৬১৪০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬১৪০-[৬] যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) - মক্কাহ্ ও মদীনার মাঝামাঝি ’খুম নামক জলাশয়ের কাছে দাঁড়িয়ে আমাদেরকে ভাষণ দান করলেন। প্রথমে আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ণনা করলেন, এরপর ওয়াজ ও নাসীহত করলেন, অতঃপর বললেন, এটা (আম্মা বা’দ) সাবধান! হে লোকসকল! নিশ্চয় আমি একজন মানুষই, শীঘ্রই আমার কাছে আল্লাহর দূত (মালাকুল মাওত) আসবে, তখন আমি আমার রবের আহ্বানে সাড়া দেব। আমি তোমাদের মাঝে দুটি মূল্যবান সম্পদ রেখে যাচ্ছি। তন্মধ্যে প্রথমটি হলো, আল্লাহর কিতাব’, এর মধ্যে রয়েছে হিদায়াত ও জ্যোতি। অতএব, তোমরা আল্লাহর কিতাবকে খুব শক্তভাবে আঁকড়ে ধর এবং দৃঢ়তার সাথে তার বিধি-বিধান মেনে চল। (বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর কিতাবের নির্দেশাবলী শক্তভাবে মেনে চলার জন্য অনুপ্রাণিত করলেন। এরপর তিনি বললেন, (দ্বিতীয়টি হলো) আমার আহলে বায়ত সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষ নসীহত করছি। অপর এক বর্ণনাতে আছে, আল্লাহর কিতাব হলো আল্লাহর রশি। যে লোক তার আনুগত্য করবে, সে হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। আর যে তাকে পরিত্যাগ করবে, সে পথভ্রষ্ট, গোমরাহ হয়ে যাবে। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَابِ مَنَاقِبِ أَهْلِ)

وَعَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ: قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فِينَا خَطِيبًا بِمَاءٍ يُدْعَى: خُمًّا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَوَعَظَ وَذَكَّرَ ثُمَّ قَالَ: أمَّا بعدُ أَلا أيُّها النَّاس فَإِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ يُوشِكُ أَنْ يَأْتِيَنِي رَسُولُ رَبِّي فَأُجِيبَ وَأَنَا تَارِكٌ فِيكُمُ الثَّقَلَيْنِ: أَوَّلُهُمَا كِتَابُ اللَّهِ فِيهِ الْهُدَى وَالنُّورُ فَخُذُوا بِكِتَابِ اللَّهِ وَاسْتَمْسِكُوا بِهِ فَحَثَّ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ وَرَغَّبَ فِيهِ ثُمَّ قَالَ: «وَأَهْلُ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللَّهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللَّهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي» وَفِي رِوَايَة: «كتاب الله عز وَجل هُوَ حَبْلُ اللَّهِ مَنِ اتَّبَعَهُ كَانَ عَلَى الْهُدَى وَمَنْ تَرَكَهُ كَانَ عَلَى الضَّلَالَةِ» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (36 / 2408)، (6225) ۔
(صَحِيح)

وعن زيد بن ارقم قال: قام رسول الله صلى الله عليه وسلم يوما فينا خطيبا بماء يدعى: خما بين مكة والمدينة فحمد الله واثنى عليه ووعظ وذكر ثم قال: اما بعد الا ايها الناس فانما انا بشر يوشك ان ياتيني رسول ربي فاجيب وانا تارك فيكم الثقلين: اولهما كتاب الله فيه الهدى والنور فخذوا بكتاب الله واستمسكوا به فحث على كتاب الله ورغب فيه ثم قال: «واهل بيتي اذكركم الله في اهل بيتي اذكركم الله في اهل بيتي» وفي رواية: «كتاب الله عز وجل هو حبل الله من اتبعه كان على الهدى ومن تركه كان على الضلالة» . رواه مسلم رواہ مسلم (36 / 2408)، (6225) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (أَنَا تَارِكٌ فِيكُمُ الثَّقَلَيْنِ) এখানে দুটি ভারী জিনিসের কথা বলা হয়েছে: (১) আল্লাহর কিতাব, (২) তার পরিবারবর্গ। এ দুটিকে ভারী বলার কারণে হলো, উভয়ের প্রতি আমল করা ও অনুসরণ করা খুবই কঠিন। ফায়িক গ্রন্থকার বলেন, ভারী জিনিস হলো ঐ পণ্য সামগ্রী যা বহন করা হয় চতুষ্পদ জন্তুর উপর। মানুষ ও জিন্‌কে ভারী বলা হয়, কারণ জমিনের উপর এরাই সবচেয়ে ভারী জিনিস।
শারহুস সুন্নাহ গ্রন্থে বলা হয়েছে: আল্লাহর কিতাব ও আহলে বায়তকে ভারী বলার কারণে হলো, এ দু’টি গ্রহণ ও এর প্রতি দায়িত্ব পালন করা খুব কঠিন। অথবা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ অধিক কষ্ট ছাড়া পালন করা সম্ভব হয় না।
(أُذَكِّرُكُمُ اللَّهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي) আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আহলে বায়তের মর্যাদার প্রতি আমি তোমাদের সতর্ক করছি। আর আমি তোমাদের বলছি, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাদের কোন কষ্ট দিও না, আর তাদের মান-সম্মান সংরক্ষণ কর।
যায়দ (রাঃ)-কে আহলে বায়ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় নবী (সা.) -এর স্ত্রীগণ কি আহলে বায়তের অন্তর্ভুক্ত নয়? উত্তরে তিনি বলেন, হ্যাঁ। কিন্তু পরবর্তীতে যাদের ওপর সদাক্বার মাল হারাম করা হয়েছিল তাদেরকে আহলে বায়ত বলে গণ্য করা হত। তাকে বলা হলো তারা কারা? তিনি বললেন, তারা হলেন (১) ‘আলী (রাঃ)  (২) জা'ফার (রাঃ) (৩) “উকায়ল (রাঃ) ও (৪) ‘আব্বাস (রাঃ) -এর পরিবারবর্গ। তাকে বলা হলো, তাদের সকলের ওপর কি সদাক্বার মাল হারাম করা হয়েছিল? তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

শারহে মুসলিমে বলা হয়েছে, নবী (সা.) তাদের, সম্মান করতে বলেছেন এবং তাদের অধিকারের ব্যাপারে উপদেশ দিয়েছেন।
ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আহলে বায়ত হলো শুধু বানী হাশিম। অনেকে বলেন, বানূ হাশিম ও বানূ মুত্তালিব।
(كتاب الله عز وَجل هُوَ حَبْلُ اللَّهِ) মহান আল্লাহর কিতাব হলো আল্লাহর রশি’ এ বাক্য দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর অঙ্গীকার।
কেউ কেউ বলেন, এমন একটি যা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সঠিক পথের দিকে পৌছে দেয়। অনেকে বলেন, আল্লাহর আলো, যার দ্বারা সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। (শারহুন নাবাবী হা. ২৪০৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)