৫৯৩১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা

৫৯৩১-[৬৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি খায়বার এলাকায় এক ইয়াহূদী মহিলা বকরির মাংসের ভুনা মধ্যে বিষ মিশ্রিত করে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর জন্য হাদিয়্যাহ্ পেশ করল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) এর তার বাহু হতে কিছু অংশ খেলেন এবং তাঁর কতিপয় সাহাবীও তাঁর সাথে খেলেন। অতঃপর (মাংস মুখে তুলেই) তিনি (সা.) সাহাবীগণকে বললেন, খাদ্য হতে তোমরা হাত গুটিয়ে নাও এবং উক্ত ইয়াহূদী মহিলাকে ডেকে পাঠালেন, (সে আসলে) তিনি (সা.) তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি বকরির এ মাংসে বিষ মিশ্রিত করেছ? সে বলল, আপনাকে কে বলেছে? তিনি (সা.) বললেন, আমার হাতের এই বাহুর মাংসই বলেছে। তখন মহিলাটি বলল, হ্যাঁ, আমি এতে বিষ মিশিয়েছি। আর তা এ উদ্দেশেই করেছি, যদি আপনি প্রকৃতই নবী হন, তাহলে তা (বিষ) আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি নবীই না হয়ে থাকেন, তাহলে তার থেকে আমরা শান্তি লাভ করব।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে ক্ষমা করে দিলেন এবং তাকে কোন প্রকারে শাস্তি দিলেন না। আর তার ঐ সমস্ত সাহাবীগণ মৃত্যুবরণ করলেন, যারা উক্ত বকরি হতে খেয়েছিলেন। (বর্ণনাকারী বলেন,) আর উক্ত মাংসের কিছু অংশ খাওয়ার কারণে রাসূলুল্লাহ (সা.) দুই কাঁধের মাঝখানে শিঙ্গা লাগিয়েছেন। আনসারের বায়াযাহ্ গোত্রের আযাদকৃত গোলাম আবূ হিন্দ শিং ও চাকু দ্বারা নবী (সা.) - এর কাঁধে শিঙ্গা লাগিয়েছিল। (আবূ দাউদ ও দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب فِي المعجزا)

وَعَن جَابر بِأَن يَهُودِيَّةً مِنْ أَهْلِ خَيْبَرَ سَمَّتْ شَاةً مَصْلِيَّةً ثُمَّ أَهْدَتْهَا لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الذِّرَاعَ فَأَكَلَ مِنْهَا وَأَكَلَ رَهْطٌ مِنْ أَصْحَابِهِ مَعَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ارْفَعُوا أَيْدِيَكُمْ وَأَرْسَلَ إِلَى الْيَهُودِيَّةِ فَدَعَاهَا فَقَالَ سممتِ هَذِهِ الشَّاةَ فَقَالَتْ مَنْ أَخْبَرَكَ قَالَ أَخْبَرَتْنِي هَذِه فِي يَدي للذِّراع قَالَت نعم قَالَت قلت إِن كَانَ نَبيا فَلَنْ يضرّهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ نَبِيًّا اسْتَرَحْنَا مِنْهُ فَعَفَا عَنْهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ يُعَاقِبهَا وَتُوفِّي بعض أَصْحَابُهُ الَّذِينَ أَكَلُوا مِنَ الشَّاةِ وَاحْتَجَمَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى كَاهِلِهِ مِنْ أَجْلِ الَّذِي أَكَلَ مِنَ الشَّاةِ حَجَمَهُ أَبُو هِنْدٍ بِالْقَرْنِ وَالشَّفْرَةِ وَهُوَ مَوْلًى لِبَنِي بَيَاضَةَ مِنَ الْأَنْصَارِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4510) و الدارمی (1 / 33 ح 69) ۔ * الزھری عن جابر : منقطع ’’ لم یسمع منہ ‘‘ انظر تحفۃ الاشراف (2 / 356) ۔
(ضَعِيف)

