৫৯৭৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - অধ্যায় [রাসূলুল্লাহ (সা.) কোন প্রকার আর্থিক ওয়াসিয়্যাত করেননি- মর্মে আলোচনা]

৫৯৭৩-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর পর দীনার-দিরহাম, বকরি-উট কিছুই রেখে যাননি। আর কোন কিছুর ওয়াসিয়্যাতও করেননি। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب)

عَن عَائِشَةَ قَالَتْ: مَا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَلَا شَاةً وَلَا بَعِيرًا وَلَا أَوْصَى بِشَيْءٍ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

رواہ مسلم (18 / 1635)، (4229) ۔
(صَحِيح)

عن عاىشة قالت: ما ترك رسول الله صلى الله عليه وسلم دينارا ولا درهما ولا شاة ولا بعيرا ولا اوصى بشيء. رواه مسلم رواہ مسلم (18 / 1635)، (4229) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (وَلَا أَوْصَى بِشَيْءٍ) “আর রাসূল (সা.) এ কোন কিছুর ওয়াসিয়্যাত করেননি।” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রাসূল (সা.) আর্থিক কোন জিনিসের ওয়াসিয়্যাত করেননি। কেননা রাসূল (সা.) তার মৃত্যুর সময় কোন সম্পদ রেখে যাননি তাহলে তিনি কিভাবে ওয়াসিয়্যাত করে যাবেন? তবে বানূ নাযীর ও ফাদাক ভূমির বিষয়টি তিনি তাঁর জীবদ্দশায়ই বিবিদের বাৎসরিক খরচ বাদে যা উদ্বৃত্ত থাকত তা মুসলিমদের জন্য সদাকাহ্ করে দিয়েছিলেন।
এ স্থলে ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন, অন্য একটি রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে যে, যখন লোকেরা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর সম্মুখে এ বিষয়টি উল্লেখ করল যে, রাসূল (সা.) ‘আলী (রাঃ)-কে তাঁর ওয়ারিস নির্ধারিত করেছেন, তখন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) আশ্চর্য হয়ে বললেন, রাসূল (সা.) কখন ওয়াসিয়্যাত করলেন? আমি তো শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তথা রূহ কবয করা পর্যন্ত রাসূল (সা.) -এর নিকটেই উপস্থিত ছিলাম। যদি রাসূল (সা.) ‘আলী (রাঃ)-এর জন্য কোন ওয়াসিয়্যাত করতেন এবং তাঁকে স্বীয় ওয়ারিস তথা স্বীয় ধন-সম্পদের ওয়ারিস অথবা রক্ষক বানাতেন তাহলে তা আমার থেকে বেশি কেউ জানত না। যে সকল লোকে এ জাতীয় কথা বলে তারা ভুল বলে- রাসূল (সা.) ও কাউকে ওয়ারিস নিযুক্ত করেননি।
অতএব হাদীসের ভাষ্য “আর কোন কিছুর ওয়াসিয়্যাতও করেননি।”- এর আলোচ্য বিষয় হলো আর্থিক ওয়াসিয়্যাত। যার অর্থ হলো- রাসূল (সা.) স্বীয় ধন-সম্পদের এক-তৃতীয়াংশের ওয়াসিয়্যাত করেননি এবং এক-তৃতীয়াংশের অধিক বা কমেরও ওয়াসিয়্যাত করেননি। কেননা রাসূল (সা.)-এর নিকট এমন কোন স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল না যার তিনি ওয়াসিয়্যাত করবেন। তদ্রুপ তিনি (সা.) আলী (রাঃ)-এর জন্য কোন ওয়াসিয়্যাত করেননি এবং অন্য কারো জন্যও কোন ওয়াসিয়্যাত করেননি যেমনটি শী'আরা ভ্রান্ত করে। আর যে সকল সহীহ হাদীসে কিতাবুল্লাহ সম্পর্কে ওয়াসিয়্যাত করা বা বিভিন্ন গোত্রের প্রতিনিধিদের সাথে উত্তম ব্যবহার ও মেহমানদারীর ওয়াসিয়্যাত করার কথা উল্লেখ রয়েছে তা অন্য বিষয়বস্তু, যা হাদীসে উল্লেখিত ভাষ্য “আর কোন কিছুর ওয়াসিয়্যাতও করেননি দ্বারা উদ্দেশ্য নয়।
কতক ঐতিহাসিকগণ যে লিখেছেন- রাসূল (সা.) -এর নিকট বহু সংখ্যক উট ছিল ও দশটি উষ্ট্রীও ছিল এবং সেগুলোকে মদীনার নিকটবর্তী স্থানে রাখা হত, যেখান থেকে উষ্ট্রীর দুধ প্রতিদিন লোকেরা নিয়ে আসত। উপরন্তু রাসূল (সা.) -এর নিকট সাতটি বকরিও ছিল যেগুলোর দুধ রাসূল (সা.) পান করতেন। তো এ বর্ণনা প্রথমত ঐ জাতীয় নয় যে, উল্লেখিত হাদীসের সাথে তার বিরোধ হবে, দ্বিতীয়ত এ বর্ণনাকে সহীহ মেনে নেয়া হলে তখন এর উত্তরে বলা হবে যে, এ সকল উট ইত্যাদি সদাকার মাল ছিল এবং তা হতে যে দুধ আমদানি হত তা সুফফাবাসী ও অন্যান্য দরিদ্র-অসহায় শ্রেণির লোকেরা পান করত। (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২২১ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)