পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পবিত্র স্ত্রীগণের মর্যাদা
৬১৯৩-[১০] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। মক্কা বিজয়ের পর একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) ফাতিমাহকে নিজের কাছে নিয়ে চুপে চুপে কিছু কথা বললেন। তা শুনে ফাতিমাহ্ কেঁদে দিলেন। অতঃপর তিনি আবার তার সাথে কথা বললেন, এবার ফাতিমাহ্ হেসে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মৃত্যুর পর আমি ফাতিমাকে (ঐ দিন) কাঁদার ও হাসার কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, শীঘ্রই তিনি মৃত্যুবরণ করবেন, এটা শুনে আমি কেঁদেছি। তারপর তিনি (সা.) আমাকে বললেন, আমি মারইয়াম বিনতু ’ইমরান ছাড়া জান্নাতী সমস্ত নারীদের সরদার হব। এটা শুনে আমি হেসেছি। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ أَزْوَاجِ)
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعَا فَاطِمَةَ عَامَ الْفَتْحِ فَنَاجَاهَا فَبَكَتْ ثُمَّ حَدَّثَهَا فَضَحِكَتْ فَلَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَأَلْتُهَا عَنْ بُكَائِهَا وَضَحِكِهَا. قَالَتْ: أَخْبَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ يَمُوتُ فَبَكَيْتُ ثُمَّ أَخْبَرَنِي أَنِّي سَيِّدَةُ نِسَاءِ أَهْلِ الْجَنَّةِ إِلَّا مَرْيَمَ بِنْتَ عِمْرَانَ فَضَحِكْتُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3873) ۔
(إِسْنَاده جيد)
ব্যাখ্যা: মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীসের ঘটনাটি বর্ণনা করার ক্ষেত্রে কিছুটা সংশয় ঘটেছে। কেননা সিরাত বিশারদগণের কাছে এই ঘটনাটি মক্কা বিজয়ের বছর ঘটেছে বলে প্রমাণিত নয়। বরং তারা বলেন যে, এ ঘটনাটি ঘটেছে বিদায় হজ্জের বছর অথবা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মুমূর্ষ অবস্থায়।
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর একটি হাদীসে পূর্বেই বলা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় তিনি ফাতিমাকে তার হাসা ও কাঁদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু তখন তিনি তাকে উত্তর দেননি। তারপর আবার যখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মৃত্যুর পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো তখন তিনি এভাবে তার উত্তর দিলেন। যা উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-এর এই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। অন্য হাদীসে রয়েছে যে, ফাতিমাহ্ (রাঃ) -এর হাসার কারণ হলো যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এখন তাকে বলেছিলেন, আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারের মধ্য থেকে সর্বপ্রথম তোমার সাথে আমার সাক্ষাৎ হবে।
মিরক্বাতুল মাফাতীহ প্রণেতা বলেন, হ্যাঁ, এটিও হতে পারে। আর এতে পূর্ববর্তী বিষয়ের সাথেও কোন বৈপরীত্য নেই। হতে পারে দুটি বিষয় রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে জানিয়েছেন।
তুহফাতুল আহওয়াযীতে বলা হয়েছে, এ হাদীসে মারইয়াম বিনতু ‘ইমরান-কে বাদ দেয়ার কয়েকটি কারণ হতে পারে। সেগুলো হলো-
- তাকে বাদ দেয়ার মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে যে, মর্যাদার ক্ষেত্রে তারা উভয়ে সমান।
- ফাতিমার মর্যাদার চেয়ে মারইয়াম বিনতু “ইমরান-এর মর্যাদা বেশি।
লুম'আহ্ গ্রন্থে রয়েছে যে, এ হাদীসটি সম্ভবত রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে এ বিষয়টি জানানোর পূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, ফাতিমাহ (রাঃ) হলেন বিশ্বের নারীদের ওপর সবচেয়ে মর্যাদাবান। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ১ম খণ্ড, ৩৭৭ পৃ., হা, ৩৯০৫)