পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা
৫৮০৭-[৭] জুবায়র ইবনু মুত্ব’ইম (রাঃ) হতে বর্ণিত। হুনায়নের যুদ্ধ হতে ফিরার সময় তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে সফর করছিলেন। এক সময় পথে কিছু সংখ্যক গ্রাম্য ’আরব বেদুঈন তাকে জড়িয়ে ধরল এবং তাদেরকে কিছু দেয়ার জন্য ’আবদার করতে থাকল। পরিশেষে তারা তাঁকে একটি বাবলা গাছের নীচে যেতে বাধ্য করল। এমনকি তার কাঁটা হতে চাদরখানা ছাড়িয়ে দাও। যদি এখন আমার কাছে এ কাটা-গাছগুলোর সমসংখ্যক উট ও দুম্বা থাকত, তাহলে আমি সেগুলো তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতাম। এরপর তোমরা বুঝতে পারতে যে, আমি কৃপণ বৈশিষ্ট্যের নই, মিথ্যাবাদী নই এবং কাপুরুষও নই। (বুখারী)।
الفصل الاول (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)
وَعَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ بَيْنَمَا هُوَ يَسِيرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَقْفَلَهُ مِنْ حُنَيْنٍ فَعَلِقَتِ الْأَعْرَابُ يَسْأَلُونَهُ حَتَّى اضْطَرُّوهُ إِلَى سَمُرَةٍ فَخَطَفَتْ رِدَاءَهُ فَوَقَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَعْطُونِي رِدَائِي لَوْ كَانَ لِي عَدَدَ هَذِهِ الْعِضَاهِ نَعَمٌ لَقَسَمْتُهُ بَيْنَكُمْ ثُمَّ لَا تَجِدُونِي بَخِيلًا وَلَا كذوباً وَلَا جَبَانًا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
رواہ البخاری (2821) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: যখন তারা রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল তখন তার গায়ের চাদরটি বাবলা গাছের সাথে জড়িয়ে গেলে তিনি তা ছাড়িয়ে তার কাছে দেয়ার জন্য সহযোগিতা চাইলেন। আর বললেন, যদি আমার কাছে এই গাছের কাঁটা-গাছগুলোর সমপরিমাণ উট ও ছাগল বিশেষ করে উট থাকত তবে আমি তা তোমাদেরকে দিয়ে দিতাম। মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এটা মহান আল্লাহর বাণীর দিকে ফিরে, তা হলো- মহান আল্লাহ বলেন, (مِّنَ الۡاَنۡعَامِ ثَمٰنِیَۃَ اَزۡوَاجٍ) “চতুষ্পদ জন্তু হতে আট প্রকারের”- (সূরাহ্ আয যুমার ৩৯ : ৬)। এখানে আট প্রকারের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো উট, গরু, ভেড়া ও ছাগল। আর এদের প্রত্যেক প্রকারের নারী ও পুরুষ।
(ثُمَّ لَا تَجِدُونِي بَخِيلًا) অর্থাৎ তোমরা আমাকে দানের ক্ষেত্রে কৃপণ পেতে না। আর তোমরা দেখতে পেতে যে অঙ্গীকার পূরণে আমার স্বভাব কেমন। আর কেমন আমার ভরসা আসমান জমিনের রবের প্রতি।
(وَلَا كذوباً وَلَا جَبَانًا) মুযহার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অর্থাৎ যখন তোমরা আমাকে কোন ঘটনাস্থলে পরীক্ষা করবে তখন আমার মাঝে কোন খারাপ স্বভাব পাবে না। আর এখান থেকে বুঝা যায় যে, যে ব্যক্তি পরিচয় হতে অজ্ঞাত, তার কাছে নিজের উত্তম গুণাবলি ও সঠিক পরিচিতি প্রকাশ করা শুধু বৈধ নয়; বরং ক্ষেত্রবিশেষ অপরিহার্য। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি ঐ দান করতে বাধ্য নই বরং আমি তা খুশি মনে প্রদান করি। আর আমি কোন মিথ্যা কথা তোমাদেরকে বলি না অর্থাৎ তোমাদেরকে কোন জিনিস দিতে চেয়ে দেব না; এমনি আমি করি না। আর আমি কাপুরুষ নই যে, কাউকে ভয় পাব। (মিরকাতুল মাফাতীহ)