وعن جابر بان يهودية من اهل خيبر سمت شاة مصلية ثم اهدتها لرسول الله صلى الله عليه وسلم فاخذ رسول الله صلى الله عليه وسلم الذراع فاكل منها واكل رهط من اصحابه معه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ارفعوا ايديكم وارسل الى اليهودية فدعاها فقال سممت هذه الشاة فقالت من اخبرك قال اخبرتني هذه في يدي للذراع قالت نعم قالت قلت ان كان نبيا فلن يضره وان لم يكن نبيا استرحنا منه فعفا عنها رسول الله صلى الله عليه وسلم ولم يعاقبها وتوفي بعض اصحابه الذين اكلوا من الشاة واحتجم رسول الله صلى الله عليه وسلم على كاهله من اجل الذي اكل من الشاة حجمه ابو هند بالقرن والشفرة وهو مولى لبني بياضة من الانصار. رواه ابو داود والدارمي اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4510) و الدارمی (1 / 33 ح 69) ۔ * الزھری عن جابر : منقطع ’’ لم یسمع منہ ‘‘ انظر تحفۃ الاشراف (2 / 356) ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখিত ইয়াহূদী মহিলার নাম ছিল যায়নাব বিনতুল হারিস। সে ছিল মারহাব ইবনু আবূ মারহাব-এর ভাইয়ের মেয়ে এবং সালাম ইবনু মিশকাত-এর স্ত্রী। এই মহিলা কিছু লোকের মাধ্যমে জেনে নিয়েছিল যে, আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর নিকট কোন অংশের গোশত সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল। সে অনুসারে সে তার গৃহপালিত একটি বকরি যাবাহ করল এবং তা উত্তমরূপে ভুনা করে তাতে মারাত্মক বিষ মিশ্রিত করল। হাত এবং সিনার অংশে সে বেশি করে বিষ মিশ্রিত করল, অতঃপর উক্ত গোশত এতে নবী (সা.) এবং সাহাবীদের সামনে উপস্থাপন করল যারা সে সময় রাসূল (সা.) -এর দরবারে উপস্থিত ছিল।
(وَإِنْ لَمْ يَكُنْ نَبِيًّا اسْتَرَحْنَا مِنْهُ فَعَفَا عَنْهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) আর যদি নবীই না হয়ে থাকেন, তাহলে তা দ্বারা আমরা শান্তি লাভ করব। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (সা.) তাকে ক্ষমা করে দিলেন। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (সা.) তাকে হত্যার নির্দেশ দিলে তাকে হত্যা করা হয়। এ দু' বর্ণনার মধ্যে মতভেদ তৈরি হলো। উভয়ের মাঝে সমাধান হলো- রাসূল (সা.) তাকে প্রথমে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, তবে যখন সেই বিষ মিশ্রিত খাবার খেয়ে বিশর ইবনুল বারা ইবনু মা'রূর মারা যায় তখন কিসাস স্বরূপ মহিলাকে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়। মাওয়াহিব’-এর মধ্যে এসেছে, বলা হয়ে থাকে যে, সে মহিলা ইসলাম গ্রহণ করেছিল বিধায় তাকে হত্যা করা হয়নি। কতিপয় মুহাক্কিক বলেন, “তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন” অর্থাৎ প্রথমে তিনি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, কারণ তিনি নিজের ক্ষেত্রে কোন প্রতিশোধ নেননি। তারপর যখন বিশর ইবনুল বারা' ইবনু মা'রূর মারা গেলেন তখন তাকে কিসাস স্বরূপ হত্যার নির্দেশ দেন। এটার সম্ভাবনা রয়েছে যে, সে ইসলাম গ্রহণের কারণে তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন, অতঃপর বিশরকে হত্যার অপরাধে কিসাসস্বরূপ তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। যুহরী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর এ দাবীর পক্ষে একা নন, বরং সুলায়মান আত্ তায়মী তার “আল মাগাযী” কিতাবে এ বিষয়টিকে শক্তিশালী করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

(فَلَنْ يضرّهُ) অর্থ, তাহলে তা (বিষ) আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। অর্থাৎ হয়তো এ কারণে যে, নবীগণের ওপর বিষ এরূপ প্রতিক্রিয়াশীল হয় না যে, তাদের জীবনই নিঃশেষ করে দিবে। অথবা এ ভিত্তিতে যে, ইসলামের প্রচার ও পূর্ণতার পূর্বে নবী (সা.) -এর মৃত্যর আশঙ্কাও করা যায় না। প্রথম সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ঐ বর্ণনা সংশয়ের কারণ হতে পারে যাতে বলা হয়েছে যে, নবী (সা.) -এর মৃত্যু ঐ বিষের প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়েছে যা তাকে খায়বারের খাবারের মধ্যে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু মুহাক্কিক ‘আলিমগণ লিখেছেন যে, এ বর্ণনা বিশুদ্ধ নয়, তাই সংশয়ের প্রশ্নই আসে না; বরং এক বর্ণনায় তো এরূপ এসেছে যে, কেউ একজন মৃত্যুশয্যায় প্রশ্ন করেছিল যে, আপনার মধ্যে কি খায়বারের বিষ প্রতিক্রিয়াশীল হয়েছে? জবাবে রাসূল (সা.) বলেন, আমার তাক্বদীরে যা লেখা আছে এবং আল্লাহ তা'আলা যা চান তা ছাড়া অন্য কোন কষ্ট আপতিত হতে পারে না। (মাযাহিরে হাক ৭ম খণ্ড, ১৫৭ পৃষ্ঠা)।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)