পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৯৩৪-[৬৭] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাত্রির বেলায় কুরায়শগণ মক্কায় পরামর্শ করল যে, সকাল হতেই তারা নবী (সা.)-কে রশি দ্বারা শক্ত করে বেঁধে ফেলবে। আবার কেউ বলল, বরং তাকে হত্যা করে ফেল। অন্য আরেকজন বলল, বরং তাকে দেশ হতে তাড়িয়ে দাও। আর এদিকে আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবী (সা.) -কে কাফিরদের ষড়যন্ত্রের কথা জানিয়ে দেন। অতঃপর আলী (রাঃ) নবী (সা.) -এর বিছানায় সেই রাত্রি যাপন করলেন এবং নবী (সা.) মক্কাহ্ হয়ে পর্বতের গুহায় গিয়ে আত্মগোপন করলেন, কিন্তু নবী (সা.) এ স্বীয় বিছানায় শুয়ে আছেন ধারণা করে সারাটি রাত্র মুশরিকরা ’আলী (রাঃ) -কে পাহারা দিতে থাকল। ভোর হতেই তারা নবী (সা.) -এর হুজরার উপর আক্রমণ করার জন্য অগ্রসর হলো। যখন তারা নবী (সা.)-এর স্থানে ’আলী (রাঃ)-কে দেখতে পেল, তখন (বুঝতে পারল যে,) তাদের ষড়যন্ত্র আল্লাহ তা’আলা প্রতিহত করে দিয়েছেন। অতঃপর তারা ’আলী (রাঃ) -কে প্রশ্ন করল, তোমার এই বন্ধু [নবী (সা.)] কোথায়? ’আলী (রাঃ) বললেন, আমি জানি না। তখন তারা নবী (সা.) -এর পদচিহ্ন অনুসরণ করে তার খোঁজে বের হয়ে পড়ল, কিন্তু উক্ত পর্বতের কাছে পৌঁছার পর পদচিহ্ন তাদের জন্য হজবরল ও সংশয়পূর্ণ হয়ে গেল। তবু তারা পাহাড়ের উপর উঠল এবং গুহার মুখে গিয়ে পৌছল। তারা দেখতে পেল, মাকড়সা গুহার দ্বারপথে জাল বুনে রেখেছে, তা দেখে তারা বলাবলি করল, যদি সে (মুহাম্মাদ) এ গুহার মাঝে প্রবেশ করত, তাহলে গুহার দ্বারে মাকড়সার জাল থাকত না। তারপর নবী (সা.) এ তিন রাত্র-দিবস তার ভিতরে অবস্থান করলেন। (আহমাদ)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب فِي المعجزا)
وَعَن ابْن عبَّاس قَالَ تَشَاوَرَتْ قُرَيْشٌ لَيْلَةً بِمَكَّةَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا أَصْبَحَ فَأَثْبِتُوهُ بِالْوِثَاقِ يُرِيدُونَ النَّبِيَّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلِ اقْتُلُوهُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ أَخْرِجُوهُ فَأطلع الله عز وَجل نَبِيَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى ذَلِكَ فَبَاتَ عَليّ عَلَى فِرَاشِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى لَحِقَ بِالْغَارِ وَبَاتَ الْمُشْرِكُونَ يَحْرُسُونَ عَلِيًّا يَحْسَبُونَهُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا أَصْبحُوا ثَارُوا إِلَيْهِ فَلَمَّا رَأَوْا عَلِيًّا رَدَّ اللَّهُ مَكْرَهُمْ فَقَالُوا أَيْنَ صَاحِبُكَ هَذَا قَالَ لَا أَدْرِي فَاقْتَصُّوا أَثَرَهُ فَلَمَّا بَلَغُوا الْجَبَلَ اخْتَلَطَ عَلَيْهِمْ فَصَعِدُوا فِي الْجَبَلَ فَمَرُّوا بِالْغَارِ فَرَأَوْا عَلَى بَابِهِ نَسْجَ الْعَنْكَبُوتِ فَقَالُوا لَوْ دَخَلَ هَاهُنَا لَمْ يَكُنْ نَسْجُ الْعَنْكَبُوتِ عَلَى بَابِهِ فَمَكَثَ فِيهِ ثَلَاثَ لَيَال. رَوَاهُ أَحْمد
اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (1 / 348 ح 3251) * فیہ عثمان الجزری بن عمرو بن ساج : فیہ ضعیف ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: কুরায়শ নেতারা নবী (সা.) -এর বিরূদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য দারুণ নাদওয়া-তে পরামর্শ সভায় মিলিত হয়েছিল। কথিত আছে যে, শয়তানও শায়খ নাজদীর আকৃতি ধারণ করে সেখানে উপস্থিত হয়েছিল এবং সে-ই নবী (সা.)-কে হত্যা করার পরামর্শ দেয়। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, (وَ اِذۡ یَمۡکُرُ بِکَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِیُثۡبِتُوۡکَ اَوۡ یَقۡتُلُوۡکَ اَوۡ یُخۡرِجُوۡکَ) “আর সেই ঘটনাও স্মরণ যখন কাফিররা আপনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করল যে, তারা আপনাকে বন্দি করে রাখবে অথবা আপনাকে নিহত করে রাখবে অথবা আপনাকে দেশান্তর করে দিবে”- (সূরা আল আনফাল ৮: ৩০)। হাদীসে এ বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত আছে।
(فَرَأَوْا عَلَى بَابِهِ نَسْجَ الْعَنْكَبُوتِ) অর্থাৎ তারা যখন গুহার মধ্যে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করল তখন তারা তার মুখে মাকড়সার বাসা দেখতে পেল। এটা দেখে তারা মন্তব্য করল যে, তারা যদি এখানে থাকত তবে এর দরজায় মাকড়সা জাল বাধলো কিভাবে? বলা হয়ে থাকে যে, যখন নবী (সা.) গুহার ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন আল্লাহ দুটি কবুতরকে পাঠিয়ে দেন। তারা তার নিচে ডিম পাড়ে। আর মাকড়সা সেখানে জাল তৈরি করে। বর্ণিত আছে, যে গর্তের উপরে উঠল, তারা যদি নিচের দিকে তাকাত তবে তাদেরকে দেখে ফেলত। এ দেখে আবূ বাকর (রাঃ) ভয় পেয়ে যান। তখন নবী (সা.) বলেন, হে আবূ বাকর! দু’জনের ব্যাপারে তোমার ধারণা কি, তৃতীয় জন হিসেবে তো আল্লাহ আছেন। আল্লাহ গুহা থেকে তাদের চোখকে অন্ধ করে দেন। ফলে তারা গুহার চারপাশে ঘুরতে লাগল কিন্তু তারা তাদেরকে দেখতে পেল না। অবশেষে তারা সেখান থেকে চলে গেল। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৮ম খণ্ড, হা. ৩০৬৪, মিরকাতুল মাফাতীহ)