পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫৯-[২১] “ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলার কাছে আমি তখনো ’খাতামুন্ নাবিয়্যিন’ হিসেবে লিপিবদ্ধ ছিলাম যখন আদম আলায়হিস সালাম ছিলেন মাটির খামিরায়। আমি তোমাদেরকে আরো বলছি যে, আমার নুবুওয়াতের প্রথম প্রকাশ হলো ইবরাহীম আলায়হিস সালাম -এর দু’আ এবং ঈসা আলায়হিস সালাম -এর ভবিষ্যদ্বাণী আর আমার মায়ের সরাসরি স্বপ্ন, যা তিনি আমাকে প্রসবকালে দেখেছিলেন যে, তাঁর সামনে একটি আলো উদ্ভাসিত হয়েছে, যার আলোতে তিনি সিরিয়ার রাজ প্রাসাদ পর্যন্ত দেখতে পান। (শারহুস্ সুন্নাহ্) ।
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)
وَعَن العِرْباض بن ساريةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: إِنِّي عِنْدَ اللَّهِ مَكْتُوبٌ: خَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ آدَمَ لِمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ وَسَأُخْبِرُكُمْ بِأَوَّلِ أَمْرِي دَعْوَةُ إِبْرَاهِيمَ وَبِشَارَةُ عِيسَى وَرُؤْيَا أُمِّي الَّتِي رَأَتْ حِينَ وَضَعَتْنِي وَقَدْ خَرَجَ لَهَا نُورٌ أَضَاءَ لَهَا مِنْهُ قُصُورُ الشَّامِ «. وَرَاه فِي» شرح السّنة
اسنادہ حسن ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 207 ح 3626) [و احمد (4 / 127 ح 17280 ، 4 / 128 ح 17281) و صححہ ابن حبان (الموارد : 2093) و الحاکم (2 / 600) فتعقبہ الذھبی ، قال :’’ ابوبکر (ابن ابی مریم) ضعیف ‘‘ قلت ؒ لم ینفرد بہ ، بل تابعہ الثقۃ معاویۃ بن صالح عن سعید بن سوید عن ابن ھلال السلمی عن العرباض بن ساریۃ رضی اللہ عنہ بہ و سندہ حسن ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (لِمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ) অর্থাৎ মাটির খামিরার মধ্যে ছিলেন। পূর্বে উল্লেখিত একাধিক হাদীস এবং এই হাদীসের একই মর্ম। অর্থাৎ আদমের মাঝে আত্মা ফুকার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাত নির্ধারিত হয়ে গেছে। হাদীসের পরের অংশ রাসূল (সা.) তার নুবুওয়্যাত প্রকাশের সংবাদ দেন।
(بِأَوَّلِ أَمْرِي دَعْوَةُ إِبْرَاهِيمَ) অর্থাৎ আমার নুবুওয়্যাতের বিষয় প্রথম প্রকাশ পেয়েছে ইবরাহীম আলায়হিস সালাম এর দাওয়াতের মাধ্যমে। অর্থাৎ তিনি সর্বপ্রথম আমার নুবুওয়্যাতের বিষয় প্রকাশ করেন। যেমন কাবাহ নির্মাণের সময় তিনি বলেন- (رَبَّنَا وَ ابۡعَثۡ فِیۡهِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ) “হে পরওয়ারদিগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুন”- (সূরা আল বাকারাহ ২ : ১২৯)। আল্লাহ তা'আলা এই দু'আ কবুল করেন। রাসূল (সা.) -এর নুবুওয়াতের প্রথম প্রকাশ বলতে এটাই বুঝিয়েছেন। তারপর ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর দেয়া সুসংবাদ। এই সুসংবাদের মাঝেও তাঁর নুবুওয়্যাত প্রকাশ পেয়েছে। “ঈসা আলায়হিস সালাম-এর সুসংবাদ যেমন কুরআনে এসেছে
(وَ مُبَشِّرًۢا بِرَسُوۡلٍ یَّاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِی اسۡمُهٗۤ اَحۡمَدُ ؕ) “আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমাদ।” (সূরাহ্ আস্ সফ ৬১ : ৬)।
এখানেও নবী (সা.) -এর নুবুওয়াতের প্রকাশ ঘটেছে। নবী (সা.) - পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে তাঁর নুবুওয়্যাত প্রকাশের তৃতীয় ধাপ তাঁর মায়ের স্বপ্ন। গর্ভাবস্থায় রাসূল (সা.) -এর মাতা স্বপ্নে দেখেছেন, একটি আলো তার থেকে বের হয়ে শামের প্রাসাদে ছড়িয়ে গেছে। মোটকথা, রাসূল (সা.) পৃথিবীতে আগমনের অনেক পূর্বে অর্থাৎ আদম আলায়হিস সালাম জীবন লাভের পূর্বেই তার নুবুওয়্যাত নির্ধারিত হয়েছে এবং আগমনের অনেক পূর্বে তার নুবুওয়্যাত প্রকাশ করা হয়েছে। [এক] ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর দুয়ায়। [দুই] ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর সুসংবাদে। [তিন] মায়ের স্বপ্নের মাধ্যমে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)