশেষ গোপন তথ্যের স্থান।
(وَقَدْ قَضَوُا الَّذِي عَلَيْهِمْ وَبَقِيَ الَّذِي لَهُمْ) অর্থাৎ তাদের ওপর যে দায়িত্ব ছিল তারা তা পালন করেছে। এখন তাদের জন্য প্রতিদান বাকী আছে। আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে বুঝানো হয়েছে যে, আনসারগণ ‘আকাবার রাতে যা ওয়াদা করেছিল, যেমন- তারা রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে সর্বাত্মক সাহায্য করবে। তা তারা করেছে এবং তাদের ওয়াদা ঠিক রেখেছে। এখন তাদের জন্য আল্লাহর কাছে সাওয়াব ও প্রতিদান বাকী আছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)